বক্স অফিসে ঝড়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ দর্শকের প্রশংসা আর সমালোচকদের ইতিবাচক রিভিউ—গত ২৮ আগস্ট মুক্তির পর থেকে এর সবই পেয়েছে মালয়ালম সিনেমা ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’। এবার বক্স অফিসে নতুন রেকর্ড গড়ার অপেক্ষায় সিনেমাটি। মুক্তির ২৪ দিনে ছবিটি গড়ে নতুন রেকর্ড। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

মালয়ালম সিনেমার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’। কেবল ২৪ দিনেই ছবিটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ২৬৭ কোটি রুপি। এর মধ্য দিয়ে পৃথ্বিরাজ সুকুমারন পরিচালিত ‘এল টু: এম্পুরান’কে টপকে গেল ছবিটি। আগে রেকর্ডটি ছিল ২৬৫ দশমিক ৫ কোটি রুপির।

‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ সিনেমায় কল্যাণী প্রিয়দর্শন। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

নিউ ইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়রের মাকে কতটা জানেন?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জোহরান মামদানি। এ বিজয়ের মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক প্রথমবারের মতো একজন মুসলিম মেয়র পাচ্ছে। ৩৩ বছর বয়েসি এ যুবকের সঙ্গে ভারতের যোগসূত্র রয়েছে। কারণ তার বাবা-মা। জোহরান মামদানির মা মীরা নায়ার ভারতীয় চিত্রপরিচালক। আর বাবা মাহমুদ মামদানি ভারতীয় বংশোদ্ভুত লেখক-শিক্ষাবিদ।  

মীরা নায়ারের জন্ম, বেড়ে ওঠা ও স্কুলের পড়াশুনা বাংলা লাগোয়া ওড়িশাতে, যেখানে তার অনেক বাঙালি বন্ধুবান্ধব ছিল। তার গানের শিক্ষকও ছিলেন একজন বাঙালি। ফলে নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি বাঙালি সংস্কৃতি যা পেয়েছেন, তার পুরোটার কৃতিত্ব মা মীরা নায়ারের।  

মীরা নায়ার একজন সমাজকর্মী ও চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় ‘সালাম বোম্বে’ সিনেমা। মুম্বাইয়ের পথশিশুদের নিয়ে এটি তৈরি করেন মীরা। এ সিনেমার সূত্র ধরেই মীরা নায়ার আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পান। সেরা বিদেশি সিনেমা ক্যাটাগরিতে ‘সালাম বোম্বে’ সিনেমা অস্কার, বাফটা ও গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডে নমিনেশন জিতেছিল। 

ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘গোল্ডেন লায়ন’ ও কানে ‘ক্যামেরা ডি’ওর’ জেতা এই পরিচালক ‘মিসিসিপি মসালা’ ও ‘মনসুন ওয়েডিং’-এর মতো অনেক কাল্ট মুভি বানিয়েছেন। তবে বাঙালি দর্শক তাকে মনে রেখেছে মূলত ‘দ্য নেমসেক’ সিনেমার জন্য! 

ঝুম্পা লাহিড়ি রচিত ‘দ্য নেমসেক’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করেন মীরা নায়ার। মীরা নায়ার যখন ‘নেমসেক’ নির্মাণ করেন, তখন গল্পের অভিবাসী বাঙালি দম্পতি অশোক ও অসীমা গাঙ্গুলির ভূমিকায় অভিনয় করেন যথাক্রমে ইরফান খান ও টাবু। বলিউডের অবাঙালি তারকা টাবু ও ইরফানকে আমেরিকা-প্রবাসী বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করাতে ও উচ্চারণে বাংলা অ্যাকসেন্ট আনতে তাকে যে কতরকম কসরত করতে হয়েছিল, সে গল্পও মীরা নায়ার নিজেই বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন। 

২০০৬ সালে ‘দ্য নেমসেক’ নির্মাণ করেন মীরা। পুত্র জোহরান মামদানির বয়স তখন অনেক কম।এ সিনেমা নির্মাণে পুত্রের অনেক অবদান রয়েছে। ২০১৮ সালে জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভ্যালে সাংবাদিক বীর সাংভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মীরা নায়ার জানিয়েছিলেন, তিনি যখন ‘নেমসেক’ বানানোর পরিকল্পনা শুরু করেন, ঠিক তখনই বিখ্যাত ‘হ্যারি পটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির পঞ্চম পর্ব ‘অর্ডার অব দ্য ফিনিক্স’ মুভি পরিচালনার প্রস্তাব পান তিনি। 

এ প্রস্তাব মীরা নায়ারের জন্য লোভনীয়। কারণ মোটা অঙ্কের অর্থেরও ব্যাপার এতে জড়িত ছিল। ফলে দ্বিধান্বিত মা ছেলের কাছেই জিজ্ঞেস করেন, তার কোন কাজটা করা উচিত। তখন জোহরান মামদানির বয়স মাত্রই ১৪। সে নিজেও পটার সিরিজের ভক্ত। কিন্তু মাকে জোহরান মামদানি বলেছিল, “আরো অনেক ভালো ভালো পরিচালক আছেন, যারা ‘হ্যারি পটার’ বানাতে পারবেন। কিন্তু নেমসেক একজনই বানাতে পারবে, আর সেটা তুমি।” এভাবেই নির্মিত হয় ‘দ্য নেমসেক’ সিনেমা।  

মীরা নায়ার তার নির্মাণ ক্যারিয়ারে মোট ১০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। পরবর্তীতে ৬টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। সত্তর দশকের শেষ লগ্নে প্রথম ডকু ফিল্ম নির্মাণ করেন মীরা। এরপর আরো চারটি ডকু ফিল্ম নির্মাণ করেছেন।  

তাছাড়া মীরা নায়ার নির্মাণ করেছেন—টেলিভিশন ফিল্ম ‘মাই ওন কান্ট্রি’ (১৯৯৮), ‘হিস্ট্রোরিক্যাল ব্লাইন্ডনেস’ (২০২২), টেলিভিশন সিরিজ ‘আ সুইটেবল বয়’ (২০২০), ‘এজ অব হিস্ট্রি’ (২০২২)।      

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ