আমরা বিশৃঙ্খলা ও দুর্ভোগের যুগে প্রবেশ করেছি: গুতেরেস
Published: 23rd, September 2025 GMT
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস বলেছেন, “আমরা বেপরোয়া বিশৃঙ্খলা এবং অবিরাম মানবিক দুর্ভোগের যুগে প্রবেশ করেছি। চারপাশে তাকান। জাতিসংঘের যে নীতিগুলো আপনারা প্রতিষ্ঠিত করেছেন তা অবরুদ্ধ। শুনুন। শান্তি ও অগ্রগতির স্তম্ভগুলো দায়মুক্তি, বৈষম্য এবং উদাসীনতার ভারে নুয়ে পড়ছে।
মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেছেন।
গুতেরেস তার ভাষণে বেশ কয়েকটি বৈশ্বিক সংঘাতের কথা উল্লেখ করেছেন, প্রথমে সুদানের যুদ্ধ এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে গাজার যুদ্ধের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন, যা এই বছরের সাধারণ বিতর্ককে সংজ্ঞায়িত করবে।
তিনি বলেছেন, “গাজায় ভয়াবহতা তৃতীয় ভয়াবহ বছরের দিকে এগিয়ে আসছে। এগুলো মৌলিক মানবতাকে অবজ্ঞা করে এমন সিদ্ধান্তের ফলাফল। মহাসচিব হিসেবে আমার কর্ম বছরগুলোতে মৃত্যু এবং ধ্বংসের মাত্রা অন্য যেকোনো সময়ের সংঘাতের চেয়েও বেশি।”
গুতেরেস এমন সময় ভাষণ দিচ্ছেন, যখন ট্রাম্প প্রশাসন আবারো জাতিসংঘে তহবিল কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া গাজা যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার নিয়মিত ভেটো দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
গুতেরেস সাধারণ পরিষদের সদস্যদের প্রশ্ন করেন, “আমরা একসাথে কোন ধরনের বিশ্ব গড়ে তুলতে চাই, মহামান্যরা? আমাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কারণ সেই কাজ সম্পাদনের ক্ষমতা আমাদের কাছ থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা বেপরোয়া বিশৃঙ্খলা ও অবিরাম মানবিক দুর্ভোগের এক যুগে প্রবেশ করেছি। চারপাশে তাকান। জাতিসংঘের যে নীতিগুলো আপনারা প্রতিষ্ঠিত করেছেন তা অবরুদ্ধ। শুনুন। শান্তি ও অগ্রগতির স্তম্ভগুলি দায়মুক্তি, বৈষম্য ও উদাসীনতার ভারে নুয়ে পড়ছে।”
তিনি আরো বলেন, “সার্বভৌম জাতিগুলো আক্রমণ করেছে, ক্ষুধা অস্ত্রে পরিণত হয়েছে, সত্যকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে, বোমা বিধ্বস্ত শহরগুলো থেকে ধোঁয়া উঠছে, ভাঙা সমাজগুলোতে ক্রমবর্ধমান ক্রোধ, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূলরেখা ফুলে উঠেছে, প্রতিটি একটি সতর্কতা, প্রতিটি একটি প্রশ্ন – আমরা কোন ধরণের পৃথিবী বেছে নেব?”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কপ-৩০ সম্মেলনের আগেই শাহবাগে টেকসই অর্থায়নের দাবি
কপ-৩০ সম্মেলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের জন্য ন্যায্য, স্বচ্ছ ও টেকসই অর্থায়নের দাবি জানাতে এক ভিন্নধর্মী ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে যুবকদের নিয়ে ‘ফেয়ার ফাইন্যান্স নাও: বাংলাদেশ’স কল বিফোর কপ৩০’ শীর্ষক এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়।
আরো পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সেমিনার
জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা
প্রোগ্রামটি যৌথভাবে আয়োজন করে ফেয়ার ফাইন্যান্স বাংলাদেশ কোয়ালিশন, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ, পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্ক এবং ডেমোক্রেটিক বাজেট মুভমেন্ট। এছাড়াও সহযোগী হিসেবে যুক্ত ছিল প্রচেষ্টা ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, সৌহার্দ্য ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, আমরাই আগামী এবং শাওন মাইম একাডেমি।
ক্যাম্পেইনে জনসচেতনতা প্রদর্শনী এবং মাইম পরিবেশনার মাধ্যমে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত কীভাবে পরিবেশ ও সমাজে প্রভাব ফেলে তা তুলে ধরা হয়। যুব অংশগ্রহণকারীরা প্ল্যাকার্ড ও সৃজনশীল বার্তার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও জলবায়ু সহনশীলতার পক্ষে সচেতনতা তৈরি করেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং নিম্ন-কার্বন উন্নয়নপথে যেতে বছরে ১২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন হলেও বর্তমানে দেশটি এর কম ১১ শতাংশ অর্থায়ন পাচ্ছে। ন্যায্য অর্থায়ন কাঠামো না থাকলে জলবায়ু অভিযোজনের দায় ও ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি পড়ে প্রান্তিক ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের উপর।
পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের প্রজেক্ট কোওর্ডিনেটর মোসলে উদ্দিন সূচক গণমাধ্যমে বলেন, “জলবায়ু অর্থায়ন কোনো দান নয়- এটি ন্যায্যতার প্রশ্ন। যে সঙ্কট বাংলাদেশ তৈরি করেনি, তার আর্থিক ঝুঁকি বহন করে স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন, “এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো টেকসই অর্থায়ন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় যুব অংশগ্রহণকে শক্তিশালী করা এবং কপ৩০ সম্মেলনে বাংলাদেশে জন্য সহজলভ্য, অনুদানভিত্তিক জলবায়ু অর্থায়নের দাবিকে আরো জোরালোভাবে তুলে ধরা।”
অনুষ্ঠানটি সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, আর্থিক খাত, এবং সিভিল সোসাইটির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বানের মাধ্যমে শেষ করা হয়, যাতে বাংলাদেশ একটি ন্যায্য, সহনশীল এবং টেকসই অর্থনীতির পথে অগ্রসর হতে পারে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী