কক্সবাজার সৈকতে দখলের উৎসব, হুমকিতে পরিবেশ-পর্যটন
Published: 27th, September 2025 GMT
বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ। অথচ পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে চলছে দখল ও স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতা।
সরকার ১৯৯৯ সালে নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সৈকতকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করলেও সেই আইন মানা হচ্ছে না। জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটারের মধ্যে দোকান ও স্থাপনা নিষিদ্ধ থাকলেও সৈকতের জনপ্রিয় স্পটগুলোয় বসানো হচ্ছে শত শত দোকান, চেয়ার-ছাতা আর টংঘর।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, এতে শুধু সৈকতের সৌন্দর্য ও নির্জনতা নষ্ট হচ্ছে না, বরং পুরো ইকোসিস্টেম মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
কক্সবাজারের নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী, দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত গত এক বছরে নতুন করে শত শত দোকান বসানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের অনুমতি নিয়েই এসব স্থাপনা গড়ে উঠছে। এমনকি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরও ইসিএ আইন উপেক্ষা করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাতেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে প্রায় দুই হাজার চেয়ার-ছাতা ও ভ্রাম্যমাণ দোকানের। সম্প্রতি সুগন্ধা পয়েন্টে একদিনে শতাধিক টংঘর বসানোর ঘটনাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিষয়টি আলোচনায় আসার পর গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পরিবেশ মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনা দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, “ইসিএ এলাকায় দোকান বসানো পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনছে।”
এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে দুই শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু দখলদাররা নতুন কৌশলে আবারো দোকান বসাচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.
অতিরিক্ত ডিআইজি ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান আপেল মাহমুদ বলেন, ‘‘যেসব টংঘর বালিয়াড়িতে বসানো হয়েছে সেগুলো মালিকদের নিজ উদ্যোগে সরানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। না সরালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সৈকত দখলমুক্ত করতে আটজন সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ দিয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আমরা কক্সবাজারবাসী, কক্সবাজার সোসাইটি ও কক্সবাজার উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ জানিয়েছে, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনে নামবে তারা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, ‘‘ইসিএ আইন ও হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে সৈকতের বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করতে হবে। তা না হলে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পুরো পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।’’
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ক ন বস পর ব শ স কত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরের লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে চলছে
বন্দরের ঐতিহ্যবাহী লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে মেতে উঠেছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। যে খাল দিয়ে এক সময় শীতলক্ষা-বহ্মপুত্র নদীতে সংযোগ ছিল।
সেই ঐতিহ্যবাহী খালটি অবৈধভাবে দখল করে পাঁকা স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেছে ওই সকল ভূমিদস্যুরা।
খালটি দখল হয়ে যাওয়ার কারনে পয়নিষ্কাশনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত স্থানীয়রা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উল্লেখিত খাল দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা ।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ রশিদ ও সানাউল্লাহ সানু এবং বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিনের মদদপুষ্ট হয়ে আদর্শ বিদ্যানিকেতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে খাল দখল করে রাস্তা বানিয়েছে।
তেমনি ভাবে গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া খালটি ভরাট করার কারনে বন্দর ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াডের কদমতলীসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ড্রেজার দিয়ে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি ভরাট করতে গিয়ে সরকারি খাল দখল করে নিয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই।
বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন সৈকত জানান, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রভাবশালী মহল ও ভূমিদস্যুদের কর্তৃক দখলকৃত খালটি উদ্ধার করে পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।