ঠাকুরদা-বাবার হাত ধরে প্রতিমাশিল্পে সঞ্জিত, গড়েছেন ‘৫০ হাজারের বেশি’ প্রতিমা
Published: 27th, September 2025 GMT
সত্তর দশকের দিকে রাজকুমার পাল ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলে অন্যতম সেরা প্রতিমাশিল্পী। তাঁর মৃত্যুর পর পারিবারিক ঐতিহ্যের এই পেশার হাল ধরেন তাঁর ছেলে সুনীল পাল। উত্তরাধিকার সূত্রে এখন কাজটি করে যাচ্ছেন তাঁর ছেলে সঞ্জিত পাল (৪৮)।
নব্বই দশক থেকে সঞ্জিত প্রতিমা তৈরি করে আসছেন। তাঁর দাবি, একা হাতেই ৫০ হাজারের বেশি প্রতিমা গড়েছেন তিনি।
সঞ্জিত পালের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা এলাকায়। তাঁরা দুই ভাই ও দুই বোন। ছোট ভাই রণজিৎ পাল স্থানীয় একটি কলেজের হিসাবরক্ষক হলেও সঞ্জিতকে প্রতিমা তৈরিতে সহযোগিতা করেন। তাঁদের বাবা সুনীল পাল বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। তবে থেমে যাননি, বাড়িতে বসেই এখনো ছোট আকারের প্রতিমা গড়েন নিজ হাতে।
বংশপরম্পরায় সঞ্জিত এই পেশা পেলেও নানা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে তাঁকে এই অবস্থানে আসতে হয়েছে। শিল্পের প্রতি অগাধ ভালোবাসায় তিনি আগলে রেখেছেন পেশাটি। বারো মাসই নিপুণ হাতে প্রতিমা গড়েন তিনি। দুর্গাপ্রতিমা ছাড়াও রাধাকৃষ্ণ, কালী, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক, মনসাসহ প্রায় সব দেব-দেবীর প্রতিমা গড়ার দক্ষতা আছে তাঁর। আবার রংতুলিতে দেবীকে মূর্ত করেন তিনিই।
প্রতিমা তৈরির পর শেষ মুহূর্তের কাজ করছেন শিল্পী.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনাকে ফেরত দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আবার সম্পর্ক শুরু করবে ভারত, আশা নাহিদ ইসলামের
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় মানবতাবিরোধী অপরাধী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকার ফেরত চাইতে পারে। ভারত সেখানে বাধা দিতে পারে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, শেখ হাসিনাকে ফেরত দিয়ে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে।’
আজ শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। জুলাই গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের সাজা কার্যকর এবং দল হিসেবে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও দলটির জোটসঙ্গীদের বিচারের দাবিতে গণমিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে এনসিপি ঢাকা মহানগর।
সমাবেশ এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে মানুষ ইনসাফ পাবে। এই রায় কোনো রাজনৈতিক প্রতিশোধ নয়; শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় বাংলাদেশের মজলুম নির্যাতিত জনগণের প্রতি ন্যায়বিচার। আমরা সেই ন্যায়বিচারের জন্য জুলাই-আগস্টে রাজপথে নেমেছিলাম।’
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে যত ধরনের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতার প্রয়োজন, অন্তর্বর্তী সরকার অবিলম্বে তা শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন নাহিদ ইসলাম।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তিনটি দাবি জানান এনসিপির আহ্বায়ক। এর মধ্যে রয়েছে, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করা; দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার এবং জাতীয় পার্টিসহ আওয়ামী সহযোগী দলগুলোকে বিচারের আওতায় আনা।
ভারত শেখ হাসিনাকে জায়গা দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বলে মনে করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভারত সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, যদি বাংলাদেশের সঙ্গে সত্যিকারার্থে সম্পর্ক করতে চান, যদি চান বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের প্রতি সুসম্পর্ক বজায় রাখবে; তাহলে অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’
জাতীয় পার্টির নামে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা চলছে বলেও অভিযোগ করেন এনসিপির আহ্বায়ক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ৫ আগস্টের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা ও নির্বাচন কমিশনের সংলাপে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকে রাখা হয়নি, তাহলে কিসের ভিত্তিতে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে।
যে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে, সেই হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার তাদের দেশের নাগরিকদের জোরপূর্বক পুশ ইন করছে (ঠেলে পাঠাচ্ছে)। ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমরা ভারত সরকারকে বলতে চাই, নিজের দেশের নাগরিকদের নয়, পুশ ইন করতে হলে অতিদ্রুত হাসিনাকে পুশ ইন করুন।’
দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবেসমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমাদের দাবি পরিষ্কার—শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের প্রধান থেকে খুনের নির্দেশ দিয়েছেন। তাই দল হিসেবে এখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের সহযোগী জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন গৃহপালিত দলকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।’
শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের পর তাঁর পক্ষে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান এই এনসিপি নেতা।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামন্তা শারমিন বলেন, ‘শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় হয়েছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ইন্ডিয়া নয় শুধু, পৃথিবীর কোনো দেশ হাসিনার রায় কার্যকর হওয়াকে ঠেকাতে পারবে না।’ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং তাদের সহযোগী জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কোনো জায়গা হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডের মাথা থেকে এই মিছিল শুরু হয়