বার্সেলোনায় পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনপন্থিদের সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ৮
Published: 5th, October 2025 GMT
স্পেনের বার্সেলোনায় ফিলিস্তিন সংহতি মিছিলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার প্রায় ৭০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ মূলত শান্তিপূর্ণ থাকলেও, শেষের দিকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। কিছু বিক্ষোভকারী ইসরায়েল-সম্পর্কিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরো পড়ুন:
বুসকেটসের অবসর ঘোষণা: এক নিঃশব্দ শিল্পীর শেষ অধ্যায়
আর্জেন্টিনাকে হটিয়ে ১১ বছর পর ফিফা র্যাংকিংয়ে শীর্ষে স্পেন
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ বিক্ষোভকারী শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করলেও কিছু গোষ্ঠী দোকান ও রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ জানিয়েছে, বার্সেলোনার বিক্ষোভে আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। সংঘর্ষের পর শহরের কিছু এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার স্পেনের বিভিন্ন শহর ও ইতালির রোম ও পর্তুগালের লিসবনেও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ হয়েছে। এসব বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামের মানবিক সাহায্যবাহী জাহাজ বহরটি গাজা অবরোধ ভাঙতে যাত্রা করার পর ইসরায়েলি বাহিনীর তা আটক করার ঘটনায়।
স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরটিভিই-কে জানান, ওই ত্রাণবাহী বহরে আটক ৪৯ জন স্পেনীয় নাগরিকের মধ্যে ২১ জন রবিবার তেল আবিব থেকে দেশে ফিরবেন।
গত মে মাসে স্পেন আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকেই দেশটি ইসরায়েলের গাজা অভিযান নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে আসছে। গত মাসে মাদ্রিদ সরকার ইসরায়েলে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিকমানের জ্বালানি সরবরাহ নিষিদ্ধ করে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নীলফামারীতে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, রেড অ্যালার্ট
ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানের সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। সকাল ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার দিয়ে। সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে প্রবাহিত হচ্ছিল ৫২ দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডান তীরের বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে বাশের পাইলিং করে বালির বস্তা নিক্ষেপ করছে পাউবো।
তিস্তার তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, রোববার দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা অব্যাহত আছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেরস্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তাপারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার রোপা আমন খেত তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে, রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪৮ মিটার, দুপুর ১২টায় ৫২ মিটার, বেলা তিনটায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৫২ দশমিক দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল তিস্তা নদীর পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ৬টায় ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীরের প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটির মেরামতকাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে। রাত ৮টার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।