জাতির আত্মমর্যাদা, স্বাধীন চিন্তা ও প্রতিরোধের প্রতীক শহীদ আবরার ফাহাদ শীর্ষক এক বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। বিবৃতিতে শহীদ আবরার ফাহাদকে বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক ও প্রেরণার বাতিঘর হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) দেওয়া এ বিবৃতিতে ডাকসুর সহ-সভাপতি সাদিক কায়েমের স্বাক্ষর রয়েছে।

আরো পড়ুন:

ময়মনসিংহে ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ২

বৃদ্ধা মাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলে আটক

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার সংগ্রাম এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন শহীদ আবরার ফাহাদ। দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং অন্যায্য ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় আধিপত্যবাদী শক্তি, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের হাতে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর নির্মমভাবে শহীদ হন আবরার ফাহাদ। কার্যত এই আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গোটা জাতির আত্মমর্যাদা, স্বাধীন চিন্তা ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি।

শহীদ আবরার ফাহাদ বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক ও প্রেরণার বাতিঘর। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর শহীদ শরীফুজ্জামান নোমানীকে কুপিয়ে হত্যার মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে নির্মমভাবে ছাত্র খুন পুনরায় শুরু করে। দীর্ঘ নির্যাতন, নিপীড়ন, গুম, খুনের বিরুদ্ধে অব্যাহত প্রতিবাদের পর শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদাত গোটা জাতিকে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, বিরোধী মতাদর্শ লালন করলেই হত্যা করার যে বৈধতা আওয়ামী লীগ উৎপাদন করেছিল, তা ক্রমশঃ প্রতিরোধের মুখে পড়ে শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। একইসঙ্গে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আধিপত্যবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে চলমান এ লড়াই এক নতুন মাত্রা পায়। ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী এই লড়াইয়ের পূর্ণতা আসে ২০২৪ সালে সংঘটিত জুলাই বিপ্লবে; শহীদ আবু সাঈদ, শান্ত, মুগ্ধ, ওয়াসিম, আলী রায়হান, তাহির, রিয়া গোপ ও নাসিমাদের শাহাদাতের মধ্য দিয়ে।

শহীদ আবরার ফাহাদের এই আত্মত্যাগ এবং জাতীয় জীবনে মোড় পরিবর্তনের এ ঘটনাকে স্মরণ করে রাখতে আবরার ফাহাদের শাহাদাত দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ দেশবাসীর প্রতি ৭ অক্টোবর দিনটিকে ‘আধিপত্যবাদবিরোধী দিবস’ হিসেবে পালন করার আহ্বান জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এই দিনে দেশজুড়ে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে আধিপত্যবাদী শক্তির নানা ষড়যন্ত্র ও তা থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে জাতিকে সচেতন করুন; যেন এদেশের তরুণরা পুনরায় শপথ গ্রহণ করতে পারে – ‘কোনো বিদেশি শক্তির আধিপত্য, প্রভাব বা অন্যায়ের কাছে আমরা কখনো মাথা নত করবো না।’

দেশবাসী ও ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আসুন, আমরা সকলে মিলে আবরার ফাহাদের আত্মত্যাগকে ধারণ করি; জাতির আত্মমর্যাদা, স্বাধীনতা ও ন্যায়ের লড়াইয়ে নতুন করে ঐক্যবদ্ধ হই। আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলি, যেন প্রতিটি নাগরিক হয়ে ওঠে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আবর র ফ হ দ র স ব ধ নত

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রী গ্লোবাল বাংলাদেশের পার্টনারস মিট: কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে দিকনির্দেশনা

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এয়ারকন্ডিশনার ব্র্যান্ড গ্রী’র ‘পার্টনারস মিট ২০২৬’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রী গ্লোবালের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেসিডেন্ট কেভিন বাই, এজিএম রাইয়ান ঝাং এবং মিস এমবার। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন সারা দেশের সব পার্টনার।

অংশগ্রহণকারী পার্টনার ও অতিথিদের স্বাগত জানান ইলেক্ট্রো মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নুরুন নেওয়াজ। তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বসেরা গ্রী ব্র্যান্ডের পণ্যসামগ্রী দেশের ক্রেতা ও ব্যবহারকারীদের নিকট প্রচার, প্রসার, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ ও বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানের জন্য পার্টনার ও শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

মো. নুরুন নেওয়াজ বলেন, ‘দেশের ইলেকট্রনিকস খাতকে এগিয়ে নিতে বিশ্বের নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড গ্রীর সঙ্গে প্রযুক্তি শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে কাজ করছে ইলেক্ট্রো মার্ট গ্রুপ। দেশের ক্রমবর্ধমান এসির চাহিদা পূরণ এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বমানের পণ্য সরবরাহের জন্য গ্রুপটি নারায়ণগঞ্জে নিজস্ব কারখানা গ্রীর পণ্যসামগ্রী উৎপাদন করছে।’

সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্যে ইলেক্ট্রো মার্ট গ্রুপের ডিএমডি মোহাম্মদ নুরুল আফছার বলেন, বাংলাদেশে গ্রী এসি বিপণনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন পার্টনাররা। গ্রী বর্তমানে বাংলাদেশেও নাম্বার ওয়ান এবং সুপার ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। পার্টনারদের নিরলস পরিশ্রম, আন্তরিক সহযোগিতা এবং নিরবচ্ছিন্ন ভালোবাসার ফলে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।

সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইলেক্ট্রো মার্ট গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ সাজ্জাদ ঊন নেওয়াজ, নুরুল আজিম সানি, সিনথিয়া কায়নাথ নুর এবং বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাহমুদুন নবী চৌধুরীসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি গ্রী গ্লোবালের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেসিডেন্ট কেভিন বাই পার্টনারদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে গ্রীর সর্বোত্তম ব্যবসায়িক পার্টনার। গ্রী পণ্য বাংলাদেশি গ্রাহকদের নিকট সহজলভ্য এবং প্রসারের জন্য আমি পার্টনারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’

বিশ্বব্যাপী গ্রী পণ্যের সাফল্যের ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থান তুলে ধরে কেভিন বাই বলেন, গ্রাহকদের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বমানের পণ্য সরবরাহের কারণে গ্রী আজ গণমানুষের আস্থায় বিশ্বে নাম্বার ওয়ান। গ্রাহকদের বর্ধিত এই চাহিদা নিরবচ্ছিন্নভাবে পূরণের লক্ষ্যে প্রযুক্তি শেয়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে।

কেভিন বাই বলেন, বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বাড়ছে। বাংলাদেশও এ নিয়ে বেশ ঝুঁকিতে রয়েছে। পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে গ্রী প্রতিটি পণ্য উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব কাঁচামাল, যন্ত্রাংশ, কেমিক্যাল ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে। যার ধারাবাহিকতায় গ্রী এসি শূন্য মাত্রার কার্বন নিঃসরণ ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির জন্য বৈশ্বিকভাবে সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। বাংলাদেশে তৈরি গ্রী এসি এবং বিদেশে তৈরি এসির মধ্যে কোনো ফারাক নেই।

গ্রী গ্লোবালের এজিএম রাইয়ান ঝাং বলেন, বিশ্বব্যাপী গ্রীর সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেম স্বল্প পরিসরে স্বল্প ব্যয়ের মাধ্যমে সর্বাধিক স্পেস এয়ারকন্ডিশনিং করা যায়। গ্রীর ভিআরএফ, স্ক্রু চিলার, সেন্ট্রিফিউগাল চিলার এবং প্যাকেজড টাইপ এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেম বিশ্বের অধিকাংশ বৃহৎ করপোরেট অফিস, বহুতল ভবন, হাসপাতাল, বাণিজ্যিক ভবন, শপিংমল এবং শিল্প-কলকারখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে। গ্রীর আবিষ্কৃত আধুনিক ওয়াটার কুলড ম্যাগনেটিক চিলার প্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রিয়ালসহ বৃহৎ প্রকল্পের এয়ারকন্ডিশনিং কার্যক্রমকে করছে সহজলভ্য এবং পরিবেশবান্ধব। গ্রীর এই প্রযুক্তি ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে।

সম্মেলনে ইলেক্ট্রো মার্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নুরুল আমিন বলেন, একসময় বাংলাদেশের ইলেকট্রনিকস খাত ছিল সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর। ইলেকট্রনিকস ক্ষেত্রে শিল্পবান্ধব নীতির ফলে তা এখন স্বনির্ভর শিল্প খাতে পরিণত হতে চলছে। গ্রী এসি এখন বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অচিরেই গ্রী ইলেকট্রনিকস পণ্য বিদেশে রপ্তানি হবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পরিচয়ে।

সম্মেলনে গ্রী এসির বিশেষ সুবিধা ও বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন গ্রুপটির ডিএমডি মো. নুরুল আফছার। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের ১৬০ টির বেশি দেশে প্রায় ৬০ কোটির অধিক গ্রাহক গ্রী এসি ব্যবহার করছেন। এটি ঘরের বাতাসের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ঘরের পরিবেশকে রাখে নির্মল, সুন্দর ও জীবাণুমুক্ত। ইলেকট্রনিকস পণ্যের মধ্যে এসি এখন আর শৌখিন ও বিলাসপণ্য নয়।’

মো. নুরুল আফছার বলেন, ‘গ্রী এসির সাশ্রয়ী মূল্য, গুণগত মান ও দীর্ঘস্থায়িত্বের কারণে বিশ্বব্যাপী এটি এখন মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীতে পরিণত হয়েছে। গ্রীই বর্তমান বিশ্বে পরিবেশবান্ধব এসি উৎপাদনে শীর্ষে। সম্প্রতি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি সমৃদ্ধ আরও নতুন কয়েকটি মডেলের গ্রী এসি বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করছে।’

সম্মেলনে ২০২৬ সালের বিপণন কার্যক্রম আরও গতিশীল ও সুদৃঢ় করতে গ্রাহকদের চাহিদা ও বাজার–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ