মানিকগঞ্জ শহরের পোড়রা এলাকার একটি বাসার কক্ষ থেকে সামায়েল হাসদা (৩০) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

সামায়েল হাসদার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চান্দলাই গ্রামে। তিনি বেসরকারি গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা পদে চাকরি করতেন।

মানিকগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের একটি বাসার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে একাই থাকতেন সামায়েল হাসদা। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে তিনি বাসায় যান। আজ মঙ্গলবার সকালে তিনি কর্মস্থল যাননি। ওই বাসার অদূরে বারসিকের জেলার প্রধান কার্যালয়। বেলা ১১টা হলেও তিনি কর্মস্থলে না যাওয়ায় তাঁর সহকর্মী কর্মসূচি কর্মকর্তা মো.

নজরুল ইসলাম ওই বাসায় যান। এ সময় ভেতর থেকে দরজা আটকানো থাকায় নজরুল বাসার মালিককে ডাকেন। এরপর বাসার মালিক সুলতান উদ্দিন সরকারি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করেন। খবর পেয়ে বেলা একটার দিকে সদর থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্যরা ওই বাসায় যান। এরপর বাসার কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে খাটের ওপর সামায়েলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যরা।

বেলা দুইটার দিকে সরেজমিন দেখা গেছে, জেলা শহরের পোড়রা এলাকার তিনতলা বাসার নিচতলার একটি কক্ষে খাটের ওপর ওই যুবকের মরদেহ পড়ে আছে। সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুর রহমান মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছেন।

মানিকগঞ্জ শহরের এই বাসা থেকে সামায়েল হাসদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ দেখতে ওই বাসার সামনে ভিড় করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের পোড়রা এলাকায়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ র মরদ হ ওই ব স শহর র র একট

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় নিশ্চিত করল ডিনেট

মৌলভীবাজারের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সুশাসন ও সরকারি সেবার মান নিশ্চিতে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) একটি পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিনেটের (Dnet) উদ্যোগে এবং মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে স্থানীয় হোটেল রেস্ট ইনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ সভার লক্ষ্য হলো—প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও কর্মপরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন, চাহিদা মূল্যায়ন প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন এবং সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য মূল সরকারি বিভাগ ও স্থানীয় অংশীদারদের সহযোগিতামূলক সমর্থন নিশ্চিত করা।

সভায় বিশেষ অতিথি এবং প্যানেল আলোচনা অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মামুনুর রশীদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা)। তিনি বলেছেন, “মৌলভীবাজারে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। প্রথমত, প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন, যা নিশ্চিত করবে যেন জনগণের বিকল্প কোনো পথের প্রয়োজন না হয়। দ্বিতীয়ত, চা শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া।” 

২৭ মাসব্যাপী ‘নাগরিক সমন্বয়’ প্রকল্পটি সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার (জিএসি) আর্থিক সহায়তায় সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের (নাগরিকতা) অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। ডিনেট চারটি স্থানীয় সহযোগী সংস্থার সঙ্গে অংশীদারত্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। সংস্থাগুলো হলো—কমলগঞ্জে জনকল্যাণ কেন্দ্র (জে কে কে), শ্রীমঙ্গলে প্রগতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (পিএসইউএস), কুলাউড়ায় নিঃস্ব সহায়ক সংস্থা (এনএসএস) এবং বড়লেখায় প্রচেষ্টা।

প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো—মৌলভীবাজারের চার উপজেলা—বড়লেখা, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, যুব ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য ক্লাইমেট জাস্টিস এবং সরকারি সেবার সমতা নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

সভার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—প্রকল্পের চাহিদা মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করা। এই গবেষণামূলক তথ্য স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি সেবার ঘাটতি এবং নাগরিক অংশগ্রহণের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্ণিত করেছে, যা সবার মধ্যে একটি অভিন্ন বোঝাপড়া তৈরি করবে এবং প্রকল্পের অ্যাডভোকেসি কৌশল নির্ধারণে মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

সভায় উপস্থাপিত মূল গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মৌলভীবাজার জেলায় অর্থনৈতিক বৈষম্য বেশ প্রকট। চা শ্রমিকদের ৫১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ৩৬ শতাংশ এখনো মারাত্মকভাবে অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার। সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পেতেও নাগরিকদের জটিলতা পোহাতে হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৫৩ শতাংশ নারী জানিয়েছেন যে, ভাতা পেতে তাদের ঘুষ (১০০ থেকে ৩০০ টাকা) দিতে হয়েছে। জলবায়ুগত ঝুঁকির ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের মতো উপজেলাগুলোতে ৬৪ শতাংশ নারী বন্যা ও ভূমিধসের মতো জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে তাদের আয়ের প্রধান উৎস হারিয়েছেন।

ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক মাহমুদ হাসান বলেছেন, “আগামী দুই বছরে আমাদের লক্ষ্য—মৌলভীবাজারে এমন কিছু সাফল্যের গল্প তৈরি করা, যা এই প্রকল্পের পরবর্তী ধাপের যাত্রাকে আরো শক্তিশালী করে তুলবে।”

নাগরিকতা ফান্ডের প্রতিনিধি ও জিএফএ কনসাল্টিং গ্রুপের লিড এক্সপার্ট– সিএসও সক্ষমতা উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক কর্মকর্তা জনাব নুরুল ইসলাম বলেছেন, “নাগরিকতা কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্য— ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১৬ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছানো। তাই, আমরা চেষ্টা করছি এই কর্মসূচি ভৌগোলিক ও জনমিতিকভাবে সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে।” 

নাগরিক সমন্বয়ের প্রকল্প পরিচালক আসিফ আহমেদ তন্ময় সভা পরিচালনা করেন।

ঢাকা/আজিজ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ