বাসায় পড়ে ছিল যুবকের মরদেহ, ৯৯৯-এ কল পেয়ে উদ্ধার করল পুলিশ
Published: 7th, October 2025 GMT
জাতীয় জরুরি সেবার নম্বরে (৯৯৯) কল পেয়ে মানিকগঞ্জ শহরের একটি বাসা থেকে সামায়েল হাসদা (৩০) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে পোড়রা এলাকার এক বাসার কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সামায়েল হাসদা রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চান্দলাই গ্রামের সরকার হাসদার ছেলে। তিনি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা ছিলেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলা শহরে এক বাসার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন সামায়েল হাসদা। সোমবার রাত ১০টার দিকে তিনি বাসায় যান। আজ মঙ্গলবার সকালে তিনি কর্মস্থল যাননি। ওই বাসার অদূরে বারসিকের মানিকগঞ্জ জেলার প্রধান কার্যালয়। বেলা ১১টাতেও তিনি কর্মস্থলে না যাওয়ায় তার সহকর্মী কর্মসূচি কর্মকর্তা মো.
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলা শহরের পোড়রা এলাকার তিন তলা বাসার নিচতলার একটি কক্ষে খাটের ওপর ওই যুবকের মরদেহ পড়ে আছে। মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুর রহমান মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছেন। ওই যুবকের মরদেহ দেখতে আশপাশের উৎসুক মানুষজন ওই বাসায় ভিড় করেছেন।
বাসার মালিক সুলতান উদ্দিন বলেছেন, দুই বছর ধরে বাসার নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সামায়েল একাই থাকতেন। গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি বাসায় আসেন।
বারসিকের কর্মসূচি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেছেন, সামায়েল গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত ছিলেন। কর্মস্থলে কাজের প্রতি তিনি খুবই আন্তরিক ছিলেন। তিনি ভালো ফুটবলও খেলতেন।
এসআই আশরাফুর রহমান বলেন, কক্ষের ভেতর টেবিলে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর কারণ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ঢাকা/চন্দন/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ ওই ব স র একট
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি: আবরারের বাবা
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি। আপিল বিভাগে এখনো মামলা বিচারাধীন। সরকারের কাছে আবেদন, বিচারের কাজটি যেন দ্রুত শেষ করা হয়।’’
আজ মঙ্গলবার (৭ আক্টোবর) ছিল আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি ঘিরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে স্মৃতিচারণসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল। ছেলেকে স্মরণ করে এ কথা বলেন আবরার ফাহাদের বাবা।
আরো পড়ুন:
আবরারের রক্ত বৃথা যায়নি, জাতিকে জাগিয়ে তুলেছে
কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা
শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘‘ছেলেটিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিষ্ঠুরতম এ অপরাধ করার পরও নিহতের পরিবার এখনো এর সুষ্ঠু বিচার পায়নি। আমরা দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানাই।’’
আবরার বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট।
ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আবরারের বাবা। সেই মামলার রায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চ এ বছর ১৬ মার্চ সেই সাজাই বহাল রাখে।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, “হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন। আশা করছি আপিল বিভাগেও হাই কোর্টের রায় বহাল থাকবে। এই সরকার রায় কার্যকর করবে।”
এ মামলায় দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে চারজন এখনো পলাতক। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান বরকত উল্লাহ।
দিনটি উপলক্ষে রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরারের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির নেতারা। দুপুর ২টায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক নয়ন আহমেদের নেতৃত্বে দলটির নেতারা কবর জিয়ারতে অংশ নেন। এ সময় তারা আবরার ফাহাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এসময় এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌস টনি, যুগ্ম সমন্বয়কারী কে এম আর শাহীনসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে শহীদ আবরার ফাহাদের হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করে শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ছাত্র-জনতা।
সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ আবরার ফাহাদের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল