‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে কোনো ব্যক্তির উপাত্ত তাঁর মালিকানাধীন গণ্য করে তাঁর সম্মতিতে আইনসম্মতভাবে প্রক্রিয়াকরণের বিধান রাখা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি–বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।

সরকার মনে করছে, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি জারি হলে উপাত্ত সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, মজুত বা ধারণ, ব্যবহার, স্থানান্তর, প্রকাশ, বিনষ্ট করা, আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা সর্বোপরি ডিজিটাল সেক্টরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে সরকার ব্যক্তিগত উপাত্ত চারটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে—পাবলিক বা উন্মুক্ত ব্যক্তিগত উপাত্ত, অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিগত উপাত্ত, গোপনীয় ব্যক্তিগত উপাত্ত এবং সীমাবদ্ধ ব্যক্তিগত উপাত্ত।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ৫৭টি ধারা রয়েছে। ব্যক্তিগত উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়ার জন্য উদ্দেশ্য, ধারণ-মেয়াদ, স্থানান্তর ও প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করে উপাত্তধারীর সম্মতি গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে। শিশু বা সম্মতি দেওয়ার মতো সক্ষম নয়, এমন ব্যক্তি সম্পর্কিত উপাত্ত প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে মা–বাবা বা আইনগত অভিভাবক বা সিদ্ধান্ত দিতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্মতি লাগবে। আর সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্ত শর্ত সাপেক্ষে প্রক্রিয়া করার বিধান রাখা হয়েছে। জিম্মাদারের প্রক্রিয়া করা উপাত্তে উপাত্তধারীর প্রবেশাধিকারের বিধান রাখা হয়েছে। উপাত্তধারী যেকোনো সময় সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে তাঁর সম্মতি প্রত্যাহার করতে পারবেন।

জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বার্থ, অপরাধ প্রতিরোধ, তদন্ত, কর ফাঁকি প্রতিরোধ, জনস্বাস্থ্য, সরকারি তহবিলের অপব্যবহার, অনুসন্ধান বা তদন্ত, পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা, শিক্ষা, শৈল্পিক কাজ বা সাহিত্য রচনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হলে উপাত্তধারীর সম্মতি গ্রহণ থেকে অব্যাহতির বিধান রাখা হয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বার্থ, অপরাধ প্রতিরোধ, তদন্ত, কর ফাঁকি প্রতিরোধ, জনস্বাস্থ্য, সরকারি তহবিলের অপব্যবহার, অনুসন্ধান বা তদন্ত, পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা, শিক্ষা, শৈল্পিক কাজ বা সাহিত্য রচনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হলে উপাত্তধারীর সম্মতি গ্রহণ থেকে অব্যাহতির বিধান রাখা হয়েছে।

খসড়ায় উপাত্তধারীর অধিকার লঙ্ঘিত হলে প্রশাসনিক জরিমানা এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিধানও রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এই অধ্যাদেশের বিধান লঙ্ঘন করে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রক্রিয়া করা, অননুমোদিতভাবে প্রবেশ বা হস্তক্ষেপ, বেআইনি টেম্পারিং, অপব্যবহার, সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্ত অননুমোদিতভাবে প্রক্রিয়া করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দণ্ড আরোপের বিধান রাখা হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অধ্যাদেশের আওতায় ‘জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ’ নামে একটি স্বাধীন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার বিধান রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুনডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া দণ্ডও বাতিল হবে, অধ্যাদেশ সংশোধন হচ্ছে১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রক র য় র ত উপ ত ত প উপ ত ত স ব যবহ র সরক র জনস ব তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

হামাস–ইসরায়েলের সংলাপকে স্বাগত জানাল বাংলাদেশ

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে কূটনীতি এবং সংলাপই যেকোনো সংঘাত সমাধানের একমাত্র উপায়। এই মর্মান্তিক সংকটের অবসান ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক উদ্যোগকে সহজতর করার জন্য অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ আশা করে, এই প্রক্রিয়াটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা প্রবেশ পুনরায় শুরু এবং গাজার জনগণের দুর্ভোগের অবসান ঘটাবে। বাংলাদেশ আরও আশা করে, সংলাপের মাধ্যমে গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে এই কূটনৈতিক প্রক্রিয়া একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করবে।

গাজায় শান্তি বজায় রাখতে এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের অনুসরণে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে ঢাকা। আর পূর্ব জেরুজালেম হবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় পাস হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বলে সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ