গয়না হাতিয়ে নিতে দাদিকে হত্যা করেন নাতনি
Published: 9th, October 2025 GMT
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় বৃদ্ধা মমতাজ বেগম (৬৯) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তাঁর নাতনি ফাউজিয়া খাতুন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ফাউজিয়া উল্লেখ করেন, দাদির শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁকে হত্যা করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের (সুমন) কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ফাউজিয়া। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
গত রোববার রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌর এলাকার সর্দারপাড়ায় নিজ বাড়িতে প্রয়াত প্রকৌশলী এস এম শফিউল্লাহর স্ত্রী মমতাজ বেগমের মরদেহ পাওয়া যায়। তাঁর মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরদিন তাঁর একমাত্র ছেলে জাকির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার দিন রাতেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বৃদ্ধার ভাশুরের নাতনি ফাউজিয়া খাতুনকে (১৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি বনপাড়ার সর্দারপাড়ার শাহিনুজ্জামানের মেয়ে।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পরপরই খুনিকে শনাক্ত করতে মাঠে নামে পুলিশ। তারা ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানতে পারে, ঘটনার সময় নিহত বৃদ্ধার বাড়িতে তাঁর ভাশুরের নাতনি ফাউজিয়া খাতুন প্রবেশ করেছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তারা বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে গোয়েন্দা নিয়োগ করে। একপর্যায়ে নাটোর শহরের হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রোববার রাতেই ফাউজিয়া ও তাঁর স্বামী মিনারুলকে আটক করা হয়। টানা চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদে ফাউজিয়া স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁর দাদিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কিছু গয়নাও জব্দ করা হয়।
আজ দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফাউজিয়াকে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের সামনে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। বিচারক তাঁকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তিন ঘণ্টা সময় দেন। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বিচারক নিজ খাসকামরায় তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
জবানবন্দি শেষে মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ফাউজিয়া পূর্ব–আক্রোশ ও গয়না হাতিয়ে নিতেই মমতাজ বেগমকে খুন করার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ফাউজিয়ার দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারওয়ার বলেন, বাড়ির প্রহরী এশার নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে ফাউজিয়া তাঁর দাদির শোবার ঘরে ঢোকেন। এ সময় ফাউজিয়া সেখানে স্বামীকে নিয়ে রাত্রিযাপন করতে চান। কিন্তু মমতাজ বেগম রাজি হননি। তখন ফাউজিয়া তাঁর হাতে থাকা টর্চলাইট দিয়ে মমতাজ বেগমের মুখমণ্ডলে আঘাত করেন। এতে তিনি লুটিয়ে পড়েন এবং তাঁর নাক ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। তখন ফাউজিয়া দ্রুত তাঁর দাদির শরীরে থাকা সাড়ে তিন ভরি সোনার গয়না খুলে নিয়ে নাটোরে চলে আসেন। নাটোরের একটি দোকানে তিনি গয়না বিক্রি করে নতুন জামাকাপড় কেনেন এবং বাসে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট, দোয়া চাইল বিএনপি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে। মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, তাঁর বুকে সংক্রমণ ও হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে। প্রায় ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।