ইসরায়েল থেকে মুক্ত শহিদুল আলম দেশে ফিরছেন আজই
Published: 10th, October 2025 GMT
ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে তুরস্কে চলে এসেছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি আজ শুক্রবার দুপুরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছান।
স্থানীয় সময় বেলা ২টা ২৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিট) শহিদুল আলমকে বহনকারী ফ্লাইটটি ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অবতরণ করে বলে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো.
রাষ্ট্রদূত আমানুল হক জানিয়েছেন, আজই ঢাকায় ফিরছেন শহিদুল আলম। ইস্তাম্বুলের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা করবে। ওই ফ্লাইটে দেশের পথে যাত্রা করবেন শহিদুল আলম।
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম স্বাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নাগরিক অধিকার নিয়েও সোচ্চার তিনি। গাজা অভিমুখী একটি নৌবহরে অংশ নিয়ে গত বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হন শহিদুল আলম। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার প্রত্যয় নিয়ে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম গাজা অভিমুখে ওই নৌযাত্রা শুরু করেছিল। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করা আরেক উদ্যোগ থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজার আটটি নৌযানও এ যাত্রায় অংশ নিয়েছিল। মোট ৯টি নৌযানের এ বহরে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। গত বুধবার ওই নৌবহরে আক্রমণ করে সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে ধরে নিয়ে যান ইসরায়েলি সেনারা।
আরও পড়ুনশহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দী করেছে ইসরায়েল২২ ঘণ্টা আগেপরে শহিদুল আলমসহ আটক অনেককে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়। ইসরায়েলে আটক হওয়ার পর থেকেই শহিদুল আলমের মুক্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জর্ডান, মিসর ও তুরস্কের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।
কারামুক্ত হয়ে শহিদুল আলম আজই ইসরায়েল থেকে তুরস্কের উদ্দেশে যাত্রা করেন। শহিদুল আলমের মুক্তি ও ইসরায়েল থেকে তাঁর প্রত্যাবর্তনে সাহায্য করার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুনইসরায়েলি বাহিনী আমাদের আটকে দিয়েছে, আমাকে অপহরণ করেছে: শহিদুল আলম০৮ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুপার ওভারে কোনো দলই অভ্যস্ত নয়, দেশে ফিরে আকবর আলী
জিশান আলমকে কি ওই শট খেলতেই হতো? প্রথম ২ বলে ৬ রান পাওয়া বাংলাদেশ কি শেষ ৪ বলে আরও ৬ রান তুলতে পারত না? ৪ বলে ৬ রান তুলতে তো প্রতি বলে বড় শটের দরকার হয় না!
গত পরশু কাতারে রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপ ফাইনালে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষ সুপার ওভারে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। সেই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে নেতৃত্ব দেওয়া আকবর আলী এ নিয়ে কী বলছেন?
আজ সকালে কাতার থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আকবর বলেছেন, কোনো দল সুপার ওভার খেলতে অভ্যস্ত নয়। ভারতের বিপক্ষে করা তাঁর শিশুতোষ ভুল নিয়েও কথা বলেন আকবর।
সেদিন সুপার ওভারে ৬ রান তুলেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রথম বলে হাবিবুর রহমান ১ রান নেন। দ্বিতীয় বলে আবদুল গাফফার ফিরতি ক্যাচ দেন পাকিস্তানি পেসার আহমেদ দানিয়ালকে। পরের বলে ওয়াইড থেকে আসে ৫ রান। বৈধ তৃতীয় বলে জিশান আলমকে বোল্ড করে দেন দানিয়াল। সুপার ওভারে বাকি ৩টি বল খেলতে পারলে ১০ রানের বেশি তোলার সম্ভাবনা থাকত বাংলাদেশের। এই টুর্নামেন্টে ইয়র্কার স্পেশালিস্ট হয়ে ওঠা রিপন মণ্ডলের বিপক্ষে ১০ থেকে ১২ রান তোলা সহজ হতো না পাকিস্তান ‘এ’ দলের। কিন্তু সংগ্রহ কম হওয়ায় পাকিস্তান ‘এ’ দলে সহজেই ম্যাচটি জিতে নেয়।
সুপার ওভারের পারফরম্যান্স নিয়ে আকবর বলেছেন, ‘সুপার ওভারে কোনো দলই অভ্যস্ত নয়, সুপার ওভার হয়ই কালেভদ্রে। টানা দুইটা ম্যাচে সুপার ওভার খেলার ঘটনা কমই ঘটে। সুপার ওভারে হাইরিস্ক শটই খেলতে হয়, অনেক সময় ক্লিক করে, অনেক সময় করে না। আমি এভাবেই দেখছি ব্যাপারটাকে।’
সেদিন সুপার ওভারের ব্যাটসম্যানদের সমন্বয় নিয়ে আকবর বলেন, ‘সুপার ওভারে সোহানকে (হাবিবুর) পাঠানো কারণ হলো পুরো টুর্নামেন্টে ও আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান ছিল। আর সাকলাইন আবদুল গাফফার) ওই ম্যাচে অনেক ভালো টাচে ছিল।’
ফাইনাল জিততে না পেরে হতাশাও প্রকাশ করেছেন আকবর, ‘প্লেয়ার, কোচিং স্টাফ থেকে সবাই একটু হতাশ, যেখান থেকে আমরা ফিরে এসেছি, এরপর সুভার ওভারে হারা সবার জন্য হতাশাজনক। চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চটা দেওয়ার, শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। সব মিলিয়ে বলতে হবে আমরা বেশির ভাগ জায়গায় ভালো ক্রিকেট খেলেছি, ফাইনাল জিততে পারলে, কোনো কোনো ম্যাচে ভুল কম করলে বলতাম আমরা পারফেক্ট টুর্নামেন্ট খেলে ফিরেছি।’
এর আগে সেমিফাইনালেও ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে সুপার ওভার খেলে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সেদিন ম্যাচ সুপার ওভারে যায় আকবরের বোকামিতে। সেমিফাইনালে শেষ বলে ভারত ‘এ’ দলের লাগত ৪ রান। হার্শ দুবে বাউন্ডারি মারা চেষ্টা করলেও বল যায় লং অনে জিশানের হাতে। তিনি উইকেটকিপার আকবরের দিকে থ্রো করলেও ২ রান নেয় ভারত ‘এ’ দল।
এরপর হার্শকে রানআউট করতে আকবর বল স্টাম্পে মারলেও স্টাম্প না ভাঙায় কোনো ফিল্ডারও কাছে না থাকায় ভারত ‘এ’ দল সুযোগ পেয়ে তৃতীয় রান নিয়ে ম্যাচ টাই করে। অথচ বল হাতে রেখে দিলেও বা হেঁটে গিয়ে স্টাম্প ভাঙলেও ১ রানে জিততে পারত বাংলাদেশ। এ নিয়ে আকবর বলেছেন, ‘ওই মোমেন্টে কী হয়েছে, আমি নিজেও জানি না। আমি কেন করেছি, এটার কোনো ব্যাখ্যাও নেই। তবে যে ভুলটা আমি করেছি, ওটা অনূর্ধ্ব–১২–এর খেলোয়াড়েরাও করবে না।’