গাজা নগরীতে সংঘর্ষে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ নিহত
Published: 13th, October 2025 GMT
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ আলজাফারাওয়ি গাজা সিটিতে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার মাত্র কয়েক দিন পরই এ ঘটনা ঘটল।
ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো আল–জাজিরা আরবিকে জানায়, ২৮ বছর বয়সী সালেহ গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধের ভিডিও ধারণ ও প্রচার করে পরিচিতি পেয়েছিলেন। গাজা নগরীর সাবরা এলাকায় হামাসের সঙ্গে গোত্রের সশস্ত্র সদস্যদের সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করছিলেন তিনি। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সালেহ।
বিভিন্ন সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের প্রকাশ করা ভিডিও ফুটেজ আল–জাজিরার পক্ষ থেকে যাচাই করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ‘সংবাদমাধ্যম’ লেখা জ্যাকেট পরিহিত সালেহর মরদেহ একটি ট্রাকের পেছনের অংশে পড়ে আছে। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো জানায়, রোববার সাবরা এলাকায় হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী ও দুগমুশ গোত্রের সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আল–জাজিরা আরবিকে বলেন, ‘গাজা নগরীর এ সংঘর্ষে (ইসরায়েলি) দখলদারত্বের সঙ্গে যুক্ত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী জড়িত।’
দুগমুশ গাজার সবচেয়ে প্রভাবশালী গোত্রগুলোর একটি। হামাসের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক। এর আগেও তাদের সশস্ত্র সদস্যরা একাধিকবার হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো আরও জানান, হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের ওপর অবরোধ আরোপ করেছে। এসব সশস্ত্র সদস্যরা যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে গাজা নগরীতে ফিরে আসা বাস্তুচ্যুতদের হত্যার সঙ্গে জড়িত।
আরও পড়ুনগাজায় হামাসের সঙ্গে গোত্রের সংঘর্ষ, নিহত অন্তত ২৭৬ ঘণ্টা আগেএবারের যুদ্ধবিরতির পরও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বারবার সতর্ক করে বলেছে, গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন বেশ নাজুক। চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
গত জানুয়ারিতে আল–জাজিরার সঙ্গে আলাপ করেছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ। তখন গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে হবে করছে। তাঁর আগে সালেহ আল–জাজিরার সঙ্গে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে নিজের বাস্তুচ্যুতির অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সশস ত র সদস ত র সদস য আল জ জ র ত রগ ল স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার, অনাবাসিক ৫ ছাত্রকে হল ত্যাগের নির্দেশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচন সামনে রেখে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে।
এদিকে রাতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের অংশ হিসেবে দুটি আবাসিক হলে তল্লাশি চালানো হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়-২৪ এবং মতিহার হলে যৌথ অভিযান চালায় পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রশাসন। এ সময় দুই হলে মোট পাঁচজন অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাঁদের আজ সোমবারের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় হল প্রশাসন।
আরও পড়ুনরাকসু নির্বাচনে তিনটি সম্পাদক পদে জোর লড়াইয়ের আভাস১১ অক্টোবর ২০২৫আবাসিক হলে পুলিশ দিয়ে তল্লাশি চালানোর সমালোচনা করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে পুলিশের কাজ কী? যদি পুলিশের কাজ থাকে তাহলে হল প্রভোস্টের কাজ কী? যেভাবে তল্লাশি হচ্ছে, মনে হয় হলগুলোতে শিক্ষার্থী থাকেন না, সন্ত্রাসী থাকে। কী গুরুতর অসম্মানজনক বিষয়! পুলিশকে হলে ঢুকিয়ে নর্মালাইজ করার চেষ্টা বিশেষ ভালো লক্ষণ না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। হলের নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রভোস্টের, সে জন্যই তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হইছে। দুই দিন পরপর হলে চুরি হয়, যা ঠেকানোর ন্যূনতম মুরোদ তাঁদের নাই। এখন পুলিশগিরি দেখাচ্ছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান গতকাল মধ্যরাতে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে দুটি হলে যৌথ তল্লাশি চালানো হয়েছে। মতিহার হলে অভিযান চালিয়ে তিনজন এবং বিজয়-২৪ হলে দুজন অনাবাসিক শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে। তাঁরা সবাই সংশ্লিষ্ট হলেরই ছাত্র। তবু আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, আগামীকালের (আজ) মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা খুবই দায়িত্বশীল আচরণ করেছেন। আগের অবস্থা থেকে এখন হল অনেক ভালো আছে।
আরও পড়ুনরাকসু নির্বাচন: কয়েকটি প্যানেলের ‘আকাশকুসুম’ ইশতেহার০৯ অক্টোবর ২০২৫এদিকে রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচন ঘিরে গতকাল রাত থেকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অন্তত ৩০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ফটকগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নির্বাচনের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে ভোট গ্রহণের দিন ২ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদাপোশাক ও ইউনিফর্ম মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য ক্যাম্পাসে মোতায়েন থাকবেন। এ ছাড়া অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও সার্বিক সহযোগিতায় থাকবে।