‘সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত’
Published: 11th, November 2025 GMT
১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের ‘লক ডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণার প্রেক্ষিতে প্রতিবাদমূলক সম্মিলিত বিবৃতি দিয়েছে চার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
বিবৃতিতে সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে দাবি করে ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসুর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করতে পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ এবং তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বিএনপি গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন একটি রাজনৈতিক দল: রিজভী
ডাকসু-জাকসুর ভিপি-জিএস-এজিএসরা পূর্বে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন: নাছির
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, জাকসু ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু, রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান ও চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনির যৌথ স্বাক্ষরে এই বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা-শ্রমিকসহ মুক্তিকামী জনগণ ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৮ বছরের দুঃসহ ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে। সহস্র শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশ যখন ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর চিরস্থায়ী বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তখনই বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী ও সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ তাদের দোসররা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে এক গভীর চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতোপূর্বে লগী-বৈঠার তাণ্ডব থেকে শুরু করে দেড় দশক ধরে গুম-খুন, গণহত্যা ও রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। প্রায় দুই হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই বিপ্লবের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক দেশজুড়ে নাশকতা, চোরাগোপ্তা হামলা, অগ্নিকাণ্ড, ককটেল বিস্ফোরণ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ষড়যন্ত্র দৃশ্যমান হলেও সন্ত্রাসীদের মূলোৎপাটনে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা সন্তোষজনক নয়। চলমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির অপতৎপরতা ইতিমধ্যেই শুরু করেছে পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা। জনগণের জান-মালের হেফাজত এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেকড় সমূলে উৎপাটনে সরকারকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে জুলাই গণহত্যায় জড়িত সন্ত্রাসীরা এখনো নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এসকল আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
ছাত্র সংসদ নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই দেশদ্রোহী গণহত্যাকারীদেরকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত টহল জোরদার করতে হবে এবং দেশব্যাপী চিরুনী অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে জাতিকে নিরাপদ করতে হবে। পাশাপাশি জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যার বিচারের দৃশ্যমান উন্নতি জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।
জনগণের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, সম্মিলিত ছাত্র সংসদ ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসুর পক্ষ থেকে আমরা দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক নাগরিক, ছাত্র-জনতা-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের যে প্রান্তেই এই নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিরোধ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ও ত দ র দ সরর সন ত র স দ র গণহত য সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান: স্বরাষ্ট্র উপদে
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন কোনো সন্দেহভাজনকে কাউকে দেখলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে তিনি এ আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে ‘কারাগার ঘোষণা’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউন নিয়ে সতর্ক আছে সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত অবস্থানে আছে, কোনো ধরনের আশঙ্কার কারণ নেই। কোনো ধরনের সন্ত্রাস সহ্য করা হবে না। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন।”
তিনি বলেন, “লকডাউন ঘিরে পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। রাস্তার ধারে পেট্রোল বেচা যাবে না। এগুলো দিয়ে অঘটন ঘটানো হয়।”
তিনি আরো বলেন, “কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্দেহভাজনদের দেখলে ধরিয়ে দেবেন। এটা আইন হাতে তুলে নেওয়ার মতো বিষয় না।”
এ সময় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান আরো বেগবান করা হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ