ছবি: শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিক। ফাইল ছবি

ক্যাপশন:

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা, তাঁর মেয়ে যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আগামী ১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে।

মামলায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। পরে ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো.

রবিউল আলম মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খান মো. মঈনুল হাসান বলেন, আজ এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল। মামলার গ্রেপ্তার থাকা আসামি রাজউকের সদস্য খুরশীদ আলমকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁর পক্ষে আইনজীবী মো. শাহীনুর ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তিতর্ক শুনানিতে এই আসামি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক। তাই তাঁরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ পাচ্ছেন না। পরে আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেন।

১৮ নভেম্বর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করেন আদালত। মামলায় মোট ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

গত ৩১ জুলাই এই মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬টি মামলা করে দুদক। এই মামলাগুলোর মধ্যে একটির রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য হলো।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দুই মাস পর জামিন পেলেন ভারতীয় নাগরিক সখিনা বেগম

পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ভারতীয় নাগরিক সখিনা বেগম দুই মাস পর জামিন পেয়েছেন। একই সঙ্গে সখিনাকে বাংলাদেশি আশ্রয়দাতাদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ পর পর ভাষানটেক থানার পরিদর্শককে সখিনার বিষয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ৪ মে থেকে ভাষানটেক থানাধীন মিরপুর ১৪ নম্বরের টিনশেড এলাকার বাসিন্দা জাকিয়া আক্তার ও ক্লান্তি আক্তারের আশ্রয়ে ছিলেন ৬৮ বছর বয়সী সখিনা বেগম। গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে সেখান থেকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আজ আদালত জামিন মঞ্জুর করে সখিনাকে মা–মেয়ে জাকিয়া ও ক্লান্তি আক্তারের জিম্মায় দেন। আদালত বলেছেন, যদি কখনো সখিনাকে ওঁনাদের রাখতে সমস্যা হয়, তাহলে আদালতকে জানাতে। আদালত অন্য কোথাও রাখার ব্যবস্থা করবেন। এ ছাড়া এক সপ্তাহ পরপর ভাষানটেক থানার পরিদর্শককে সখিনার বিষয়ে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন জামিন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। এর আগে সখিনাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তখন জামিন শুনানি হয়। এরপর বিচারক বিরতি দিয়ে আদেশের জন্য রাখেন।

সখিনা বেগমকে আটকের পর ‘দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২’ আইনে মামলা করে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরের দিন তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, এই আইন অনুযায়ী কোনো ভারতীয় নাগরিক পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে না। এর ব্যত্যয় হলে ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, অথবা ১ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

আজ আসামি সখিনার পক্ষের আইনজীবী রহমাতুল্যাহ সিদ্দিক বলেন, ‘জামিন শুনানির জন্য সখিনাকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানিতে আমরা বলেছি, এটা একটা জামিনযোগ্য ধারা। জামিন পেলে আসামি পালাবেন না। বিচারক জানতে চেয়েছেন, কার জিম্মায় জামিন দেবেন। আমরা বলেছি, ওনাকে গত চার–পাঁচ মাস যাঁরা রেখেছেন, ওনাদের অধীনে দেন।’

সখিনার খোঁজ পাওয়ার বিষয়ে ক্লান্তি আক্তার বলেন, সখিনার কাছ থেকে জানতে পেরেছেন ভারতের আসামের বাসিন্দা তিনি। একদিন আসামে তাঁর বাসা থেকে সেখানকার পুলিশ সই করার কথা বলে তাঁকে থানায় নেয়। ওঁনার পরিবার থানায় গেলে তাদের চলে যেতে বলে। বলে, ওঁনার কাজ শেষ হলে বাসায় যাবে। ওই দিন রাতেই ২৫ থেকে ৩০ জনের সঙ্গে ওঁনাকে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়। সেখান থেকে কয়েক সপ্তাহ এদিক–সেদিক ঘুরতে ঘুরতে ঢাকার ভাষানটেকে আসেন।

ক্লান্তি আক্তার বলেন, ‘মে মাসের চার তারিখ একটা দোকানে ওঁনাকে বসে থাকতে দেখি। ওঁনার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সেখান থেকে বাসায় আশ্রয় দিই।...আমরা বিষয়টি বিবিসির সাংবাদিককে জানাই। উনি রিপোর্ট করার পর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। উনি আমাদের কাছে পাঁচ মাসের মতো ছিলেন।’

জামিন পাওয়া সখিনা যত দিন বাংলাদেশে থাকবেন, তত দিন তাঁদের কাছেই থাকবেন বলে জানান ক্লান্তি। তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে থাকাকালে ওঁনার প্রতি একটা মায়া জম্মেছে। উনি (সখিনা) ওঁনার দেশকে ভালোবাসেন। ওনার দেশেই যেতে চান। ওঁনার আত্মীয়স্বজন ওঁনাকে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন।’

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ভাষানটেক থানার টিনশেড টেকপাড়া গলির মাথায় সখিনা বেগমকে পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের জিজ্ঞসাবাদে ওই নারী তাঁর বাড়ি আসামে বলে জানান। তিনি কিছুটা বাংলায় আর কিছুটা অসমীয়া ভাষায় কথা বলতে পারেন। তাঁর কাছে পাসপোর্ট ও ভিসা চাইলে দেখাতে পারেননি। কীভাবে ভাষানটেক এসেছেন, সে–সংক্রান্ত কোনো তথ্য দিতে পারেননি। আসামের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশের অপরাধে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক আইজিপি শহীদুলের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ
  • নূরাল পাগলার দরবারে হামলার ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারে পরিবারের আবেদন
  • সারা হোসেনের প্রশ্ন, ‘পুলিশ কি পুরোনো নিপীড়ন বন্ধ করবে’
  • দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার আসামির মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ৪ ডিসেম্বর
  • ‘ই-পারিবারিক আদালত বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে’
  • বিচারের দীর্ঘসূত্রতা দূর করবে ই-পারিবারিক আদালত
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় হাফিজুর রহমানের হাইকোর্টে জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই
  • ট্রাইব্যুনাল বললেন, আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য
  • দুই মাস পর জামিন পেলেন ভারতীয় নাগরিক সখিনা বেগম