নানা প্রয়োজনে উন্মুক্ত স্থানে বা ক্যাফে, এয়ারপোর্ট ও হোটেলে বিনা মূল্যে ওয়াই–ফাই ব্যবহার করেন। গুগল বলছে, পাবলিক ওয়াই–ফাই নেটওয়ার্ক সাইবার অপরাধীদের জন্য সহজ প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। অনিরাপদ সংযোগের মাধ্যমে হ্যাকাররা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত তথ্য বা গোপন চ্যাটসহ সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন সতর্কবার্তা গুগলের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অ্যান্ড্রয়েড: বিহাইন্ড দ্য স্ক্রিন থেকে জানা গেছে।

গুগল জানিয়েছে, লেখাভিত্তিক প্রতারণা ও মোবাইলকেন্দ্রিক সাইবার হামলার পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। এর মধ্যে পাবলিক ওয়াই–ফাই এখন অন্যতম বড় নিরাপত্তাঝুঁকি। একান্ত প্রয়োজন না হলে পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার না করাই ভালো। বিশেষ করে অনলাইন ব্যাংকিং, কেনাকাটা বা আর্থিক ও ব্যক্তিগত তথ্যসংবলিত অ্যাকাউন্টে প্রবেশের সময় পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার করা উচিত নয়।

নানা ঢঙে ডিজিটাল প্রতারণা এখন বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়ছে। গুগলের তথ্যমতে, মোবাইলভিত্তিক প্রতারণা এখন বৈশ্বিক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এসব প্রতারণার মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ভুক্তভোগীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। গত এক বছরে বিশ্বজুড়ে এ ধরনের প্রতারণায় ভোক্তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি ডলার। যার খুব অল্প অংশই পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে।

প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রতারকদের কৌশলও বদলাচ্ছে। গুগল জানিয়েছে, এখন অনেক সাইবার অপরাধী ব্যবসায়িক কাঠামোয় সংগঠিতভাবে কাজ করছে। তারা চুরি করা ফোন নম্বর কিনছে, স্বয়ংক্রিয় বার্তা পাঠানোর সিস্টেম ব্যবহার করছে ও ফিশিং অ্যাজ আ সার্ভিস প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে আসল ওয়েবসাইটের মতো ভুয়া সাইট তৈরি করে ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করছে।

প্রতারক চক্র দ্রুত এলাকা বদল করে প্রতারণা চালাচ্ছে। তারা এমন দেশ বা এলাকায় কার্যক্রম সরিয়ে নিচ্ছে, যেখানে সিম কার্ড সস্তা ও সহজলভ্য। এতে খুব অল্প খরচে বিপুলসংখ্যক মানুষকে লক্ষ্য করে প্রতারণা চালানো সম্ভব হচ্ছে। অনেক সময় প্রতারকেরা ভুয়া পার্সেল ডেলিভারি, বকেয়া বিল বা করসংক্রান্ত বার্তা পাঠিয়ে মানুষকে ভয় দেখায়। আবার কেউ কেউ ধীরে ধীরে বিশ্বাস অর্জনের কৌশল নেয়। চাকরির প্রস্তাব বা রোমান্টিক সম্পর্কের ভান করে ব্যক্তিগত তথ্য ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রতারকেরা এখন প্রযুক্তির পাশাপাশি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করতে ভিন্ন কৌশলও ব্যবহার করে। তারা এমন বার্তা পাঠায়, যা আতঙ্ক তৈরি করে। আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে বা ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে—এমন বার্তা পাঠানো হয়। এতে মানুষ তড়িঘড়ি করে প্রতিক্রিয়া জানায় ও প্রতারণার ফাঁদে পড়ে।

গুগল পরামর্শ দিয়েছে, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার না করা সবচেয়ে নিরাপদ। বিশেষ করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লগইন করা বা সংবেদনশীল তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। ফোনের ওয়াই–ফাই অটোকানেক্ট সুবিধা বন্ধ রাখুন। ওয়াই–ফাই সংযোগ আসল ও এনক্রিপটেড কি না, তা যাচাই করা উচিত। এ ছাড়া অচেনা বার্তা বা লিংকে সাড়া দেবেন না। সন্দেহজনক যোগাযোগ যাচাই করতে সরকারি বা অফিশিয়াল মাধ্যম ব্যবহার করা, নিয়মিত সফটওয়্যার ও নিরাপত্তা আপডেট ইনস্টল করুন। ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ডের বিবরণে অনিয়ম আছে কি না, তা খেয়াল রাখার অভ্যাস অনলাইন নিরাপত্তা অনেকাংশে বাড়াতে সাহায্য করে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর অ য ক উন ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা মেকার্সের এবারের আয়োজনে কী থাকছে

‎ছবি: ফারদীন-ই-হাসান ফুয়াদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ