পুরোদমে সীমান্ত বাণিজ্য সচল হবে: টেকনাফে শ্রমসচিব
Published: 11th, January 2025 GMT
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের প্রভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। মিয়ানমারের সংঘাত দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে টেকনাফ স্থলবন্দরের অন্ধকার কেটে যাবে, খুব দ্রুত আলো ফিরবে। কারণ, উভয় দেশে পণ্যের চাহিদা থাকায় পুরোদমে সীমান্ত বাণিজ্য আবার সচল হবে। বর্তমান সরকার সে বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আজ শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর পরিদর্শনে গিয়ে এ কথাগুলো বলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এইচ এম শফিকুজ্জামান। পরিদর্শনকালে তিনি স্থলবন্দরে নিয়োজিত শ্রমিক, মাঝি (শ্রমিকনেতা) ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রম আইন ও শ্রমিক অধিকারের বিষয়ে বৈঠক করেন। এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ রাখা উচিত না। প্রথমে দরকার ওপারের শান্তি, সেটি হলে সীমান্ত বাণিজ্য আগের রূপে ফিরবে।
শ্রমিকদের উদ্দেশে সচিব এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘এখানে (স্থলবন্দরে) অনেক সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে পরিবহন খাত অন্যতম। পথে পথে এবং স্থানীয়ভাবে চাঁদাবাজি হতো, সেগুলো বন্ধের সময় এসেছে। তাই সবাইকে একসঙ্গে কথা বলতে হবে। কেননা ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগে এক সরকার ছিল, এখন নতুন এক বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন কাজ করছে। আমরা চাই সব বৈষম্য দূর হোক।’
স্থলবন্দরে যাতে শ্রম আইন লঙ্ঘন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ করে বৈঠকে সচিব এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকেরা যাতে তাঁদের ন্যায্য অধিকার পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এই স্থলবন্দরে কোনো ধরনের ট্রেড ইউনিয়ন নেই। শ্রমিকদের সুবিধার জন্য দ্রুত ট্রেড ইউনিয়ন করায় গুরুত্ব দেন। বিশেষ করে, এখানে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় হতাহতের শিকার হন শ্রমিকেরা। আমরা তাঁদের (শ্রমিকদের) সহায়তা করতে চাই। সে ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। সেগুলো ফলো করতে হবে। তবে বন্দরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রথমে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাঁদের সবার একটা ডেটাবেজ করতে চাই।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মো.
জানতে চাইলে শ্রমিকনেতা (মাঝি) আলী আজগর বলেন, ‘স্থলবন্দরে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। বিশেষ করে, স্বাস্থ্যসেবাসহ দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকদের সহায়তা না পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।’
টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ব্যবসায়ী এনামুল হাসান। তিনি জানান, রাখাইনের মংডু টাউনশিপ আরাকান আর্মি দখল নেওয়ার পর টেকনাফ বন্দরে পণ্যবাহী ট্রলার আসা বন্ধ রয়েছে। আরাকান আর্মির প্রতিবন্ধকতার কারণে মিয়ানমার থেকে ট্রলার আসতে পারছে না। যার কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসানের পাশাপাশি সরকারও কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের উচিত দ্রুত এটি সমাধান করা।
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে বছরখানেক ধরে পণ্য আসা কমে গেছে। এর মধ্যে কয়েক মাস ধরে পণ্যবাহী ট্রলার আসা বন্ধ রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১০ দিন পর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে বাণিজ্য শুরু
ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে পূণরায় আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন।
তিনি জানান, কোরবানি ঈদ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে ১৪ জুন (শনিবার) পর্যন্ত টানা ১০ দিন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আজ (১৫ জুন) রবিবার থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম যথারীতি চালু হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রবিবার সকাল থেকে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের ওসি ফিরোজ কবীর জানান, বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও বৈধ পাসপোর্টধারীদের পারাপার স্বাভাবিক ছিল।
ঢাকা/নাঈম/এস