পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে তাঁদের ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়াতে চান। তবে ভিসা জটিলতা ও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় সেটি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে বিদ্যমান এসব জটিলতা নিরসনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।

আজ রোববার বিকেলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে এসব বিষয় তুলে ধরেন বাংলাদেশ সফররত পাকিস্তানের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তানের ওই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আমন্ত্রণে তাঁরা ঢাকা সফরে এসেছেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, ভিসা সহজীকরণ, সরাসরি বিমান চলাচল ও ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, দুই দেশের জনসংখ্যার আকার বিবেচনায় বাণিজ্যের পরিমাণ খুব কম। উভয় দেশেরই সুযোগ রয়েছে বাণিজ্য বাড়ানোর। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক টেকসই করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের আরও বেশি আলোচনা হওয়া দরকার। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়লে দুই দেশই লাভবান হতে পারবে।’

বৈঠকে এফপিসিসিআই সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ জানান, ভিসা জটিলতা ও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় তাদের ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়াতে পারছে না। এ জন্য বিদ্যমান জটিলতাগুলো নিরসন করা দরকার।

পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপণন, শিক্ষা, পর্যটন ও সিরামিক খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, পাকিস্তান সরকার এক্সপোর্ট ফ্যাসিলিটেশন স্কিম চালু করেছে। এ স্কিমের আওতায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে পারেন। এ সময় তাঁরা বাংলাদেশে ট্রেড এক্সপো আয়োজনের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ