সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলা চালাতে আগ্রহী নন বাদী
Published: 13th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মো. জহুর আলী (৩০)। পুলিশ তাঁর পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। ঘটনার এক মাস পর তাঁর বড় ভাই হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন। এতে ৯৯ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছিল।
এ মামলায় সাবেক পরিকল্পনামমন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকসহ ১১৯ জন গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। একই মামলায় আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে বর্তমানে জেলে আছেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নাদের বখতসহ সাতজন।
এ অবস্থায় আজ সোমবার আদালতে হাজির হয়ে বাদী ও জখমি দুই ভাই আপসনামা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, আসামিরা জামিন পেতে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই। এ মামলা চালাতে তাঁরা আর আগ্রহী নন। সুনামগঞ্জের দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক নির্জন কুমার মিত্র আপসনামার আবেদনটি মামলার নথিতে রেখেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধক নুরুল আলম।
এর আগে মামলা দায়েরের ১ মাস ২০ দিন পর হাফিজ আহমদ আদালতে হলফনামা দিয়ে বলেছিলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি কোনো কিছু জানেন না, কোনো আসামিকে চেনে না। পরে গত ১১ নভেম্বর তিনি আদালতে এলে সেখান থেকে একদল যুবক তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। রাতে সদর থানা থেকে তাঁকে নেন পরিবারের লোকজন।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে বাদীকে আদালত এলাকা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ১১ নভেম্বর ২০২৪গুলিতে আহত মো.
জহুর আলী বলেন, ‘যেহেতু পুলিশ আমাকে গুলি করেছে, তাই পুলিশের বিরুদ্ধে এ মামলা করার কথা ছিল। পরে দেখা যায়, মামলায় ৯৯ জন আসামির নাম। নাম ছাড়া আরও আসামি ২০০ জন। পরে মামলা নিয়া ব্যবসা শুরু হয়। টাকা নিয়ে জেলে ঢুকায়, বের করে। মামলায় যাদের নাম নাই তাদেরই পুলিশ ধরে বেশি।’ জহুর আলী আরও বলেন, ‘আমরা আর মামলা চালাব না বলেছি। আর কারও শত্রু হতে চাই না। আমি বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাব। তাই এ মামলার ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে চাই।’
আরও পড়ুনআন্দোলনে গুলিবিদ্ধ জহুর আলী লাইভে এসে বললেন, ‘এই মামলা নিয়া এখন ব্যবসা শুরু হইছে’১৪ নভেম্বর ২০২৪জহুর আলীর বাড়ি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বাধনপাড়া এলাকায়। তিনি শহরের একটি সার-বীজের দোকানে চাকরি করতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার এরোয়াখাই গ্রামে।
মামলার পর বাদী হাফিজ আহমদও একপর্যায়ে স্বীকার করেন, তিনি এত লোককে আসামি দিতে চাননি। ওই সাংবাদিকই সব করেছেন। আদালতে দেওয়া হলনামায় তিনি লিখেছেন, তাঁর বাড়ি দোয়ারাবাজার উপজেলার এরোয়াখাই গ্রামে। ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জ থেকে অনেক দূরে। তাই তিনি ঘটনার বিষয়ে কোনো কিছু জানেন না। আসামিদেরও চিনেন না।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে জামিন পেলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান০৯ অক্টোবর ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ১
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে বাসের ধাক্কায় জকির আহমদ জেকি (৪০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত জকির আহমদ জেকি হোয়াইক্যং হোয়াব্রাং এলাকার মৃত নাগু সওদাগরের ছেলে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জায়েদ নুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি জানান, ‘পালকি পরিবহন’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস হ্নীলা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের সামনে চলে আসে। এতে মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে চাপা পড়ে। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের লবণ মাঠে উল্টে যায়। সেসময় স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হ্নীলা ও টেকনাফের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জকির আহমদ জেকি মারা যান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হোয়াইক্যং নয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায় এবং সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
সালাহউদ্দিন নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “মোটরসাইকেলটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। হ্নীলা স্টেশন থেকে হোয়াব্রাংয়ের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের সামনে ঢুকে পড়ে, মুহূর্তেই বাসটি উল্টে যায়।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, হ্নীলা-টেকনাফ সড়কে বেপরোয়া গতিতে যান চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে। এ জায়গায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
ঢাকা/তারেকুর/এস