‘চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ’–এর আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০৫ সদস্যের এই আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ও ৫ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তী সময়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক–কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের উপদেষ্টা ফেরদৌস আলম এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাইফ পাওয়ার টেকের কর্মচারী আবুল বশরকে আহ্বায়ক এবং এফ কিউ খানের মার্চেন্ট শ্রমিক মো.

বজলুর রহমানকে সদস্যসচিব করে গঠিত চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলো। এতে ২৪ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ৪৭৯ জনকে সদস্য করা হয়েছে। তাঁরা সবাই চট্টগ্রাম ডক বন্দরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও কর্মচারী। এই কমিটি আগামী এক বছর দায়িত্ব পালন করবে।

শ্রমিক-কর্মচারীদের এই সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকে। উপদেষ্টা পরিষদে সদস্য হিসেবে আছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, চট্টগ্রাম পোর্ট এজেন্ট, স্টিভিডোর অ্যান্ড কন্ট্রাক্টরস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফেরদৌস আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক সাগুফতা বুশরা মিশমা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ।

এর আগে এই কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ২২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ মুন্সী ফজলুর রহমান মিলনায়তনে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ফেরদৌস আলমের সভাপতিত্বে সেই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আবদুল হান্নান মাসউদ। সেখানে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা আরিফুল ইসলাম ও সাগুফতা বুশরাও বক্তব্য দেন। ওই সভায় সবার সম্মতিতে আবুল বশরকে আহ্বায়ক ও মো. বজলুর রহমানকে চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ঘোষণা করেন আরিফুল।

আজকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ, ন্যায্য মজুরি ও অন্যান্য অধিকার নিয়ে কাজ করবে তারা। এ ছাড়া তারা ১৬ দফা দাবিও জানিয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে আছে—শ্রম আইনের ১৮৫ (ক) ধারা বাতিল, শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য বন্দর পরিচয়পত্র দেওয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে বুকিং করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড (ভবিষ্য তহবিল) ২৫০ টাকার স্থলে ১ হাজার টাকা করা, মার্চেন্ট শ্রমিকদের স্বাভাবিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ করলে শ্রমিক-কর্মচারীদের দ্বিগুণ মজুরি দেওয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণ, কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম বন্দরে অনিয়ম দূর করতে মনিটরিং সেল গঠন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন

অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

৩. সারভাইক্যাল রিবস

৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া

৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে

৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি

৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা

৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ

৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়

১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ

১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া

১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস

১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস

১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া

১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা

১৬. হাড়ের ইনফেকশন

১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)

১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।

উপসর্গ

ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।

বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।

সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।

ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।

হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।

ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

চিকিৎসা

চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।

কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়

১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।

২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।

৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।

৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।

৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।

৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।

৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।

৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।

১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।

১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।

১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ