চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা
Published: 13th, January 2025 GMT
‘চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ’–এর আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০৫ সদস্যের এই আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ও ৫ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তী সময়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক–কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের উপদেষ্টা ফেরদৌস আলম এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাইফ পাওয়ার টেকের কর্মচারী আবুল বশরকে আহ্বায়ক এবং এফ কিউ খানের মার্চেন্ট শ্রমিক মো.
শ্রমিক-কর্মচারীদের এই সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকে। উপদেষ্টা পরিষদে সদস্য হিসেবে আছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, চট্টগ্রাম পোর্ট এজেন্ট, স্টিভিডোর অ্যান্ড কন্ট্রাক্টরস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফেরদৌস আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক সাগুফতা বুশরা মিশমা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ।
এর আগে এই কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ২২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ মুন্সী ফজলুর রহমান মিলনায়তনে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। ফেরদৌস আলমের সভাপতিত্বে সেই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আবদুল হান্নান মাসউদ। সেখানে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা আরিফুল ইসলাম ও সাগুফতা বুশরাও বক্তব্য দেন। ওই সভায় সবার সম্মতিতে আবুল বশরকে আহ্বায়ক ও মো. বজলুর রহমানকে চট্টগ্রাম ডক বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ঘোষণা করেন আরিফুল।
আজকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ, ন্যায্য মজুরি ও অন্যান্য অধিকার নিয়ে কাজ করবে তারা। এ ছাড়া তারা ১৬ দফা দাবিও জানিয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে আছে—শ্রম আইনের ১৮৫ (ক) ধারা বাতিল, শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য বন্দর পরিচয়পত্র দেওয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে বুকিং করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড (ভবিষ্য তহবিল) ২৫০ টাকার স্থলে ১ হাজার টাকা করা, মার্চেন্ট শ্রমিকদের স্বাভাবিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ করলে শ্রমিক-কর্মচারীদের দ্বিগুণ মজুরি দেওয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণ, কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম বন্দরে অনিয়ম দূর করতে মনিটরিং সেল গঠন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।