অভিন্ন নদীর সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের চুক্তিতে বাংলাদেশের সই করা উচিত
Published: 13th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বয়ে যাওয়া অভিন্ন নদ–নদীগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। আন্তর্জাতিক নদীপ্রবাহ নিয়ে জাতিসংঘের যে চুক্তি রয়েছে, বাংলাদেশের উচিত তাতে স্বাক্ষর করা। ওই চুক্তির আলোকে দুই দেশের অভিন্ন নদ–নদীগুলোর সমস্যার সমাধান করতে হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য সেন্টার ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিসার্চ অ্যান্ড সার্ভিসেস (সিআইআরএস) আয়োজিত সেমিনারের বিষয় ছিল ‘ব্রেকিং দ্য আইস: ডায়ালগ অন ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটার শেয়ারিং বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া’।
সেমিনারে বক্তারা যৌথ নদী বিষয়ে সব ধরনের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দল তৈরির সুপারিশ করেন। দলটি ওই নদীগুলোর তীরবর্তী জনপদের কৃষি, পরিবেশ, পানি ও মানুষের জীবিকার পরিবর্তনগুলো নিয়ে কাজ করবে।
সেমিনারে জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণার প্রধান অর্থনীতিবিদ নজরুল ইসলাম প্রেজেন্টেশন দেন। তিনি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে অগ্রাধিকার দিয়ে জাতিসংঘের নদীর নন–নেভিগেশন (নৌযান চলাচলের সুবিধার বাইরে অন্যান্য উপযোগিতা) বিষয়ক আইনের আওতায় হওয়া চুক্তিতে সই করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। ওই চুক্তির আওতায় তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন নদ–নদীবিষয়ক সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দেন।
নদী ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞ ড.
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সিভিল ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য তানভীর হারুন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক শফিউল ইসলাম। তিনি যৌথ নদীগুলোর সমস্যার সমাধানে বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিষয়গুলোকে একত্র করে পরিকল্পনা করার কথা বলেন। দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ে নিয়মিত আলোচনার ওপর জোর দেন তিনি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক