টানা বৃষ্টিতে ২১ জেলায় ডুবে গেছে ৭২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি
Published: 11th, July 2025 GMT
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকা এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বেশ কিছু জেলায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এতে নিমজ্জিত হয়েছে মাঠের আউশ, আমন বীজতলা, পাট, শাকসবজি, কলা, পেঁপে, তরমুজসহ নানা জাতের মৌসুমি ফসল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ উইংয়ের পরিচালকের স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মোট ২১টি জেলার প্রায় ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে আউশ আবাদ। মোট ৪৪ হাজার ৬৬২ হেক্টর আউশ জমি পানির নিচে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতি হয়েছে আমন বীজতলার ১৪ হাজার ৩৯৩ হেক্টর।
এর পাশাপাশি ৯ হাজার ৬৭৩ হেক্টর জমির শাকসবজি, ২৯৭ হেক্টর বোনা আমন, ১৩৫ হেক্টর পাট, ৩৮৭ হেক্টর পান, ২৯৩ হেক্টর পেঁপে, ১১৪ হেক্টর কলা, ২৮১ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন তরমুজ এবং ১০৪ হেক্টর জমির মরিচ পানিতে তলিয়ে গেছে।
২১ জেলার মধ্যে কুমিল্লায় সবচেয়ে বেশি ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। জেলার ১১ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে। এ তালিকায় রয়েছে আউশ, আমন, শাকসবজি, মরিচ ও আখ।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নোয়াখালী জেলা, যেখানে ৭ হাজার ৮০৬ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত। ফেনী জেলায় ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমির।
এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের কোথাও কোথাও অস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, যার ফলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মৌসুমি ফসল পানিতে ডুবে গেছে।
তবে আশার কথা হচ্ছে- গত কয়েক দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। ফলে পানিতে নিমজ্জিত ফসলের হারও ধীরে ধীরে কমছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ও ফসলের ধরণ নির্ণয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ক্ষতি নিরূপণ শেষে পুনর্বাসন কার্যক্রমের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।”
এর আগে জুন মাসের শেষ দিক থেকে দেশের উপকূলবর্তী ও নিম্নাঞ্চলগুলিতে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। লঘুচাপের প্রভাবে তা তীব্রতর হলে অনেক ফসলি মাঠ দীর্ঘ সময় পানিতে ডুবে থাকে, যার ফলে ফসলের শিকড় পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ফসল পানিতে ডুবে থাকলে তা চূড়ান্ত ক্ষতির মুখে পড়ে। বিশেষ করে আমন বীজতলা ধ্বংস হলে কৃষকদের পরবর্তী মৌসুমের আবাদও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, কৃষি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ঢাকা/এএএম/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল প ন র ফসল
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টির বাজারে শাকসবজির সরবরাহ কম মুরগি, মাছ, কাঁচা মরিচের দাম বাড়তি
টানা দুই দিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। একটানা বৃষ্টি থাকায় বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কমেছে। আবার বাজারে শাকসবজি, মাছ ও অন্যান্য নিত্যসামগ্রীর সরবরাহও কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে মুরগি, মাছ, কাঁচা মরিচসহ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দুই দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশে বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে। তবে আগামী রোববার থেকে আবার বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।
ঢাকায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। আজ বুধবার সকাল থেকেও বৃষ্টি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে নিত্যদিনের সবজির সরবরাহ কমেছে। ক্রেতার উপস্থিতিও কমেছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা আব্বাস আকন্দ বলেন, গতকাল থেকে টানা বৃষ্টির পর আজ সবজির সরবরাহ প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে।
আব্বাস আকন্দ আরও বলেন, বৃষ্টির কারণে মানুষজন শাকসবজি কিনতে কম আসছেন। অনেকেই বড় বাজারে না এসে বাসার আশপাশের ছোট দোকান বা ভ্যান থেকে প্রয়োজনীয় সবজি কিনছেন। সে ক্ষেত্রে দাম কিছুটা বেশি থাকে।
বাজারে ক্রেতাও কম। গতকাল রাতে রাজধানীর হাজিক্যাম্প বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘বাসায় তেমন শাকসবজি নেই। তাই বিপাকে পড়ে বৃষ্টির মধ্যেও সবজি কিনতে এসেছি।’
দাম বেড়েছে যেসব পণ্যের
খুচরা বিক্রেতারা জানান, দুই দিনের টানা বৃষ্টির মধ্যে কাঁচা মরিচ, বেগুন, সোনালি মুরগিসহ কিছু পণ্যের দাম সামান্য বেড়েছে। যেমন আজ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা দরে। এই দাম দুই দিন আগে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা ছিল। আবার বেগুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৯০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সোনালি মুরগির বর্তমান দাম ২৮০ থেকে ৩১০ টাকা। দুই দিন আগে সোনালি মুরগির দাম ছিল ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আর ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।
মাছের দামও কিছুটা বাড়তি। বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ সময়ে যে দামে রুই, পাঙাশ, শিং, কই, পাবদা মাছ বিক্রি হয়, আজ একই মাছ কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম বেড়েছে যেসব পণ্যেরখুচরা বিক্রেতারা জানান, দুই দিনের টানা বৃষ্টির মধ্যে কাঁচা মরিচ, বেগুন, সোনালি মুরগিসহ কিছু পণ্যের দাম সামান্য বেড়েছে। যেমন আজ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা দরে। এই দাম দুই দিন আগে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা ছিল। আবার বেগুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৯০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সোনালি মুরগির বর্তমান দাম ২৮০ থেকে ৩১০ টাকা। দুই দিন আগে সোনালি মুরগির দাম ছিল ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আর ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।
মাছের দামও কিছুটা বাড়তি। বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ সময়ে যে দামে রুই, পাঙাশ, শিং, কই, পাবদা মাছ বিক্রি হয়, আজ একই মাছ কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।