ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আজ যে ছবিগুলো দেখা যাবে
Published: 14th, January 2025 GMT
৭৫ দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র নিয়ে গত শনিবার শুরু হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগানে উৎসবটির আয়োজন করেছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। আজ উৎসবের চতুর্থ দিন রয়েছে একাধিক সিনেমার প্রদর্শনী।
জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন
সকাল সাড়ে ১০টায় রয়েছে ‘মাম্মালিয়া’। জার্মানি, পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার প্রযোজনায় ৮৯ মিনিটের এ সিনেমাটি বানিয়েছেন সেবাস্তিয়ান মিহাইলেস্কু। দুপুর ১টায় রয়েছে চীনের ‘ব্যাক টু লাভ’। ১০২ মিনিটের সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন হংচাং। বেলা ৩টায় থাকছে ইরাকের ‘দ্য লাস্ট পোস্টম্যান’। ৮৮ মিনিটের এ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন সাদ আলেসামি। বিকেল ৫টায় থাকছে কাজাখস্তানের সিনেমা ‘দ্য ল্যান্ড ওয়ার ওয়াইন্ড স্টুড স্টিল’। ১০৯ মিনিটের এ সিনেমাটি বানিয়েছেন আরদাক আমিরকুলভ। সন্ধ্যা ৭টায় দেখানো হবে বাংলাদেশের সিনেমা ‘শরতের জবা’। ১২৩ মিনিটের সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন অভিনেত্রী কুসুম সিকদার।
জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন সকাল সাড়ে ১০টায় দেখানো হবে বাংলাদেশের সিনেমা ‘নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়’। ১২৭ মিনিটের এ শিশুতোষ সিনেমাটি বানিয়েছেন লুবনা শারমীন। দুপুর ১টায় রয়েছে রাশিয়ার স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘প্রগুলাকা’। ১১ মিনিটের এ সিনেমার নির্মাতা ভারভারা আলেশকেভিচ। এরপর থাকছে ‘লস মসকিউটো’। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ মিনিটের এ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন নিকোল চি। এরপর থাকছে আর্জেন্টিনার ‘নুয়েস্ট্রা সোমব্রা’। ২০ মিনিটের এ সিনেমাটি বানিয়েছেন আগুস্টিনা সানচেজ গ্যাভিয়ের। এরপর থাকছে জার্মানির সিনেমা ‘স্কারলেট’। ২৫ মিনিটের এ সিনেমার পরিচালক মারিয়া বোবেভা এবং মেস্কিকোর ‘বুলগেরিয়া লা সোলেদাদ’। ২৯ মিনিটের এ সিনেমার নির্মাতা মারিয়া কনচিটা দিয়াজ। বেলা ৩টায় থাকছে গ্রিসের ‘৪০০ ক্যাসেটস’। ১৫ মিনিটের এ সিনেমা নির্মাণ করেছেন থেলিয়া পেট্রাকি। এরপর প্রদর্শিত হবে রাশিয়ার সিনেমা ‘প্রিসেলেক’ ছবির ইংরেজি নাম ‘দ্য এলিয়েন’। ৭৪ মিনিটের এ সিনেমা নির্মাণ করেছেন ইভান সোসনিন। বিকেল ৫টায় দেখানো হবে মালয়েশিয়ার ‘ইন্দিরা’। ১০৫ মিনিটের এ সিনেমা নির্মাণ করেছেন উ মিং জিন। সন্ধ্যা ৭টায় দেখানো হবে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের প্রযোজনায় নির্মিত ‘হয়ার দ্য কিডস হ্যাভ নো নেম’। ৫২ মিনিটের এ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন জামিল্লাহ ফন দার হুলস্ট।
জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমি সকাল সাড়ে ১০টায় দেখানো হবে চীনের ‘নি হাও, লি হুয়ানিং’। ছবির ইংরেজি নাম ‘হাই মম’। ১২৮ মিনিটের এ সিনেমার পরিচালক জিয়া লিং। দুপুর ১টায় প্রদর্শিত হবে ‘মাম্মালিয়া’। জার্মানি, পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার প্রযোজনায় ৮৯ মিনিটের এ সিনেমাটি বানিয়েছেন সেবাস্তিয়ান মিহাইলেস্কু। বেলা সাড়ে ৩টায় দেখানো হবে চীনের ‘চেং চুয়ান এর কু’। ছবির ইংরেজি নাম ‘গন উইথ দ্য বোট’। ১০০ মিনিটের এ সিনেমা নির্মাণ করেছেন চেন জিয়াওয়ু। বেলা সাড়ে ৫টায় থাকছে বাংলাদেশের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘ফাউল’, ‘লস্ট আওয়ার’, ‘ফরগেট মি নট’, ‘অস্পৃশ্য’, ‘রোশার কুটুম’, ‘চোরা পথের শেষে’, ‘ইন বিসফুল হেল’, ‘দ্য টেস্ট অব হানি’, ‘গাল্লি কথন’ এবং ‘দ্য মোমেন্ট উই ওন টু’।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা সকাল সাড়ে ১০টায় থাকছে কিরগিজস্তানের ‘কাচকিন’। ১০০ মিনিটের এ সিনেমার পরিচালক দাস্তান ঝাপার রিস্কেলদি। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে থাকছে উজবেকিস্তানের ‘যক্ষনবা’ ছবির ইংরেজি নাম ‘সানডে’। ৯৭ মিনিটের এ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন শোকির খুলিকভ। বিকেল সাড়ে ৪টায় থাকছে চীনের ‘ম্যান কিয়ান বাও দি’। ১০৯ মিনিটের এ সিনেমার পরিচালক হাওফেং জু, জুনফেং জু।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে।
এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র্যান্ডেল।
এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব।
১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”
চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”
গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”
ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”
ঢাকা/তারিকুল/এস