ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলমান। আবহাওয়া বার্তা অনুযায়ী ঢাকায় বাড়তে পারে শীতের দাপট। এখন শহরে হালকা শীত বিদ্যমান। এ সময়টায় আরামের জন্য বেছে নিতে পারেন ডেনিমের জ্যাকেট, শার্ট ইত্যাদি। ডেনিম শুধু আরামদায়ক ও টেকসই নয়, বরং এটি ফ্যাশনপ্রেমীর জন্য আদর্শও বটে। শীতের দিনে উষ্ণতা ও স্টাইল ধরে রাখতে ডেনিম হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ।
শীতে ডেনিম কেন বেছে নেবেন?
ডেনিম কাপড়ের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর ঘন এবং মজবুত বুনন, যা শীতকালে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে। এটি শীতল হাওয়া প্রতিরোধ করে এবং লেয়ারিংয়ের জন্যও বেশ ভালো। একদিকে ডেনিমের ক্ল্যাসিক লুক, অন্যদিকে আরামের নিশ্চয়তা– এ দুই গুণের সমন্বয়েই এটি সবার কাছে জনপ্রিয়। ডেনিমের আরেকটি সুবিধা হলো এটি প্রায় সব ধরনের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।
শীতকালে আমরা এমন পোশাক খুঁজি, যা একাধারে টেকসই, আরামদায়ক ও স্টাইলিশ। ডেনিম এ তিনটি বৈশিষ্ট্যই পূরণ করে। বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশনেবল পোশাক তৈরিতে ডেনিম কাপড় ব্যবহার করা হয়, যা ছেলেদের স্টাইল স্টেটমেন্টে নতুন মাত্রা যোগ করে।
প্রতিদিনের সঙ্গী ডেনিম জ্যাকেট
শীতে ছেলেদের পোশাকের তালিকায় ডেনিম জ্যাকেট প্রথম সারিতে থাকে। এটি স্টাইলিশ ও বহুমুখী, যা বিভিন্ন পোশাকের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যায়। ফ্ল্যানেল শার্ট বা টার্টলনেকের ওপর ডেনিম জ্যাকেট পরলে স্টাইলের পাশাপাশি উষ্ণতাও বজায় থাকে।
ডেনিম জ্যাকেটের আরেকটি ভালো দিক হলো, এটি কখনও ফ্যাশন থেকে পুরোনো হয় না। ক্ল্যাসিক ব্লু, ব্ল্যাক বা গ্রে রঙের জ্যাকেট সব সময়ই আভিজাত্যের ছাপ রাখে। জ্যাকেটের ভেতরে ফার বা উলের আস্তর থাকলে এটি শীতের ঠান্ডা মোকাবিলায় আরও উপকারী হয়।
ডেনিম জিন্স
ডেনিম জিন্স এমন একটি পোশাক, যা সারাবছর ব্যবহার করা যায়, তবে শীতকালে এটি বেশি কার্যকর। মজবুত এবং আরামদায়ক হওয়ায় এটি লম্বা সময় ধরে পরার জন্য উপযুক্ত। ডার্ক ব্লু বা ব্ল্যাক ডেনিম জিন্স শীতের ফ্যাশনে একটি স্মার্ট এবং পরিপাটি লুক নিয়ে আসে। শীতের সকালে বা সন্ধ্যায় হালকা কোট বা সোয়েটারের সঙ্গে ডেনিম জিন্স বেশ মানানসই। এটি শুধু আরামই দেয় না, বরং আধুনিকতার পরিচায়কও। শীতের ছুটিতে বা ভ্রমণে ডেনিম জিন্স সবসময় সঙ্গী হতে পারে।
লেয়ারিংয়ে ডেনিম
শীতকালে লেয়ারিং একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। ডেনিম শার্ট বা জ্যাকেট ব্যবহার করে আপনি সহজেই একটি স্টাইলিশ লেয়ারিং লুক তৈরি করতে পারেন। একটি সাদা টি-শার্টের ওপর একটি ডেনিম জ্যাকেট– এই কম্বিনেশন আপনাকে দারুণ লুক এনে দেবে। আরেকটি হচ্ছে, একটি সাদা টি-শার্টের ওপর ডেনিম শার্ট এবং তার সঙ্গে একটি ওভারকোট– এই কম্বিনেশনটি আপনাকে উষ্ণতার পাশাপাশি আধুনিক লুক দেবে। ডেনিম শার্ট একা পরেও খুব সুন্দর লাগে। হালকা শীতের দিনের জন্য ডেনিম শার্ট একটি আদর্শ পছন্দ।
আনুষঙ্গিক ডেনিম
ডেনিম শুধু জ্যাকেট বা জিন্সেই সীমাবদ্ধ নয়। শীতের ফ্যাশনে ডেনিমের ক্যাপ, স্নিকার, বা ব্যাগও বিশেষ ভূমিকা রাখে। এগুলো আপনার পুরো লুককে আরও স্টাইলিশ করে তুলতে পারে। ডেনিমের ক্যাপ বা হুডি আপনার মাথাকে ঠান্ডা থেকে সুরক্ষিত রাখবে এবং একই সঙ্গে আপনার স্টাইলকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
ডেনিমের সঠিক ব্যবহার
ডেনিম একটি টেকসই এবং বহুমুখী কাপড় হলেও, এর সঠিক ব্যবহার এবং যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
• শীতকালে ঘন ঘন ধোয়ার প্রয়োজন নেই। এতে কাপড়ের গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে।
• ডেনিম ধোয়ার সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন এবং সূর্যের সরাসরি আলো থেকে দূরে শুকাতে দিন।
• ডেনিম জ্যাকেট বা জিন্স ব্যবহারের পরে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন।
• ডেনিমের স্থায়িত্ব বাড়াতে বিশেষ ধরনের ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন। v
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল, ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা
ইসরায়েলের জেরুজালেম শহরের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ দাবানল। শুষ্ক আবহাওয়ায় তীব্র বাতাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা। এমন পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। খবর সিএনএন, টাইমস অব ইসরায়েল, বিবিসি, আল জাজিরার
দাবানল নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে ইসরায়েল। দাবানলে এ পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। তবে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
দাবানলকবলিত কয়েকটি এলাকার মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেছেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি।’
জেরুজালেমের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কমান্ডার শমুলিক ফ্রিডম্যান বলেন, ইসরায়েলের ইতিহাসে এটি সম্ভবত সবচেয়ে বড় দাবানল। সতর্ক করে তিনি বলেন, কিছু সময়ের মধ্যে ঘণ্টায় ৬০ মাইলের বেশি গতিতে বাতাস বইতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।
এই দাবানলের কারণে বুধবার ইসরায়েলের মেমোরিয়া ডেতে তেল আবিব ও জেরুজালেমের মধ্যে সংযোগকারী প্রধান সড়ক ‘রুট-১’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘন ধোঁয়ার মধ্যে মানুষ সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
কয়েক ঘণ্টা পরে জরুরি সেবাকর্মীরা মহাসড়কে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সারি সারি গাড়ি তল্লাশি করে দেখছিলেন, ওই সব গাড়ির মধ্যে কেউ আটকে আছেন কি না।
অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কমান্ডার শমুলিক ফ্রিডম্যান বলেন, আমরা এখনো জানি না, কী কারণে আগুন লেগেছে। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো সূত্রও খুঁজে পাইনি। এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
ইসরায়েলি পুলিশ বলেছে, তারা সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই ব্যক্তি একটি খোলা মাঠে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি পুলিশ দাবি করেছে, জেরুজালেমের পুলিশ কর্মকর্তারা পূর্ব জেরুজালেমের একজন বাসিন্দাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছে। ওই ব্যক্তি তখন শহরের দক্ষিণ প্রান্তের একটি খোলা মাঠে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিলেন। তার কাছ থেকে একটি লাইটার, তুলা ও অন্যান্য দাহ্য পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
ইসরায়েলি পুলিশের দাবি, ৫০ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি পূর্ব জেরুজালেমের উম তুবা এলাকার বাসিন্দা। উম তুবা এলাকায় আরব ফিলিস্তিনিরা বসবাস করে থাকে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদন সার দাবানল মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, এমন ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি তাদের কাছ থেকে উড়োজাহাজের সহায়তা চেয়েছেন। ইতালি ও মেসিডোনিয়া থেকে তিনটি উড়োজাহাজ শিগগিরই ইসরায়েলে পৌঁছাবে বলে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাবানল ছড়িয়ে পড়া এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেন, ‘আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি। জীবন বাঁচাতে এবং দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে সব বাহিনীকে সক্রিয় করতে হবে।’
ইসরায়েলের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস জানিয়েছে, প্রায় ১২০টি দল এবং ১২টি অগ্নিনির্বাপণ বিমান ও হেলিকপ্টার দাবানল মোকাবিলায় কাজ করছে।
শামির মেডিকেল সেন্টার ও কপলান মেডিকেল সেন্টারের তথ্যমতে, দাবানলের কারণে অন্তত ডজন খানেক মানুষকে এই দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে জেরুজালেমের উপকণ্ঠে অবস্থিত হাদাসা মেডিকেল সেন্টারের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া’ কেউ যেন হাসপাতালে না আসেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও যাদের অবস্থা গুরুতর নয়, তাদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দাবানলে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে যে এলাকায় দাবানল দেখা দিয়েছিল, এবারও দাবানল প্রায় একই জায়গায় ছড়িয়েছে।