এডিপি বাস্তবায়ন কমেছে ১২ হাজার কোটি টাকা
Published: 14th, January 2025 GMT
অতিমারি করোনার অভিঘাতের পর থেকে সরকারের সব ধরনের ব্যয়ে সাশ্রয়ী নীতি নেওয়া হয়। এ কারণে প্রায় তিন বছর ধরেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তেমন গতি নেই। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প পর্যালোচনা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রকল্প বাদ দেওয়া হচ্ছে। আবার কিছু প্রকল্পের পরিচালক পালিয়ে গেছেন। সরকার পতনের আন্দোলনে অবরোধসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ বন্ধ ছিল।
এমন বাস্তবতায় জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে এডিপির বাস্তবায়ন এক রকম স্থবির হয়ে পড়ে। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বিভিন্ন ব্যয় কম হয়েছে ১১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। অবশ্য একক মাসের হিসাবে গত ডিসেম্বরে আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ব্যয় ৯০৬ কোটি টাকা বেশি হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এ-সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, গত ছয় মাসে এডিপির বিভিন্ন প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার ২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয়ের এ পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে বাস্তবায়নের হার ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, গত ছয় মাসের বাস্তবায়নের হার গত ৫ অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। একক মাসের হিসাবে সমাপ্ত ডিসেম্বরে ব্যয় হয় ১৫ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। গত বছরের একই মাসে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। বাস্তবানের হার ৫ দশমিক ৪২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের এডিপিতে ১ হাজার ৩২৭টি প্রকল্প, ১৭টি উপপ্রকল্প ও উন্নয়ন সহায়তা থোক হিসাবে ৯টি প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পের বিপরীতে মূল এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ ১৩ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রকৃত এডিপির আকার ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, বাস্তবায়নে ধীরগতি, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দেওয়া ইত্যাদি কারণে সংশোধিত এডিপিতে ৪৯ হাজার কোটি টাকা ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। অর্থাৎ এডিপির আকার দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা।
আইএমইডির প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ছয় মাসে বিদেশি ঋণ সহায়তা অংশে খরচের খাতা খুলতে পারেনি তিনটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। তারা হচ্ছে– গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং জননিরাপত্তা বিভাগ। এর বাইরে অন্তত ১১টি মন্ত্রণালয় রয়েছে, যাদের গত ছয় মাসে বিদেশি ঋণের উৎসের ব্যয়ের পরিমাণ ৮ শতাংশের মধ্যে সীমিত রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প র র পর ম ণ র একই দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল