যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। টিউলিপকে একটি চিঠিও লিখেছেন তিনি। 

চিঠিতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে কিয়ার স্টারমার বলেছেন,  ‘আপনার (টিউলিপ) জন্য দরজা খোলা আছে।’ খবর বিবিসির। 

টিউলিপকে কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘আমি আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি। আমি স্পষ্ট করছি যে একজন স্বাধীন উপদেষ্টা (ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) হিসেবে লাউরি ম্যাগনাস আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি আপনার দিক থেকে মন্ত্রিত্বের বিধির (মিনিস্ট্রিয়াল কোড) কোনো লঙ্ঘন পাননি এবং কোনো আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাননি।’

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য লাউরি ম্যাগনাসের প্রতি আহ্বান জানানোয় টিউলিপ সিদ্দিককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিয়ার স্টারমার। বলেন, ‘ব্রিটেনকে বদলে দেওয়ার যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি, সেখান থেকে আমাদের মনোযোগ ব্যাহত করার চলমান যে ঘটনাপ্রবাহ, তার সমাপ্তি টানার জন্য আমি আপনার প্রশংসা করছি। আপনি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি স্পষ্ট করতে চাই যে সামনের দিনগুলোতে আপনার জন্য দরজা খোলা আছে।’ 

বহুমাত্রিক অনিয়ম-দুর্নীতি আর আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগের মুখে মঙ্গলবার মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ। টিউলিপের খালা ও বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। 

টিউলিপ দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই মন্ত্রী। বিশেষ করে কয়েক সপ্তাহ ধরে টিউলিপ ইস্যুতে সরগরম  প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ডাউনিং স্ট্রিট। আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় আলোচনা ভিন্নমাত্রা পেয়েছিল। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে কয়েকজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকাও তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। 

যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ওপর চাপ বাড়ছিল। মন্ত্রিসভা থেকে তাঁকে বরখাস্ত করতে স্টারমারকে চাপ দিচ্ছিলেন বিরোধীরা। সর্বশেষ গতকালও দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনের জোট ‘ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন’ তাঁকে পদত্যাগের আহ্বান জানায়। তবে ৪২ বছর বয়সী এ মন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। দুই মাসের মধ্যে সরকারের দ্বিতীয় মন্ত্রীর পদত্যাগ স্টারমারের জন্যও একটি ধাক্কা। গত সপ্তাহেও তিনি টিউলিপের ওপর পূর্ণ আস্থা থাকার কথা জানিয়েছিলেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদত য গ র জন য আর থ ক আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়। 

হাইওয়ে পুলিশ  জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। 

সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে। 

ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল। 

নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না। 

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। 

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ