‘নীল দূতাবাসে’ রানী মৌমাছিদের গল্প
Published: 16th, January 2025 GMT
‘পকেটভর্তি মেঘে’র কবি জাহিদুল হক। অল্প বয়সে রেডিওর চাকরিতে ঢুকে যান, সেই সুবাদে সাহিত্য-সাংস্কৃতিক জগতের মানুষদের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ছিল। প্রথম কবিতার বইটির ব্লার্ব শামসুর রাহমানকে দিয়ে লেখাবেন পণ করেছিলেন। শামসুর রাহমান আর লিখে দেন না। বইটির প্রকাশনা এক বছর পিছিয়ে গিয়েছিল। আশকারা পাওয়ার আনন্দের কাছে এই বিপর্যয় কিছুই না। তাঁকে আরও কম বয়সেই আশকারা দিতেন সিকান্দার আবু জাফর, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী–কে নন? জাহিদ ভাই একদিন বলছিলেন, “আমরা বলি কবি শামসুর রাহমান; কিন্তু ওরা বলে মিস্টার এলিয়ট। আমরা কবির নামের আগে ‘কবি’ না বসালে আহত হই।” আমিও এই শিক্ষাটা নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে সেদিনের পূর্বদেশ পত্রিকায় একমাত্র যে কবিতাটি ছাপা হয়েছিল, সেটি জাহিদুল হকের। তার ৫২ বছর পর আরেক শীতার্ত জানুয়ারিতে জাহিদ ভাই চলে গেলেন।
১৯৭৩ সালে পিকাসো মারা যাওয়ার পর বিচিত্রার শাহাদত চৌধুরী দেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও চিত্র সমালোচকদের কাছে না গিয়ে পিকাসোর অবিচুয়ারি লেখার জন্য নিজেই তরুণ কবি জাহিদুল হকের বাংলাদেশ বেতারের অফিসে গিয়েছিলেন।
আজ তাঁর জন্য স্মৃতিকথা লেখার পালা। আমার দ্বারা হবে না, আমি লাস্ট বেঞ্চি। আমি ভাগ্যবান যে তাঁর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল, দেখা হয়েছিল। সেদিন তাঁর বসার ঘরে শাহাবুদ্দিনের একটি অপরিচিত পেইন্টিং ঝুলছিল।
পিকাসোকে নিয়ে আয়োজিত বিচিত্রার সেই সংখ্যাটি তাঁর কাছে ছিল না। আমি একজনকে বারবার বিরক্ত করে একটা স্ক্যানকপি উদ্ধার করে জাহিদ ভাইকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেই লেখায় লেখকের কোনো নাম ছাপা হয়নি। তিনি বলেছিলেন, এতদিন পরে নিজের গদ্য বলে শনাক্ত করা যাচ্ছে না; কাজেই আমি এর স্বত্ব দাবি করি কী করে? তাঁর আরও দুটো ইচ্ছা জীবিতাবস্থায় পূরণ করতে পারলে শান্তি পেতাম, যার একটি হচ্ছে জাহিদ ভাইয়ের কবিতাসংগ্রহ নিয়ে একটি আলোচনা করা। তাঁর ধারণা ছিল, আমি তাঁর কবিতা ভালো বুঝতে পারি, তাই আমার আলোচনাটি পড়তে চাইতেন।
আমি জাহিদুল হকের কবিতার বিশেষ ভক্ত। চুরাশি সালে প্রথম তাঁর কবিতা পড়ি। তাঁর কিছু কবিতা আমার মুখস্থ হয়ে যায়। ‘ঝিনুক নীরবে সহো’ লেখার সময় আবুল হাসান ও সুরাইয়া খানমের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা, তাঁর ইউরোপমনস্কতা আর বিশেষভাবে জার্মান রেডিওতে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতার কথা মনে রেখে তাঁকে স্মরণ করি এবং তাঁর শরণ নিই। পৃথিবীতে হাসানের শেষ দৃশ্যেও তিনি সুরাইয়ার সঙ্গে হাসানের পাশে ছিলেন। সুরাইয়া খানমের মৃত্যু নিয়েও তাঁর কবিতা আছে। কবিতাটির নাম ‘টুসান’–আরিজোনার যে শহরে সুরাইয়া ছিলেন। জাহিদ ভাই ছিলেন আবুল হাসানের সুহৃদ; তিনি সুরাইয়া খানমের ছোট বোন রক্তকরবী নাটকের নন্দিনী খ্যাত দিলশাদ খানমেরও বন্ধু। তারপর সুরাইয়া খানমও তাঁর বন্ধু হন। সুরাইয়া খানমের একটি চিরকুটে জাহিদ ভাইয়ের বোন লিলি আর মণির কুশল জিজ্ঞাসা দেখতে পেয়েছি, অনেক গল্প করতেন তাঁর মায়ের সঙ্গে রান্নাঘরে বসে বসে। অর্থাৎ সুরাইয়া খানম তাঁর পারিবারিক বন্ধুও হয়ে যান। হাসান ও সুরাইয়া–দু’জনের জীবনেই এই প্রচার-বিব্রত জাহিদুল হকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে।
বাংলা কবিতায় তিনি বিশেষ একজন; গানকে কবিতার কাছাকাছি আনার জন্য জীবনব্যাপী কাজ করে গেছেন, কথ্যকে বেঁধেছেন ছন্দে, পরিমিতিবোধ অনন্য তাঁর–অতিকথন নেই আর আছে অদ্ভুত রকমের সব ইলিউশনের ছড়াছড়ি–ভালো পাঠক না হলে যার রস আস্বাদন করা সম্ভব না।
আমি ‘ঝিনুক’ লিখতে শুরু করেছি জানবার পর জাহিদ ভাই আমাকে অনেকবার ফোন করেছেন, বেশির ভাগই নিজে থেকে, আমাকে এই বইয়ের জন্য রসদ দিয়েছেন তো বটেই, বিভিন্ন আলাপে আমার সাহিত্যবোধকেও সমৃদ্ধ করেছেন। ‘ঝিনুক নীরবে সহো’-তে দিওতিমা, সলোমে, মাদাম সামতিয়ের গল্প আছে। এই গল্পগুলো মক্ষীরানী বোঝানোর জন্য জাহিদুল হক আমাকে বলেছিলেন। একদিন নিজের কবিতা ফোনে শোনালেন,
‘ভালোবাসি দুঃখজনক তোমার গালের তিলকে,
সলোমেকে যেমন ভালোবেসেছিলেন রিলকে!’
শিল্প-সাহিত্যের ইতিহাসে কবি-শিল্পীদের একজন মক্ষীরানী থাকার দৃষ্টান্ত আছে। জাহিদ ভাই কী বলতে চেয়েছিলেন জানি না; আমি এই মক্ষীরানীর উপমাটি সুরাইয়া খানমের ক্ষেত্রে ব্যবহার করলাম। জাহিদ ভাইয়ের শিল্পের ইতিহাসের গল্পগুলো বার্লিনে হাসানের বিদায় ভোজের আগে তাঁর দুই জার্মান শিল্পী বন্ধুর মুখে সংলাপ হিসেবে বসিয়ে দিলাম। টেলিফোনে শুনে দিওতিমাকে নিওটিমা লিখেছিলাম। দ্বিতীয় সংস্করণে সে ভুল শুধরে নিয়েছিলাম।
ল্যু আন্দ্রিয়াস সলোমে মূলত একজন মনোসমীক্ষক ছিলেন। নারী স্বাধীনতার প্রতীক। দার্শনিক ফ্রেডরিক নিৎসে, ডাক্তার সিগমুন্ড ফ্রয়েড, কবি রাইনার মারিয়া রিলকে, বহু ভাষাবিদ অধ্যাপক কার্ল অ্যান্ড্রিয়াস, দার্শনিক পল রি–এঁরা সবাই তাঁর সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন, অনুপ্রাণিত হয়েছেন। মাদাম সামতিয়ে প্রেরণা দিয়েছেন বোদলেয়ার, নের্ভাল ও গতিয়েকে (নের্ভালের নামে জাহিদ ভাইয়ের একটি কবিতার বই আছে)। দিওতিমা প্রেরণা ছিলেন হোল্ডারলিনের। ফ্রিডা কাহলো প্রেরণা দিয়েছেন ট্রটস্কিকে। আমি পরে এই রানী মৌমাছিদের জীবনকাহিনি পড়ি; কোনোটা কৌতূহলোদ্দীপক, কোনোটা ট্র্যাজেডিতে ভরা। সলোমে, নিৎসে আর কার্লকে নিয়ে একটা সিনেমা হয়েছে; সেই পোস্টারের ছবি আর ট্রেলার দেখে আমার কৌতূহল আরও বেড়ে গেছে। এই তিনজনের সঙ্গে জিব্রানের মক্ষীরানীকেও যুক্ত করে দিই। কাহিনির উপসংহারে এসে জার্মান বন্ধুরা যখন হাসানের কাছে বাংলাদেশের মক্ষীরানীর কথা জানতে চাইছিল, তখন হাসানের কল্পনায় সুরাইয়ার মুখটা ভেসে আসে, এমনটা লিখেছিলাম। হাসানের মৃত্যুর পর ’৭৬ থেকে ’৮২ পর্যন্ত বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে সুরাইয়ার অবস্থান তুঙ্গে ওঠে, তিনি তখন মক্ষীরানী হয়ে উঠেছিলেন বললে ভুল হবে না।
জাহিদ ভাইয়ের গল্প শুনে বিচিত্রা অফিসের শাহাদত চৌধুরীর সঙ্গে সুরাইয়ার ঘটনা (যার সূত্র পেয়েছিলাম আহমদ ছফার লেখায়), পূর্বাণী পত্রিকা অফিসে গিয়ে এক লেখককে চেয়ার তুলে পেটানোর ঘটনা, রেডিও অফিসে আড্ডার ঘটনা ইত্যাদি লিখি। বইতে আবুল হাসানের সঙ্গে জাহিদুল হকের অনেক ঘটনা আছে–রেডিওতে কবিতা পড়া, আড্ডা দেওয়া, তাঁকে কবিতা উৎসর্গ করার পর আবার ঝগড়া করে হাসানের নিজের হাতেই ছিঁড়ে ফেলা, একসঙ্গে নিউমার্কেটে যাওয়া ইত্যাদি। কবিতা নিয়ে জাহিদ ভাই অনেক কথা বলেছেন আমাকে। সেসব কথার কোনোটি তাঁর মুখে, কোনোটি আবুল হাসানের মুখে বসিয়ে দিয়েছি।
নির্মলেন্দু গুণ জাহিদ ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। ১৯৭৬-৭৭ সালের প্রতিকূল সময়ে জাহিদ ভাই কাঁটাবন এলাকায় একটা ঝুপড়িতে লুকিয়ে বসবাস করতেন। সেই ডেরার খোঁজ পেয়ে নির্মলেন্দু গুণ নিজের আস্তানা মনে করে থাকতে শুরু করেন। এতে জাহিদ ভাইয়ের গোপনীয়তা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকলেও বন্ধুর জন্য দ্বার ছিল অবারিত।
সুরাইয়া খানম আমেরিকা থেকে অনেক দিন পরে ফিরেছেন। জাহিদ ভাইয়ের জন্য পারফিউম, স্যুয়েটার আর সিগারেট এনেছেন। কিন্তু কিছুতেই বাসা খুঁজে না পেয়ে শাহবাগে ত্রিদিব দস্তিদারকে পেয়ে তাঁর হাতে উপহারগুলো রেখে গিয়েছিলেন। যেদিন ত্রিদিবদার সঙ্গে জাহিদ ভাইয়ের দেখা হলো, ততদিনে তিনি সিগারেটগুলো ফুঁকে দিয়েছেন, স্যুয়েটারটা ব্যবহার করছেন, শুধু পারফিউমটা তাঁর হাতে দিলেন, আর ক্ষমা চাইলেন। সৌরভের বিনিময়ে ত্রিদিবদা ক্ষমা পেয়ে গেলেন! সুরাইয়া খানমের মৃত্যুর খবর পেয়ে জাহিদ ভাই একটি কবিতা লিখেছিলেন ‘টুসান’ নামে।
আরেকটি কথা বলেছিলেন, ‘আই অলওয়েজ লাভ টু লুজ।’ কথাটা শুনে চমকে গেলাম। ভাবলাম, আর আমি? –আমি হারিয়ে ফেলি কিন্তু হারিয়ে ফেলতে পছন্দ করি না। আমি হেরে যাই কিন্তু হেরে যেতে ভালোবাসি না। অবশ্য জিতে গেলেও বিষণ্ন হই!
‘এক যুগ কেটে গেছে অপচয়ে,
সঞ্চয়ে শুধু তোমার মুখটি ছাড়া
কিছু নেই, কিছু নেই!’
(জাহিদুল হক)
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি
প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেনকে ফেসবুকে হুমকি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মুখ্য সংগঠক মোত্তাসিন বিশ্বাস। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এ হুমকি দেন তিনি।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আনোয়ার হোসেন।
ফেসবুক পোস্টে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের দুটি ছবি লাল দাগ দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেন মোত্তাসিন। ক্যাপশনে তিনি আনোয়ার হোসেনের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘....সত্য লিখুন, না হলে আপনিও ছাড় পাবেন না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’
মোত্তাসিন বিশ্বাসের পোস্টের পর মন্তব্যের ঘরে আনোয়ার হোসেনকে একাধিক আইডি থেকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে আজ বুধবার বেলা ৩টা ১৬ মিনিটে মোত্তাসিনের আইডি থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি তাঁর ওয়ালে আবার দেখা যায়। এ হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ’।
ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মোত্তাসিন বিশ্বাস আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুক পোস্টে হলুদ কথাটা লেখা ঠিক হয়নি। এটি গত শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধী সমাবেশে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দেন জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। এ নিয়ে প্রথম আলোয় ‘পুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ খবরের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েই এমন পোস্ট করেছেন বলে জানিয়েছেন মোত্তাসিন।
তাৎক্ষণিকভাবে লিখে ফেলেছিলেন, পরে মুছে দিয়েছেন। আনোয়ার হোসেনের করা কোন সংবাদটির বিষয়ে পোস্ট করেছেন, জানতে চাইলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাকে বাধা দেওয়ার সংবাদটির কথা জানান।
মোত্তাসিন বিশ্বাস আরও বলেন, প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন চব্বিশের আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু সংবাদটি এভাবে কেন লিখেছেন, তা জানার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁদের এড়িয়ে গেছেন। সে জন্যই তিনি ফেসবুকে লিখেছেন।
আনোয়ার হোসেন জিডিতে উল্লেখ করেছেন, স্ট্যাটাসে তাঁর দুটি ছবি ক্রস চিহ্ন দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই পোস্টে মোত্তাসিনের অনুসারীসহ আরও অনেকে খারাপ মন্তব্য করে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় জিডি করার কথা জানান তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এটি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে দিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক আবদুর রাহিম বলেন, এই পোস্ট দেওয়ার পর রাতে তাঁরা এটি নিয়ে সভা করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পোস্টটি ডিলিট করা হবে।
আরও পড়ুনপুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা২৭ এপ্রিল ২০২৫সাংবাদিক সমাজের নিন্দা-প্রতিবাদআনোয়ার হোসেনকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জরুরি সভা করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ। বিষয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের লিখিতভাবে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গতকাল মঙ্গলবারের সভায়। অবহিত করার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যাবতীয় সংবাদ বর্জন করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিজেএ) সভাপতি রফিকুল আলম। উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিটিজেএর নেতা ও সদস্যরা।
সভার পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পরিবর্তিত বাংলাদেশে একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে আপত্তিজনক ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেসব অধিকারের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বাক্স্বাধীনতার অধিকার। একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে ফেসবুকে এমন পোস্ট সেই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হস্তক্ষেপ, যা আমাদের উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করেছে।’ অবিলম্বে মোত্তাসিন বিশ্বাস তাঁর দেওয়া পোস্টটি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ না করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।