চাঁদপুরে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের নির্বাচন বর্জন
Published: 17th, January 2025 GMT
উৎসাহ উদ্দিপনা নিয়ে মাঠে থাকার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিদ্যমান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের পক্ষে এর যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “১৬ জানুয়ারিতেই আমরা নির্বাচন বর্জন করি।”
এদিকে আগামী ২৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ‘চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ২০২৫’ এর নির্বাচনের দিন ধার্য হয়েছে। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিল ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ছিলো এবং বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে মনোনয়নপত্র বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।
আপত্তি দাখিল ও শুনানী ১৯ জানুয়ারি রোববার বিকেল ৩টা থেকে সোয়া ৩টা পর্যন্ত হবে। একই দিন বিকেল ৪টায় মনোনয়নপ্রত প্রত্যাহারের দিন ধার্য করা হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট এএনএম মাঈনুল ইসলাম। সহকারী নির্বাচনের দায়িত্বে সমিতির জুনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহজাহান আখন্দ ও যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো.
রিটানিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. বদরুল আলম চৌধুরী।
নির্বাচন উপলক্ষে ইতিমধ্যে বিএনপি সমমনা আইনজীবী ঐক্য প্যানেল মনোনীত বাবর-জসিম মেহেদী ও আতিক পরিষদের প্রাথীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তারা গতকাল বৃহস্পতিবার পুরো প্যানেল মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে।
বিএনপি ও সমমনা মনোনীত আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বাবর বেপারী, সিনিয়ির সহসভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মঞ্জুর আলম চৌধুরী, জুনিয়র সহসভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মো. ফরিদ আহম্মদ মিয়া (রিপন), সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন (মেহেদী হাসান), যুগ্ম সম্পাদক পদে মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, সম্পাদক ফরসম পদে অ্যাডভোকেট মো. কামাল হোসেন, সম্পাদক লাইব্রেরি পদে অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের খান, সম্পাদক সমাজ কল্যাণ ও সেমিনার পদে অ্যাডভোকেট শাহাদাত সরকার শাওন, জেনারেল অডিটর পদে মো. কামাল হোসেন পাটওয়ারী, রানিং অডিটর পদে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মুসলিম মিয়াজী, চেয়ারম্যান রেজিস্ট্রারিং অথরিটি পদে অ্যাডভোকেট মো. সানজিদ হাসান (সানি), সম্পাদক রেজিস্ট্রারিং অথরিটি পদে অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন ফাহাদ, সদস্য রেজিস্ট্রারিং অথরিটি পদে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান প্রধান, অ্যাডভোকেট তানজীর আহমেদ (মামুন) ও অ্যাডভোকেট আবদুল কাদের জিলানী (মিল্টন)।
ঢাকা/অমরেশ/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।