সামনেই বিয়ে? ত্বকের যত্নে যা যা করতে পারেন
Published: 18th, January 2025 GMT
শীতকালকে অনেকে বিয়ের মৌসুম বলে থাকেন। এই মৌসুমে যারা বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন তাদের জন্য শুভকামনা। হবু কনেরা ত্বকের যত্নে একটু বেশিই মনোযোগী হন। রূপচর্চাবিদরা বলেন, ত্বকের যত্নে ক্লিনজার, টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার নিয়ম মেনে ব্যবহার করা ভালো। এজন্য ফেসওয়াশ দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে তারপর টোনার স্প্রে করে নিতে হয়। শেষে মুখে টোনার শুকিয়ে এলে তার উপর মেখে নিতে হয় ময়েশ্চারাইজার। কিন্তু চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্বকে টোনারের খুব একটা ভূমিকা নেই। বরং টোনারের বদলে দিনের বেলা সানস্ক্রিন মেখে নিন। আর রাতে ব্যবহার করুন সিরাম। তাতে ত্বকের ক্ষত নিরাময় হবে। আবার আর্দ্রতাও বজায় থাকবে।
ভারতীয় চর্মরোগ চিকিৎসক সুরজিৎ গরাইয়ের পরামর্শ—
ভিটামিন ই এবং সি-যুক্ত খাবার খেতে হবে: ত্বক ভেতর থেকে ভালো রাখার জন্য খাবারের ভূমিকা অনেক বেশি। ত্বকের যত্নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি ভিটামিন হলো ভিটামিন ই এবং সি। শরীরে এই দুইটি ভিটামিনের অভাব যেন না হয়। ত্বকের জেল্লা ধরে রাখার পাশাপাশি কোলাজেন উৎপাদনেও সাহায্য করে ভিটামিন সি। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে ভিটামিন ই-এর ভূমিকাও কম নয়।
সঠিক ভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে: শুধু মুখের যত্ন নয়, সারা শরীরেরই যত্ন নিন। গোসলের সময়ে এক্সফোলিয়েশন করুন। এরপরে ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন। ত্বক মশৃণ রাখতে বডি মাস্ক ব্যবহার করুন মাঝেমধ্যে। এতে ত্বক মসৃণ থাকবে।
আরো পড়ুন:
পনেরো দিন মেকআপ ব্যবহার না করলে ত্বকে যা ঘটে
আজ ‘স্পাইসি ফুড’ খাওয়ার দিন
খাবারে প্রোটিনের অভাব যেন না হয়:ত্বক সতেজ রাখার জন্য প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন। যাতে ত্বকের নিজস্ব প্রোটিন, অর্থাৎ কোলাজেন এবং ইলাস্টিন উৎপাদনের পরিমাণ ঠিক থাকে। এজন্য ডায়েটে মাছ, মাংস বা ডিম থাকা আবশ্যক।
ভেষজ উপাদানে ত্বকচর্চা: ত্বকের যত্নে কেমিকেল প্রোডাক্টের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন কোম্পানির ফেসপ্যাক, ফেসওয়াশ, ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে হলুদ, কেশর, মুলতানি মাটির মতো নানা প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপাদানে তৈরি।
আর্দ্রতা বজায় রাখা: শরীরে আর্দ্রতা বজায় রাখা জরুরি। যাতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে খেয়াল করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। এবং ত্বকে প্যারাবেন-মুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।