আমরা রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে চাই না: সিইসি
Published: 19th, January 2025 GMT
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে চাই না। আইন, বিধি-বিধানের মধ্যে থাকব। এক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া টাইম ফ্রেমের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি বলেছে, জুনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন সম্ভব, এ বিষয়ে কমিশনের ভাবনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “আমরা রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে চাই না। আইন-কানুন ও বিধি-বিধানের মধ্যে থাকব। আমরা ফ্রি, ফেয়ার গেম উপহার দিতে চাই, যেখানে সব প্লেয়ার অবাধে খেলতে পারে। আমরা এজন্য একটি মাঠ তৈরি করতে চাই। এজন্য প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া টাইম ফ্রেমের মধ্যে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
সংস্কার আংশিক হলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে, আর সংস্কার পুরোদমে হলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপির সহায়তা হিসেবে ল্যাপটপ, স্ক্যানার, ক্যামেরাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নেন করেন সিইসি।
এ নিয়ে তিনি বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার ইউএনডিপি। তারা ডিসেম্বরে আমার সঙ্গে দেখা করলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য বলেছিলাম। এত দ্রুত তারা উপকরণ দিয়ে সহায়তা করায় আমি অভিভূত। ল্যাপটপ, স্ক্যানার ও ক্যামেরা দিয়ে তারা সহায়তা করল, যা আজ শুরু হলো। আশা করি, সামনের জাতীয় নির্বাচনেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তা করবে।”
সিইসি বলেন, “ভোটার তালিকা হালনাগাদ ২০ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে। তাই আজ কয়েকশ ল্যাপটপ, স্ক্যানার ও ক্যামেরা ইউএনডিপি দিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও আসবে। পুরো নিবন্ধন কার্যক্রমে তারা আশা করি সহায়তা দেবে। জাতীয় নির্বাচনে সহায়তার জন্য তাদের নিড অ্যাসেসমেন্ট টিম আসছে।”
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “ভোটার তালিকা নিয়ে সন্দেহ দূর করতে আমরা কাজ করছি। কাল থেকে মাঠে নামাচ্ছি। আশা করছি, সন্দেহ দূর হবে। আমরা ছয় মাসের মধ্যে হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ করার চেষ্টা করব। ভোটার প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। ৬৫ হাজার লোকবল কাজ করবে। সাভারে এর উদ্বোধন হবে।”
অনুষ্ঠানে ইউএনডিপির আবাসিক প্রধান স্টিফেন লিলার সিইসির কাছে ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০টি স্ক্যানার, চার হাজার ৩০০টি ব্যাগ হস্তান্তর করেন। তিনি বলেন, “এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।”
এ সময় অন্য নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম সফর করলেন তিন রাষ্ট্রদূতসহ ইউএনডিপির প্রতিনিধি
ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি আবাসিক প্রতিনিধি) ২৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করেন। সফরকালে তারা এই অঞ্চলের টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (১ মে) ইউএনডিপির ঢাকা কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলারের নেতৃত্বে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মোলার, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস রাঙামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময় করেন। এদের মাঝে ছিলেন আদিবাসী সম্প্রদায়, স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, নারী কমিটি এবং জুব সম্প্রদায়।
এই সফরে ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগ এবং নর্ডিক দেশগুলোর সহযোগিতায় পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর পরিদর্শন করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জলবায়ু সহিষ্ণুতা, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং জীবিকা উন্নয়নভিত্তিক প্রকল্পসমূহ।
“ডেনমার্ক পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউএনডিপির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে এবং এই অঞ্চলের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন দেখতে পেয়ে গর্বিত,” বলেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মোলার।
“যদিও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, তবে আমরা ইকো-টুরিজম এবং কৃষির মতো খাতে টেকসই উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি, যা এই অঞ্চলের মানুষকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। ডেনমার্ক জলবায়ু অভিযোজন, টেকসই কৃষি এবং আদিবাসী জনগণের অধিকার রক্ষায় একযোগে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সফরকালে তারা রাঙামাটি ও বান্দরবন জেলার কিছু গ্রাম পরিদর্শন করেন। যেখানে তারা নারী নেতৃত্বাধীন জলবায়ু সহিষ্ণুতা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন, সৌরশক্তি দ্বারা চালিত স্কুল পরিবহন ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন এবং কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মী এবং শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণ, বিশেষত মহিলাদেরকে নিজেদের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে দেখেছি যা অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক।”
তিনি আরো বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন, পানির সংকট এবং শিক্ষার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তাদের সংগ্রাম সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ে সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি যাদের প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ সেবা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের নিরাপদ এবং শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।”
প্রতিনিধিদলটি সংরক্ষিত বন এবং তার ফলে প্রাপ্ত সেবাগুলোও পরিদর্শন করেন।
“পার্বত্য চট্টগ্রামে চার দিন কাটানো এবং এখানকার মানুষের সাথে মিশতে পারাটা ছিল এক বিশেষ অভিজ্ঞতা,” বলেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস।
“এই অঞ্চলের জনগণ যেভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে এবং উন্নয়নের ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সুইডেন এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউএনডিপির সাথে দীর্ঘ সময় কাজ করতে পেরে গর্বিত, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, জলবায়ু সহনশীলতা ও জেন্ডার সমতার ইত্যাদি বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।”
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, “ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের এ যৌথ সফরটি, এই অঞ্চলে আমাদের অনেক দিনের একসাথে কাজ করার সুফল মনে করিয়ে দেয়।”
তিনি আরো বলেন, “নর্ডিক দেশগুলোর সহায়তায় গত ২০ বছর ধরে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নের উদ্দেশ্যে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে এই অঞ্চলের মানুষদের নিয়ে একযোগে কাজ করছি।”
ঢাকা/হাসান/সাইফ