উল্লাপাড়ার বড় কোয়ালিবেড় দাখিল মাদ্রাসায় এক বছরের বেশি সময় ধরে আয়া ও নৈশপ্রহরী ক্লাস নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে প্রতি ক্লাসে শিক্ষার্থী সংখ্যাও আবার হাতে গোনা। কোনো ক্লাসে তিনজন তো কোনো ক্লাসে সর্বোচ্চ দশজন। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। প্রশ্ন তোলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও। 

সরেজমিনে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, ইবতেদায়ী শাখায় তৃতীয় শ্রেণিতে ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে গণিত ক্লাস নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের আয়া রত্না খাতুন। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ক্লাস নিচ্ছিলেন প্রতিষ্ঠানের ক্বারী শিক্ষক আব্দুল ওয়াহাব। এই শ্রেণিতে শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল ২ জন। অন্যদিকে প্রথম শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়নি। 

তবে এই শ্রেণিতে মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী নাঈম হোসেন নিয়মিত ক্লাস নেন বলে জানান সহকারী সুপার ইব্রাহিম খলিল।  

তবে এই মাদ্রাসায় খাতা-কলমে ইবতেদায়ী শাখায় রয়েছে ১০০ জন শিক্ষার্থী এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে ২৭৬ জন। তবে সোমবার মাদ্রাসায় গিয়ে ইবতেদায়ী শাখায় পাওয়া যায় মোট ১০ জন শিক্ষার্থী এবং মাধ্যমিক শাখায় পাওয়া যায় ৪৩ শিক্ষার্থী। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইবতেদায়ী শাখার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের তৃতীয় শ্রেণিতে ক্লাস নেন রত্না খালা (রত্না খাতুন) এবং প্রথম শ্রেণিতে ক্লাশ নেন নৈশপ্রহরী নাঈম হোসেন। তারা দুজনই দুইটি করে ক্লাস নেন। রত্না খালা নেন গণিত ও বাংলা ক্লাস এবং নাঈম হোসেন নেন ইংরেজি ও গণিত। 

এ বিষয়ে মাদ্রাসার আয়া রত্না খাতুন ও নৈশি প্রহরী নাঈম হোসেন জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে তারা ইবতেদায়ী শাখায় ক্লাস নিয়ে আসছেন। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রকৃত দায়িত্বও তাদেরকে পালন করতে হচ্ছে। 

বড় কোয়ালিবেড় দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার ইব্রাহিম খলিল জানান, তাদের ইবতেদায়ী শাখায় মোট শিক্ষক সংখ্যা ৫ জন। সেখানে ৩ জন শিক্ষক দেড় বছর ধরে নেই। অপরদিকে মাধ্যমিক শাখায় শিক্ষক সংখ্যা ৯। এখানে শিক্ষক নেই ৩ জন। ফলে দুটি শাখা চালাতে হচ্ছে ৮ জন শিক্ষক দিয়ে। আর এই কারণে মাদ্রাসার আয়া ও নৈশ প্রহরী দিয়ে ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। 

ইব্রাহিম খলিল আরও জানান, তারা ইতোমধ্যে শিক্ষক চেয়ে একাধিকবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও কোন শিক্ষক দেওয়া হয়নি। তবে বছরের শুরুতে শীতের কারণে তাদের ছাত্র উপস্থিতি এমনিতেই কম থাকে। 

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম শামছুল হক সমকালকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট থাকতেই পারে। তবে শিক্ষক না থাকলে প্রতিষ্ঠানের আয়া বা নৈশপ্রহরী দিয়ে ক্লাস নেওয়ার কোন নিয়ম নেই। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে এই মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় ১২ জন শিক্ষার্থী অংশ নিলেও তাদের কেউ পাস করেননি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ জন শ ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ