Samakal:
2025-05-01@07:55:27 GMT

অনেক দিনের কাশি

Published: 20th, January 2025 GMT

অনেক দিনের কাশি

 শ্লেষ্মা, বাইরের বস্তু, জীবাণু, মিউকাস নিষ্ক্রান্ত হয়ে শ্বাসনালি ও  ফুসফুসকে পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখে। সুতরাং কাশি প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধের একটি প্রয়োজনীয় ক্রিয়া। এটি একটি রিফ্লেক্স ক্রিয়া; যার রিসেপ্টর থাকে শ্বাসনালিতে। অন্যদিকে, অতিরিক্ত কাশি বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবে ;বিবেচিত হতে পারে


ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় দু’ভাবেই আমরা কাশি দিয়ে থাকি। হঠাৎ ও সজোরে ফুসফুসের বাতাস সশব্দে বের হয় কাশির মাধ্যমে। শ্লেষ্মা, বাইরের বস্তু, জীবাণু ,মিউকাস নিষ্ক্রান্ত হয়ে শ্বাসনালি ও ফুসফুসকে পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখে। সুতরাং কাশি প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধের একটি প্রয়োজনীয় ক্রিয়া। এটি একটি রিফ্লেক্স ক্রিয়া; যার রিসেপ্টর থাকে শ্বাসনালিতে। অন্যদিকে, অতিরিক্ত কাশি বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। 
কাশির প্রকারভেদ
স্বল্পমেয়াদি কাশি: সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণ, জীবাণু সংক্রমণ-পরবর্তী কাশি, নিউমোনিয়ার কারণে হয়ে থাকে। সেটি মোটামুটি তিন থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। 
ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী কাশি: যদি প্রাপ্তবয়স্কদের আট সপ্তাহের বেশি আর শিশুদের চার সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাকে দীর্ঘস্থায়ী কাশি বলে। অনেক দিনের কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা, এটি ঘুমের ব্যাঘাত করে ও ক্লান্তি ভাব তৈরি করে। বুক ব্যথা, মাথা ঘোরা, প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, হার্নিয়া ও বুকের  পাঁজরের হাড় ভেঙে যাওয়ার মতো সমস্যা করতে পারে। দীর্ঘদিনের কাশি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কারণ, দীর্ঘস্থায়ী কাশির নানা কারণ রয়েছে। তার মধ্যে কিছু জটিল রোগ যেমন– যক্ষ্মা, ফুসফুসে ক্যান্সার ও ফুসফুস ফাইব্রোসিস হতে পারে।
যেসব কারণে দীর্ঘস্থায়ী কাশি হয় তার মধ্যে
অ্যাজমা: মূলত বংশগত কারণ। দূষিত বাতাস, বিভিন্ন প্রকার অ্যালার্জেন, ভাইরাসজনিত সংক্রমণ এ রোগের কারণ। অ্যাজমার কারণে শ্বাসনালি সংকুচিত হয় ও বাতাস প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়; যার ফলে রোগীর কাশি, শ্বাসকষ্ট হয়, বুকে শব্দ হয় ও চাপ অনুভূত হয়। সাধারণত এ ধরনের কাশি রাতে ও সকালে বাড়ে। কফ ভেরিয়েন্ট অ্যাজমা,  শুধু রাতে কাশি হবে কিন্তু অ্যাজমার অন্য লক্ষণগুলো থাকবে না।
গ্যাস্ট্রো ইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ: এ অবস্থায় পাকস্থলী ও খাদ্যনালির রিং (স্ফিঙ্কটার)  ঢিলা হওয়ার কারণে এসিড খাদ্যনালিতে ফিরে আসে ও দীর্ঘস্থায়ী কাশি হতে পারে। সাধারণত অন্য লক্ষণগুলো মুখে টক ও বুক জ্বালাপোড়া, বুকে এসিড উদগিরণের অনুভূতি থাকে।
ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি): ধূমপায়ীদের ক্রনিক ব্রংকাইটিস পরপর দু’বছর তিন মাসের বেশি সময় কফযুক্ত কাশি হয়। ফুসফুসের বায়ু প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং বুকে আওয়াজ হতে পারে। অল্প পরিশ্রমে শ্বাসকষ্ট হয় এবং ফুসফুসের বায়ু থলি (এলভিউলাই) ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফুসফুস থেকে রক্তে অক্সিজেন প্রবাহে ব্যাঘাত হয় এবং অল্পতে হাঁপিয়ে ওঠে।
ওষুধ: প্রেশার কমানোর ওষুধ এসিই (ACE) ইনহিবিটার যেমন– রেমিপ্রিল, এসিপ্রিল ও বিটা ব্লকারের কারণে শুকনা কাশি হতে পারে। সেজন্য দীর্ঘদিনের কাশির রোগীর কাছে প্রথমে ওষুধ সেবনের ইতিহাস নিতে হবে, কোনো বড় ইনভেস্টিগেশনের আগে।
হার্ট ফেইলুর: দীর্ঘস্থায়ী কাশি শরীরে পানি জমা, দুর্বলতা, সামান্য পরিশ্রমে ক্লান্তি ভাব থাকতে পারে। রাত্রে শোয়ার সময় কাশি বেড়ে যায়, শ্বাসকষ্ট হয়।
ফুসফুসে সংক্রমণ: যক্ষ্মার কারণে দীর্ঘস্থায়ী কাশি হতে পারে। যদিও দুই সপ্তাহের বেশি কাশি হলে যক্ষ্মা পরীক্ষা করানো জরুরি। যেহেতু আমাদের দেশে যক্ষ্মা রোগের প্রকোপ বেশি, সেজন্য প্রথমে আমাদের এই রোগের কথা মনে রাখতে হবে। এ রোগের অন্যান্য লক্ষণ– বিকেলে জ্বর, ওজন কমে যাওয়া, খাওয়ায় অরুচি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কফের সঙ্গে রক্ত আসা।
ফুসফুসের ফাইব্রোসিস (ডিপিএলডি) হলে কাশি ও শ্বাসকষ্ট হবে। 
ফুসফুসে ক্যান্সার: ধূমপায়ী, যারা প্রতিদিন ২০টি সিগারেট ২০ বছরের বেশি টেনেছেন, তাদের দীর্ঘস্থায়ী কাশি লেগেই থাকে। তাদের নতুন কাশি কিংবা কাশির ধরন পাল্টেছে, গলার স্বর পরিবর্তন হয়েছে, ক্লান্তি ভাব জেগেছে, ওজন কমে যাচ্ছে এবং কখনও কখনও কফের সঙ্গে  রক্ত যাওয়া এ রোগের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ । 
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন 
lকাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া।
l কফের সঙ্গে রক্ত আসা। 
l যে কাশি ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। 
l কাশির সঙ্গে বুক ব্যথা, জ্বর, ক্ষুধামন্দা, ওজন কমে যাওয়া।
 l যে কোনো দীর্ঘদিনের কাশি যেটিতে আপনি কষ্ট পান। 
l বুকের এক্স-রেতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা ।
চিকিৎসকের পরামর্শ 
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগের বর্ণনা ও রোগীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর রোগ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা হয়। তার পর কিছু কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। যেমন– l রক্তের সিবিসি পরীক্ষা; 
l শ্লেষ্মা বা কফ পরীক্ষা, ইউসিনোফিল কাউন্ট, যক্ষ্মার জীবাণু; l বুকের এক্স-রে; l বুকের সিটি স্ক্যান;
l স্পাইরোমেট্রি ও 
lব্রঙ্কোসকপিও করতে হতে পারে । 
চিকিৎসা 
l রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে ।
l ধূমপান পরিহার করতে হবে। 
l ধুলাবালি ও ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।
l বাইরে গেলে মাস্ক পরুন।
l ঠান্ডার সময়ে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। 

[অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ  
ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ও কনসালট্যান্ট, আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেড]

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।

মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ