বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনায় আটক হয়েছেন মু. শরিফুল ইসলাম শেহজাদ (৩৮) নামে এক যুবক। তাঁর বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামে। গ্রেপ্তারের পর গণমাধ্যমে আসা ছবি দেখে শেহজাদকে শনাক্ত করেছে পরিবার।

রাজাবাড়িয়া গ্রামের রুহুল আমিন ফকিরের ছেলে তিনি। তাঁর বাবা এক সময় খুলনা জুট মিলে চাকরি করতেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে শেহজাদ দ্বিতীয়।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারের সঙ্গে খুলনায় থাকতেন শেহজাদ। সে সময় থেকেই অবৈধপথে তাঁর ভারতে যাতায়াত ছিল। খুলনায় থাকাকালে তিনি মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়। এতে বিরক্ত হয়ে তাঁর পরিবার গ্রামের বাড়ি চলে যায়। এলাকায় মাঝেমধ্যে আসা-যাওয়া থাকলেও স্থায়ী হতেন না শেহজাদ। ২০১৭ সালের পর থেকে তাঁকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। পরিবারের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ করেননি।

গতকাল সোমবার শেহজাদের ছোট ভাই সালমান ফকির জানান, তাঁর মেজো ভাই শেহজাদ ২০১৭ সালে রফিকুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেলচালক হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে ভারতে পালিয়ে যান। এর আগে দেশে থাকা অবস্থায় ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হন তিনি। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ নেই।
বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি শেহজাদ। শুনেছি, সে ভারতের কারাগারে আটক আছে। সে কবে, কীভাবে ভারতে গেছে, সেটা আমাদের জানা নেই।’ নলছিটি থানার ওসি আবদুস ছালাম বলেন, শেহজাদের বিষয়ে কোনো বার্তা আসেনি। 

গত বুধবার রাতে মুম্বাইয়ে বাসায় ঢুকে সাইফ আলি খানের ওপর হামলা করে দুষ্কৃতকারী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, ডাকাতির উদ্দেশ্য নিয়েই সাইফ-কারিনার বাড়িতে ঢুকেছিলেন শেহজাদ। রোববার মহারাষ্ট্রের থানের কাছে একটি জঙ্গল থেকে তাঁকে আটক করে বান্দ্রা কোর্টে পেশ করা হয়। এর পর আদালত তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষ, আদেশ ৬ আগস্ট

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর আদেশের জন্য আগামী ৬ আগস্ট তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ আজ বুধবার শুনানি শেষে আদেশের এই তারিখ ধার্য করেন।

গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য ১ জুলাই তারিখ ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার শুনানি হয়।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়; পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারীপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন। এ ছাড়া ইন্টারভেনার (ব্যাখ্যাকারী) হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর আজ শুনানি শেষ হলো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষ, আদেশ ৬ আগস্ট