ভারতীয় বাংলা সিনেমার বর্ষীয়ান অভিনেতা সন্তু মুখার্জি। ২০২০ সালের ১১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান তিনি। গত ১৩ জানুয়ারি সন্তু মুখার্জির জন্মদিন ছিল। বিশেষ দিনে এই অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন তারই কন্যা জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি।

বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে ফের দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। লেখার শুরুতে আলোচিত এই অভিনেত্রী বলেন, “ছোটবেলা থেকে দেখেছি, বাবা একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে কথা বললে চোখটা কেমন অন্যরকম হয়ে যেত বা অন্যমনস্ক হয়ে রইলে চোখটা সেই অন্যরকম। আনমনে কথা বললেও দেখতাম চোখের মণিটা কেমন যেন ফট করে আলাদা হয়ে যেত। হঠাৎ ডাকলে যদি তাকায়, সেই চোখটা আবার আলাদা। একটু বড় হতে বুঝলাম একে বলে— লক্ষ্মী ট্যারা। চাহনিটা খালি একটু খানি, একটু খানি অন্যরকম। বাবাকে কী মিষ্টি লাগত।”

‘লক্ষ্মী ট্যারা’ ব্যাপারটি নিয়ে বাবার সঙ্গে দারুণ আলাপচারিতা উল্লেখ করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “ওই রকম করো না চোখটা”— এটা বললেই বাবা বলত, আরে ওরম ইচ্ছে করলেই হয় না, করা যায় না। ট্যারা হব দেখবি? সে ট্যারা তো সবাই হতে পারে। নাকের ডগায় আঙুল রেখে বা ভুরু যুগলের মধ্যে আঙুল রেখে তাকানোর চেষ্টা করলেই ট্যারা। কিন্তু লক্ষ্মী ট্যারা ব্যাপারটা স্পেশাল।”

আরো পড়ুন:

স্বস্তিকার প্রথম প্রেম জিৎ

রুক্মিণী ভালো মেয়ে, প্রথমবার ‘মাল’ বলেছে তাই চিন্তিত: স্বস্তিকা

স্বস্তিকা নিজেও তার বাবার মতো করে তাকাতে পারেন। বোনের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটান। সেই স্মৃতিচারণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “বাবা চলে যাওয়ার পর, অনেক রাত অব্দি বোনের সঙ্গে গল্প করলে বোন মাঝেমাঝে বলত, ‘এই দিদি চোখটা ঠিক কর, বাবার মতন হয়ে গেছে।’ অথবা বলত, ‘দিদি পুরো বাবার মতন তাকালি।’ বা বলত, ‘পুরো বাবা মনে হলো চোখটা, ওরম করে তাকাস না আহারে, এই দিদি চোখটা ঠিক কর।’ আমি পাতা ফেলে, চোখ পিটপিট করে ঠিক করে নিতাম আর মনে মনে স্বস্তির হাসি হাসতাম।”

“আমরা তো সবাই চাই, এটাই আমাদের সুপ্ত বাসনা, আমরা যেন আমাদের বাবা মায়ের মতন হই। তাদের সবটা যেন আমাদের মধ্যে থেকে যায়। ঠিক যেমন আমি চাই, আমার আমিটা যেন আমার মেয়ের মধ্যে আশ্রয় পায়।” বলেন স্বস্তিকা মুখার্জি।

কয়েক দিন আগের একটি ঘটনা বর্ণনা করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “ফ্লাইটে আসার সময় হঠাৎ দেখি সূর্যটা অস্ত যাওয়ার আগে রমরমিয়ে জ্বলে উঠেছে, সারা আকাশ কমলা রঙে উজ্জ্বল আর সেই এক ফালি রোদ এসে আমার চোখটা প্রায় ঝলসে দিচ্ছে। এত সুন্দর আলো অনেকদিন পর দেখলাম।”

পরের ঘটনা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “ভাবলাম, সূর্যের এত কাছে আছি কটা ছবি তুলি, নিজস্বী। ঠিক দুটো তুললাম। ওমা ফটোটায় তাকিয়ে দেখি, সেই বাবার মতন হয়ে আছে চোখটা। সঙ্গে সঙ্গে আরো কয়েকটা তুললাম যাতে বাবার মতন হয়ে থাকতে থাকতে আরো কটা ছবি থেকে যায়। এক ফোটা নড়িনি চড়িনি, চোখের পাতাও ফেলিনি। হলো না। আর একটাও হলো না।”

“প্লেনটা নামা অব্দি ভাবলাম, এই আকাশে বাবা থাকে, মেঘের মধ্যে, সূর্যের কিরণের মধ্যে। আমিও আছি দেখে বোধহয় টুক করে এসে জানান দিয়ে গেল। এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয়ে আলোয়ে…।” বলেন স্বস্তিকা।

ব্যক্তিগত জীবনে গোপা মুখার্জির সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন সন্তু মুখার্জি। এ সংসারে তাদের দুই কন্যাসন্তান রয়েছেন। তারা হলেন— অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি ও মেকআপ ডিজাইনার অজপা মুখার্জি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘কলঙ্কমুক্ত হলো কী না’ প্রশ্নে যা বললেন আবাহনী কোচ

এমন একটা অবস্থা ছিল, ঢাকা লিগ শুরুর আগেই আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ধরা হতো। দল চালানো থেকে বাইশ গজে নানা সুযোগ-সুবিধা পেতো ক্রিকেটাঙ্গনে এমন আলোচনা ছিল ওপেন সিক্রেট।

এবার দেশের পট পরিবর্তনের সঙ্গে বদলে যায় ক্রীড়াঙ্গনের দৃশ্যও। ঢাকা লিগে এবার আর্থিক কারণে দল গড়তে হিমশিম খেয়েছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল ক্লাবটি। এক ক্রিকেটার স্বাক্ষর করেও টাকা কম দেখে চলে যান অন্য দলে।

সব মিলিয়ে আবাহনীর জন্য মাঠে নামাও চ্যালেঞ্জিং ছিল। সব ছাপিয়ে আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, দাপুটে ক্রিকেটে বিগ বাজেটের দলগুলোকে হারিয়ে শেষপর্যন্ত চব্বিশতম ট্রফি ঘরে তোলে ক্লাবটি।

আরো পড়ুন:

টিম গড়া থেকে সবকিছুতেই চ্যালেঞ্জ ছিল, এ বছরের ট্রফি স্পেশাল: মোসাদ্দেক

দর্শককে মারতে গেলেন মাহমুদউল্লাহ

আবাহনীর কোচিংয়েও এসেছিল বদল। নির্বাচক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে কোচিং বেছে নেন হান্নান সরকার। আবাহনীর হয়ে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই সফল এই কোচ।

ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন হান্নান, “আমার কাছে মনে হয় ঢাকা ক্রিকেট লিগে আবাহনী বা মোহামেডানের জার্সি পড়লে বাড়তি মোটিভেশন চলে আসে।’’

আবাহনী কি এবার কলঙ্কমুক্ত হয়েছে? উত্তরে হান্নান বলেন, “এর আগে আবাহনীর চ্যাম্পিয়নশিপকে অনেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে আলোচনায় এনেছে। এবার দেশের প্রেক্ষাপট বদলানোর পর সব দলকে নিউট্রাল জায়গা থেকে চিন্তা করতে পারেন। অনেক দিক থেকে বিতর্ক হয়েছে, আম্পায়ারিং নিয়ে কথা হয়েছে। তবে দিন শেষে সবাই যার যার জায়গায় ফেয়ার থাকার চেষ্টা করেছে।”

“ঠিক একইভাবে মাঠের ক্রিকেটে সবাই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। মাঠের ক্রিকেটে যদি ভালো খেলে যদি চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় তাতে আলাদা তৃপ্তি কাজ করে। আমার মনে হয় এবার আবাহনীর সেভাবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবার অনেকে মন থেকেই আবাহনীর জন্য দোয়া করেছে। এটা নিশ্চয়ই অন্যরকম ফিলিংস, বিতর্ক ছাড়া চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আলাদা ভালো লাগা থাকে।’’

এবার বাইরের কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা ছিল না। দলটির প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে অবদান রেখেছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন হান্নান।

“আগে আবাহনী অনেক টাকা খরচ করে দল বানাতো চ্যাম্পিয়ন মোটামুটি ধরে নেওয়াই যেতো। সেজন্য মাঠের ক্রিকেটকে আপনি ছোট করে দেখতে পারবেন না। এবার ভারি নাম ছিল না, মাঠের ক্রিকেটে ভিন্ন স্ট্রাটেজি সাজিয়ে জিততে হয়েছে, এটার তৃপ্তি অন্যরকম।’’

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘কলঙ্কমুক্ত হলো কী না’ প্রশ্নে যা বললেন আবাহনী কোচ