বাবার ‘লক্ষ্মী ট্যারা’ চোখ নিয়ে স্মৃতিকাতর স্বস্তিকা
Published: 21st, January 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার বর্ষীয়ান অভিনেতা সন্তু মুখার্জি। ২০২০ সালের ১১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান তিনি। গত ১৩ জানুয়ারি সন্তু মুখার্জির জন্মদিন ছিল। বিশেষ দিনে এই অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন তারই কন্যা জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি।
বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে ফের দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। লেখার শুরুতে আলোচিত এই অভিনেত্রী বলেন, “ছোটবেলা থেকে দেখেছি, বাবা একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে কথা বললে চোখটা কেমন অন্যরকম হয়ে যেত বা অন্যমনস্ক হয়ে রইলে চোখটা সেই অন্যরকম। আনমনে কথা বললেও দেখতাম চোখের মণিটা কেমন যেন ফট করে আলাদা হয়ে যেত। হঠাৎ ডাকলে যদি তাকায়, সেই চোখটা আবার আলাদা। একটু বড় হতে বুঝলাম একে বলে— লক্ষ্মী ট্যারা। চাহনিটা খালি একটু খানি, একটু খানি অন্যরকম। বাবাকে কী মিষ্টি লাগত।”
‘লক্ষ্মী ট্যারা’ ব্যাপারটি নিয়ে বাবার সঙ্গে দারুণ আলাপচারিতা উল্লেখ করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “ওই রকম করো না চোখটা”— এটা বললেই বাবা বলত, আরে ওরম ইচ্ছে করলেই হয় না, করা যায় না। ট্যারা হব দেখবি? সে ট্যারা তো সবাই হতে পারে। নাকের ডগায় আঙুল রেখে বা ভুরু যুগলের মধ্যে আঙুল রেখে তাকানোর চেষ্টা করলেই ট্যারা। কিন্তু লক্ষ্মী ট্যারা ব্যাপারটা স্পেশাল।”
আরো পড়ুন:
স্বস্তিকার প্রথম প্রেম জিৎ
রুক্মিণী ভালো মেয়ে, প্রথমবার ‘মাল’ বলেছে তাই চিন্তিত: স্বস্তিকা
স্বস্তিকা নিজেও তার বাবার মতো করে তাকাতে পারেন। বোনের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটান। সেই স্মৃতিচারণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “বাবা চলে যাওয়ার পর, অনেক রাত অব্দি বোনের সঙ্গে গল্প করলে বোন মাঝেমাঝে বলত, ‘এই দিদি চোখটা ঠিক কর, বাবার মতন হয়ে গেছে।’ অথবা বলত, ‘দিদি পুরো বাবার মতন তাকালি।’ বা বলত, ‘পুরো বাবা মনে হলো চোখটা, ওরম করে তাকাস না আহারে, এই দিদি চোখটা ঠিক কর।’ আমি পাতা ফেলে, চোখ পিটপিট করে ঠিক করে নিতাম আর মনে মনে স্বস্তির হাসি হাসতাম।”
“আমরা তো সবাই চাই, এটাই আমাদের সুপ্ত বাসনা, আমরা যেন আমাদের বাবা মায়ের মতন হই। তাদের সবটা যেন আমাদের মধ্যে থেকে যায়। ঠিক যেমন আমি চাই, আমার আমিটা যেন আমার মেয়ের মধ্যে আশ্রয় পায়।” বলেন স্বস্তিকা মুখার্জি।
কয়েক দিন আগের একটি ঘটনা বর্ণনা করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “ফ্লাইটে আসার সময় হঠাৎ দেখি সূর্যটা অস্ত যাওয়ার আগে রমরমিয়ে জ্বলে উঠেছে, সারা আকাশ কমলা রঙে উজ্জ্বল আর সেই এক ফালি রোদ এসে আমার চোখটা প্রায় ঝলসে দিচ্ছে। এত সুন্দর আলো অনেকদিন পর দেখলাম।”
পরের ঘটনা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “ভাবলাম, সূর্যের এত কাছে আছি কটা ছবি তুলি, নিজস্বী। ঠিক দুটো তুললাম। ওমা ফটোটায় তাকিয়ে দেখি, সেই বাবার মতন হয়ে আছে চোখটা। সঙ্গে সঙ্গে আরো কয়েকটা তুললাম যাতে বাবার মতন হয়ে থাকতে থাকতে আরো কটা ছবি থেকে যায়। এক ফোটা নড়িনি চড়িনি, চোখের পাতাও ফেলিনি। হলো না। আর একটাও হলো না।”
“প্লেনটা নামা অব্দি ভাবলাম, এই আকাশে বাবা থাকে, মেঘের মধ্যে, সূর্যের কিরণের মধ্যে। আমিও আছি দেখে বোধহয় টুক করে এসে জানান দিয়ে গেল। এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয়ে আলোয়ে…।” বলেন স্বস্তিকা।
ব্যক্তিগত জীবনে গোপা মুখার্জির সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন সন্তু মুখার্জি। এ সংসারে তাদের দুই কন্যাসন্তান রয়েছেন। তারা হলেন— অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি ও মেকআপ ডিজাইনার অজপা মুখার্জি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”
তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস