উত্তরের শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন, দুশ্চিন্তায় কৃষক
Published: 22nd, January 2025 GMT
রংপুরের আকাশে আজও দেখা মেলেনি সূর্যের। ঘন কুয়াশা আর হিম বাতাসে বিপর্যস্ত জনজীবন। হিমশীতল আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। প্রভাব পড়েছে কৃষিখাতেও।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন পঞ্চগড় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১টা পর্যন্ত রংপুরের আকাশে দেখা যায়নি সূর্যের।
আবহাওয়া অফিস বলছে, এই পরিস্থিতি আরো দুই থেকে তিন দিন থাকতে পারে।
হিমশীতল আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। দুপুর পৌনে ১টার দিকে রংপুর নগরীর সাতমাথা এলাকায় রিকশাচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, “শীতে একেবারে কাহিল হয়ে গেছি। পেটের তাগিদে ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হয়েছি। তবে রোজগার আগের তুলনায় একেবারে কমে গেছে।”
শুধু শ্রমজীবী নয়, এই বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে কৃষিখাতে। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার আলু চাষিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা। এ সময়ে ফসলের পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকরা শঙ্কিত লেট ব্লাইট রোগ নিয়ে।
পারুল ইউনিয়নের দেউতি এলাকার বাসিন্দা কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, “আবহাওয়া যদি এমন থাকে, আলুর ফলন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দিনভর গাছ কুয়াশায় ভিজে থাকছে। এ অবস্থায় ঔষধ স্প্রে করার কোনো উপায় নেই।”
এদিকে, শীতজনিত রোগের প্রকোপও বাড়ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধ ও শিশু রোগীদের মধ্যে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। গত তিনদিন ধরে হাসপাতালে রোগীর ভির লক্ষ করা গেছে। এতে চিকিৎসকের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এছাড়াও রংপুরের বার্ন ইউনিটে দিন দিন বাড়ছে অগ্নিদগ্ধ রোগীর সংখ্যাও। চলমান শীতে এখন পর্যন্ত আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চারজন রোগী প্রাণ হারিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। আর বর্তমানে বার্ন ইউনিটে প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। যার অধিকাংশ রোগী শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়েই দগ্ধ হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে শহরের ছিন্নমূল মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। চরাঞ্চল ও বস্তিগুলোতে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না পৌঁছানোর অভিযোগ রয়েছে। নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় শীতার্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই শীতে ভ্রাম্যমাণ শ্রমজীবীর কর্ম হারিয়েছে। শীত বস্ত্র না পেয়ে অনেকটা দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, “প্রতিটি উপজেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও নানা সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিত্তবানদেরও শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।”
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মুস্তাফিজার রহমান জানান, আগামী দুই-তিন দিন এমন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধদের উষ্ণ পরিবেশে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন স্তরের সহায়তা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা/আমিরুল/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//