টানা নয়-দশ দিন ধরে তুষার পড়েছে। সূর্যের দেখা নেই। বিকেল ৪টা বাজতেই চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়–রাত নেমে আসে দিনের বুকে। ইনস্টাগ্রামে মেঘে ঢাকা শহরের রিল দেখতে গিয়ে জানলাম, ১৯৯৫
সালে টানা তেষট্টি দিন রোদ ওঠেনি এ শহরে। আশ্চর্যের বিষয়, তখন তুষারও পড়েনি। চারপাশ ছিল ধূসর আর খয়েরি।
এ বছর দৃশ্যটা ভিন্ন। শুভ্র তুষার ঢেকে দিয়েছে সিরাকিউজের শরীর। লিভিং রুমে কফির মগ হাতে জানালার বাইরে তাকালে দেখি, অনবরত তুষারের মাঝে যেন পৃথিবী দুলছে কোনো সিনেমার পর্দায়। কোনো কোনো দিন আকাশ পরিষ্কার হলে, গাছের ডালে আটকে থাকা তুষারগুলো দেখে ‘ও হেনরি’র গল্পদৃশ্য মনে হয়।
কখনও কখনও অবশ্য প্রবল বাতাস এসে সেই দৃশ্য এলোমেলো করে দেয়। জানালার কাচের বাইরে তখন তুষারকণাগুলো উড়ে পাখির পালকের মতো। এই দৃশ্য যতবার দেখি, ততবার কেন যেন ‘আমেরিকান বিউটি’ সিনেমার রিকি ফিটসের কথা মনে পড়ে।
রিকি একদিন দমকা বাতাসে ভেসে বেড়ানো তুচ্ছ একটা প্লাস্টিক ব্যাগ টানা পনেরো মিনিট মুগ্ধ হয়ে ভিডিও করেছিল। সে জানত, শহরের কোনো মানুষ এই ব্যাগের সৌন্দর্য দেখবে না। কেউ দেখলেও মনে রাখবে না। কারণ ব্যাগটা কোনো বিখ্যাত ভাস্কর্য নয়, নয় কোনো রঙিন বিলবোর্ড। তবু রিকি দেখেছিল। আর বলেছিল,
“Sometimes there’s so much beauty in the world I feel like I can’t take it, like my heart’s going to cave in.
দমকা বাতাসে গাছের ডাল থেকে উড়তে থাকা তুষারকণা আমাকে ঠিক এভাবেই আচ্ছন্ন করে। মনে হয়, রিকির সেই প্লাস্টিক ব্যাগ তুষারের রূপ নিয়ে নাচছে। আমি জানালার এপাশে ভিউফাইন্ডারে চোখ রেখে তাকিয়ে দেখছি–অন্যপাশের শুভ্র পৃথিবী। সেই পৃথিবীর মাঝে ধীরে ধীরে উড়ছে অসংখ্য তুষারকণা; যেন বহু আগে পেছনে রেখে আসা কোনো স্তব্ধ গল্পের পৃষ্ঠা উল্টে যাচ্ছে আমার সামনে।
জীবন এত সহজে মানুষকে ক্লান্ত-বিপন্ন করে তোলে। তবু মাঝে মাঝে কিছু মুহূর্তে নতুনভাবে বাঁচার আনন্দ জাগে। তখন মনে হয়, স্বস্তি সন্ধানের চিরাচরিত প্রোটোকল ভেঙে, কারা আমাদের সন্ধ্যার হাওয়ায় বেঁচে থাকার গান শোনাবে...?
লেখকের ফেসবুক থেকে
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের ক্ষুদে ফুটবলার জিসানের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্থানীয়রা ফুটবলে জিসানের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ বলে ডাকেন।
তারেক রহমানের পক্ষে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জিসানের গ্রামের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি জিসানের বাবা ও এলাকাবাসীকে এ খবরটি জানিয়ে আসেন।
উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের অটোরিকশাচালক জজ মিয়ার ছেলে জিসান। মাত্র ১০ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান ফুটবলারের অসাধারণ দক্ষতার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। স্থানীয় চর ঝাকালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সে।
কখনও এক পায়ে, কখনও দু’পায়ে, কখনও পিঠে ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কসরত করে জিসান। দেখে মনে হবে, ফুটবল যেনো তার কথা শুনছে। এসব কসরতের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
অনলাইনে জিসানের ফুটবল নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হন তারেক রহমান। তিনি জিসানের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে জিসানের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক।
জিসানকে উপহার হিসেবে বুট, জার্সি ও ফুটবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেন তিনি। এছাড়া জিসানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।
জিসানের ফুটবল খেলা নিজ চোখে দেখে মুগ্ধ আমিনুল হক বলেন, “জিসান ফুটবলে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। তারেক রহমান জিসানের প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিমাসে জিসানের লেখাপড়া, ফুটবল প্রশিক্ষণ ও পরিবারের ব্যয়ভারের জন্য টাকা পাঠানো হবে।”
জিসান জানায়, মোবাইলে ম্যারাডোনা, মেসি ও রোনালদোর খেলা দেখে নিজেই ফুটবলের নানা কৌশল শিখেছে। নিজ চেষ্টায় সে এসব রপ্ত করেছে।
জিসানের বাবা জজ মিয়া বলেন, “আমি বিশ্বাস করতাম, একদিন না একদিন কেউ না কেউ আমার ছেলের পাশে দাঁড়াবে। আজ আমার সেই বিশ্বাস পূর্ণ হয়েছে।”
ঢাকা/রুমন/এস