নোমানের ইতিহাসগড়া হ্যাটট্রিকে বিধ্বস্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ
Published: 25th, January 2025 GMT
সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে নোমান আলীর দুর্দান্ত স্পিনে বিধ্বস্ত অবস্থায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার অসাধারণ হ্যাটট্রিকে সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। প্রথম দিনে ৪১.১ ওভারেই সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৬৩ রানে গুটিয়ে গেছে সফরকারীরা। ৬ উইকেট শিকার করেছেন নোমান আলী।
নোমান আলীর এই হ্যাটট্রিক শুধু অসাধারণই নয়, পাকিস্তান ক্রিকেটের ইতিহাসে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। নোমান প্রথম পাকিস্তানি স্পিনার হিসেবে টেস্টে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েছেন।
হ্যাটট্রিকের পথে নোমান একে একে শিকার করেন জাস্টিন গ্রিভস, তেভিন ইমলাচ এবং কেভিন সিনক্লেয়ারকে। গ্রিভস এবং ইমলাচকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন, এরপর কেভিন সিনক্লেয়ারকে শর্ট ফরোয়ার্ডে থাকা বাবর আজমের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নে পাঠান।
সিনক্লেয়ারের ক্যাচ ধরার পর বাবর আজম স্থির থাকলেও নোমানের সতীর্থরা তার ঐতিহাসিক কীর্তি উদযাপনে দৌড়ে যান তার কাছে। মুলতানের এই ম্যাচে নোমান ষষ্ঠ পাকিস্তানি বোলার হিসেবে টেস্টে হ্যাটট্রিক করেন। তবে, স্পিনার হিসেবে এই অর্জন পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে তারই প্রথম।
পাকিস্তানের মাটিতে টেস্টে স্পিনারদের হ্যাটট্রিকের ঘটনা বিরল। এর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন বাংলাদেশের অলক কাপালি ২০০৩ সালে এবং নিউজিল্যান্ডের পিটার প্যাথেরিক ১৯৭৬ সালে। কাপালি পেশোয়ারে পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং প্যাথেরিক লাহোরে জাভেদ মিয়াঁদাদদের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিলেন।
২০২০ সালে পাকিস্তানের মাটিতে সর্বশেষ টেস্ট হ্যাটট্রিক করেছিলেন নাসিম শাহ, প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। আর পাকিস্তানের হয়ে আগের পাঁচটি হ্যাটট্রিকের মধ্যে দুটি করেছিলেন ওয়াসিম আকরাম, দুটিই ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এছাড়া আবদুর রাজ্জাক (২০০০) এবং মোহাম্মদ সামি (২০০২) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ম ন আল
এছাড়াও পড়ুন:
আধা ঘণ্টার মধ্যেই গিলের দুই রেকর্ড
ওভাল টেস্টের আজ প্রথম দিন। ‘অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি’র এই ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য স্মরণীয় হয়ে উঠবে কি না সময়ই বলবে। তবে শুবমান গিল নিজের জন্য স্মরণীয় করে তুললেন প্রথম দিনের প্রথম সেশনেই। দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় ব্যাট করতে নামা গিল আধা ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙেছেন দুটি রেকর্ড।
একটি রেকর্ড গ্যারি সোবার্সের, যা টিকেছিল ৫৯ বছর। আরেকটি রেকর্ড সুনীল গাভাস্কারের, টিকেছিল ৪৬ বছর। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টের প্রথম সকালের এ দুই কীর্তির পর গিলকে হাতছানি দিচ্ছে আরও কয়েকটি রেকর্ড।
সিরিজের প্রথম চার টেস্টে ৭২২ রান করা গিল আজ প্রথম রেকর্ডটি ভেঙেছেন নিজের প্রথম স্কোরিং শটে। সেনা দেশগুলোতে (দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া) সফরকারী অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটা ছিল সোবার্সের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টের আট ইনিংসে করেছিলেন ৭২২ রান। প্রায় ছয় দশক পর গত সপ্তাহে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টেই তাঁকে ছুঁয়ে ফেলেন গিল।
সোবার্সকে ছাড়িয়ে যেতে বাকি যে এক রান দরকার ছিল, গিল আজ সেটিই নিয়েছেন ক্রিস ওকসের বলে স্কয়ার লেগে ঠেলে জোড়া রান নিয়ে। ইংল্যান্ডে সফরকারী অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের এই কীর্তি গড়েই থামেননি গিল। কিছুক্ষণ পরই ছাড়িয়েছেন স্বদেশি কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারের এক রেকর্ড।
১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ টেস্টের ৯ ইনিংসে ৭৩২ রান করেছিলেন তখনকার ভারত অধিনায়ক গাভাস্কার। চার দশকের বেশি সময় ধরে এটিই ছিল অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্ট সিরিজে ভারতের রেকর্ড। আজ জেমি ওভারটনকে কাভার দিয়ে চার মেরে ১১ রানে পৌঁছে গাভাস্কারের রেকর্ডটিও দুইয়ে ঠেলে দিয়েছেন গিল।
প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যে দুটি নতুন রেকর্ড গড়া গিলের সামনে হাতছানি দিচ্ছে আরও কিছু রেকর্ড। যেমন ওভাল টেস্টে ৫৩ রান করতে পারলে তিনি হয়ে যাবেন ভারতের হয়ে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক। বর্তমানে রেকর্ডটি গাভাস্কারের, যিনি ১৯৭১ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ ইনিংসে করেছিলেন ৭৭৪ রান।
গিল যদি আরেকটু এগিয়ে ৮৯ রান করতে পারেন, তাহলে ডন ব্র্যাডম্যানকে ছাড়িয়ে তিনি হবেন অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করা বিশ্ব রেকর্ডের মালিক। ১৯৩৬-৩৭ অ্যাশেজে ৯ ইনিংসে ৮১০ রান করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি।
আর গিল যদি ওভালে সেঞ্চুরিই করে ফেলেন, তাহলে তিনি হয়ে যাবেন এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি ৫ সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান, যে কীর্তিটি আছে শুধু ক্লাইভ ওয়ালকটের (১৯৫৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ টেস্টে ৫ সেঞ্চুরি)।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় বৃষ্টিতে বন্ধ ছিল খেলা। বৃষ্টি আসার আগে ২ উইকেটে ৭২ রান তুলেছে টসে হেরে ব্যাটিং করা ভারত। গিল ১৫ ও সাই সুদর্শন ২৫ রানে অপরাজিত আছেন।