দুরবস্থার মাঝেও আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার বাড়বে
Published: 26th, January 2025 GMT
নানান চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে পড়েছে দেশের সামগ্রিক অবস্থা। এরমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধীরগতি এবং রাজস্ব আদায়ে চরম হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতির মধ্যেও আগামী অর্থবছরের জন্য একটি বড় আকারের বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে।
বিগত অর্থবছরগুলোর মত আগামী বাজেটটিও প্রণয়ন করা হচ্ছে ‘আমলাতান্ত্রিক’ গতানুগতিক ধারায়। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী বড় আকারের বাজেট প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে জন্য বাজেটে প্রাথমিক আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, আগামী মে মাসের শেষে বাজেটের আকার চূড়ান্ত করার সময় প্রাক্কলিত এই বাজেটের আকার আরও ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার যে বাজেটের খসড়া তৈরি করা হয়েছে তাতে ‘খাদ্য বাজেট’ ও ‘নেট লেন্ডিং’ ফিগার যোগ করা হয়নি। এটি যোগ করা হবে আগামী মে মাসে। তখন এই বাজেটে আকার গিয়ে ঠেকবে ৮ লাখ ৫৫ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকায়।
এদিকে, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে মোট রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য ধরা রয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জন্য আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা রয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। অর্থ্যৎ অর্থবছরের পুরো বারো মাসে এই পরিমাণ টাকা এনবিআরকে রাজস্ব হিসেবে আদায় করতে হবে। এই হিসেবে অর্থবছরে প্রথম ছয়মাসে আদায় হওয়ার কথা ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়েছে-১ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা। এর ফলে ছয় মাসে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা।
এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি মাথায় নিয়ে বর্তমান সরকার আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য আরও একটি উচ্চাভিলাষী রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আগামী অর্থবছরে জন্য শুধু এনবিআরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে ৫ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করার প্রাথমিক টার্গেট।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ের এই টার্গেট কোনোভাবেই পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। কারণ আগামী অর্থবছরের শেষ ভাগে একটি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়। আর আগামী অর্থবছরের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য যে ব্যাপক করজাল সম্প্রসারণ করা দরকার বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে সেটাও করা সম্ভব হবে না। এর উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়, ১২ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের জন্য গেল এই মাসেই সরকার একশটিরও বেশি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে এনবিআরের পক্ষ থেকে অনেক পণ্যের ওপর বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এসব কারণে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে টার্গেট ৫ লাখ কোটি টাকার নীচে রাখাই সমীচীন হবে।
জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরে যা রয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে সংশোধন করে তা কমিয়ে দুই লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড.
ঢাকা/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের ৩০ দিনে দেশে বৈধ পথে ২৩৬ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৮ হাজার ৮৮৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা)।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ জানা গেছে।
তথ্যমতে, জুলাইয়ের ৩০ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তা আগের বছর একই সময়ের চেয়ে ৩২ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালে জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
আরো পড়ুন:
নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত
সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থপাচারে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো কমে গেছে। ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে।
সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বরে ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার, জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ২৩ লাখ ডলার, মে মাসে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার এবং জুনে ২৮২ কোটি ১২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
ঢাকা/নাজমুল/মেহেদী