সাবেক গভর্নর এস কে সুরকে নিয়ে যে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ নজরুল
Published: 27th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ওরফে এস কে সুরের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি লিখেছেন, ‘রক্ষক না হয়ে তিনি (এস কে সুর) ছিলেন ভক্ষকের ভূমিকায়।’
তিনি আরও লিখেন, ‘শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারেই ব্যাংকটির সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর রাখা ৫৫ হাজার ইউরো, এক লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ৭০ লাখ টাকার এফডিআর ও প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যের এক কেজি সোনার অলংকারও সেখান থেকে জব্দ করা হয়েছে। পুরো তদন্ত হলে হয়তো আরও বহুকিছু উদ্ধার হবে তার কাছ থেকে। অভিযোগ রয়েছে, রক্ষক না হয়ে তিনি ছিলেন ভক্ষকের ভূমিকায়।’
গতকাল রোববার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুদক রাজধানীর মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা সুর চৌধুরীর লকারটি খোলে। লকারে তিনটি এসডি (সেফ ডিপোজিট) নম্বরে মোট ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৯ টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। এর মধ্যে ইউরো ৫৫ হাজার, মার্কিন ডলার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০, এফডিআর ৭০ লাখ টাকার ও স্বর্ণালংকার ৮৬ দশমিক ২২ ভরি (১০০৫.
দুদক কর্মকর্তারা লকারে থাকা স্বর্ণালংকারের তালিকা তৈরি করেন। তাতে দেখা যায়- ৮৬ দশমিক ২২ ভরি স্বর্ণের মধ্যে চেইন ২৩টি, টিকলি দুটি, কানের দুল ১৪টি, লকেট তিনটি, চুড়ি ছয়টি, টারসেলসহ সীতাহার দুটি, আংটি তিনটি, কয়েন তিনটি, চামচ একটি, নোলক একটি, ব্রেসলেট একটি, টারসেলসহ গলার হার তিনটি এবং টারসেলসহ মুকুট একটি। এ ছাড়া হাতে পরার চূড় দুই পিস, চুড়ি দুই পিস, সীতাহার এক পিস, মুকুট দুই পিস, লকেট দুই পিস, টিকলি এক পিস, গলার চেইন তিন পিস, গলার হার দুই পিস, কানের দুল আট পিস এবং স্বর্ণবোতাম চার পিস।
দুদক পরিচালক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান সমকালকে বলেন, সুর চৌধুরী, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ২৩ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক। মামলাটি তদন্ত করতে গিয়েই তার নামে বিপুল অর্থসম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
গত ১৪ জানুয়ারি সুর চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ১৯ জানুয়ারি দুদক তার ঢাকার ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দ করে। দেশের আর্থিক খাত থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎকারী পি কে হালদারের প্রতাপশালী সহযোগী ছিলেন সুর। দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেন, দুর্নীতি-লুট নির্বিঘ্নে করে দেওয়ার বিনিময়ে সুর চৌধুরী প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের মাসোহারা পেতেন। সময়ে সময়ে তাঁতা দেওয়া হতো বিপুল অঙ্কের টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী