ব্যবসায়ী হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন মিথুনকে ছিনিয়ে নিতে রাজধানীর নিউমার্কেট থানার সামনে পুলিশের ওপর হামলা চালানো অন্তত ১২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনকে ঘটনার সময়ই গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গত কয়েকদিনে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এখনও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। 

পরে শনাক্ত হওয়া ছয়জন হলেন– ধানমন্ডি থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আশরাফুল আলম পারভেজ, যুবদলের কর্মী শরিফুল ইসলাম দুর্জয়, কলাবাগান থানা ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বেলাল, সদস্য আল ওয়াসি এরিক, ছাত্রদল নেতা চঞ্চল ও কর্মী সালমান। তাদের মধ্যে শরিফুল ও মেহেদী হামলার নেতৃত্ব দেন বলে জানা গেছে।

পুলিশের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার তারিক লতিফ সমকালকে বলেন, সেদিনের হামলায় ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মী ছাড়াও ফুটপাতের হকাররা ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও দেখে জড়িত সবাইকে শনাক্ত করা হচ্ছে ও শনাক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২৩ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর পূর্বাচল থেকে ছাত্রদল নেতা মিথুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভোর ৪টার দিকে তাঁকে নিউমার্কেট থানায় নেওয়ার সময় হামলা চালান তাঁর অনুসারীরা। থানার ফটকের সামনেই তারা মিথুনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালান। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারী ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন– বশির ইসলাম, হাসান, ইমন, মাসুম মাহমুদ, আলামিন ও আকবর আলী। তারা সবাই এখন কারাগারে।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বশির হামলাকারী কয়েকজনের নাম জানিয়েছেন। জানা গেছে, মিথুনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোর সময়ই তিনি তাঁর আশপাশে থাকা ব্যক্তিদের কিছু নির্দেশনা দেন। সেইসঙ্গে ফোনে অনুসারীদের খবর দেন। তাদের মধ্যে শরিফুল ছিলেন অন্যতম। পরে তারা সংগঠিত হয়ে নিউমার্কেট থানার সামনে অবস্থান নেন। হামলার ভিডিওতে তাঁকে উত্তেজিত স্বরে কথা বলতে দেখা গেছে।

এর আগে ১০ জানুয়ারি এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে দোকান মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হককে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ‘ইমন গ্রুপের’ (সানজিদুল ইসলাম ইমন) সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় মামলা করেন সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল হাসান। সেদিন তাঁর ওপরেও হামলা চালানো হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, ব্যবসায়ী হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা রাসেল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, সেদিন তাঁকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন মিথুন। তিনি সন্ত্রাসী ইমনের হয়ে চাঁদাবাজি করেন। সম্প্রতি চাঁদার দাবিতে ধানমন্ডির একটি নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে গুলি চালায় এই গ্রুপের সদস্যরা। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য। সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ কর্মী অভিযোগ তুলে বিভিন্ন বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগও রয়েছে মিথুনের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারের পর দিনই তাঁকে ও ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান রাসেলকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে সংগঠনটি। 

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিউমার্কেট থানার এসআই ওমর ফারুক বাদী হয়ে মামলা করেন। এজাহারে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩০-৩৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে আসামি করা হয়েছে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ছ ত রদল র স মন র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

‘এইচ টি ইমামের’ বন্ধ কারখানায় ডাকাতির চেষ্টা, আটক ৬

গাজীপুরের শ্রীপুরে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানায় ডাকাতির চেষ্টা করা ছয় ব্যক্তিকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা ও পুলিশ। এসময় ক্ষুদ্ধ লোকজন তাদের মারধর করেন। 

সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) শ্রীপুর থানার ওসি মো. আব্দুল বারিক এতথ্য জানান।

আরো পড়ুন:

র‍্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের বাবাকে মারধরের অভিযোগ

গাজীপুরে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ৩

এলাকাবাসীর ভাষ্য, এই কারখানাটি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের। গত বছরের ৫ আগস্ট কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে কারখানাটি ইসলামী ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক শ্রীপুর শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “রাত ১১টার দিকে কারখানার তৃতীয় তলায় সন্দেহজনক কিছু গতিবিধি দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয়দের জানানো হয়। তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে ছয়জনকে ধরা সম্ভব হয়।”

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ১০–১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল প্রথমে প্রাচীর টপকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে। তারা কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীর হাত-পা বেঁধে মারধর করে এবং লুটপাট শুরু করে। স্থানীয় লোকজন গিয়ে ছয়জনকে আটকের পর মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মো. মকবুল হোসেন বলেন, “গেট টপকে কয়েকজন আমার ওপর চড়াও হয়। আমাকে বেঁধে মারধর করে।  যখন লোকজন আসতে শুরু করে, তখন ডাকাতেরা দেয়াল টপকে পালাতে শুরু করে।”

আটক ডাকাতরা হলো- ময়মনসিংহের বাঘটিয়ার মো. সোহেল মিয়া (৩২), তারাকান্দার মো. এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়ার কামুলার মো. ফারুক (৩২), নওগাঁর রাজাপুরের আরিফ (৩০), নরসিংদী বালুর মাঠ এলাকার সীমান্ত (২১) ও চাঁদপুরের ইব্রাহীম (২৩)।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আজগর হোসেন সোহাগ জানান, “রাত ১২টার দিকে ছয়জনকে আহত অবস্থায় পুলিশ  নিয়ে আসে। চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, গুরুতর সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

শ্রীপুর থানার ওসি মো. আব্দুল বারিক বলেন, “কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ডাকাতরা যন্ত্রপাতি লুট করতে এসেছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় ছয়জনকে ধরতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। আটক ব্যক্তিরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

ঢাকা/রফিক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘এইচ টি ইমামের’ বন্ধ কারখানায় ডাকাতির চেষ্টা, আটক ৬
  • কারখানায় ঢুকে ডাকাতি, ৬ জনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিলেন এলাকাবাসী