রাজধানীর চকবাজার এলাকায় পলিথিন কারখানায় অভিযানের সময় হামলায় আহত পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শওকত আলীকে দেখতে তাঁর বাসায় গিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি পরিচালকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। সব রকম সহায়তার আশ্বাস দেন। 

এ সময় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.

ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা বলেন, পলিথিন বিরোধী অভিযানে পরিচালকের ওপর হামলা নিন্দনীয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভিডিও ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য অপরাধীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। দেশের প্রয়োজনে কাজ করতে গিয়ে বাধা আসবেই। আমাদের নতুন উদ্যমে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।  

গত রোববার সকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়জুন্নেছা আক্তারের নেতৃত্বে একটি দল চকবাজারে পলিথিনবিরোধী অভিযান চালায়। এই সময় চকবাজারের পশ্চিম ইসলামবাগে কবির হোসেন ও ইলিয়াছ সরদারের ভাড়া করা বাসা থেকে মোট ৪০ বস্তা নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধার করা হয়। এসব পলিথিন একটি পিকআপে তুলে ফেরার পথে ১৫০-২০০ জন ব্যক্তি লাঠি, ইট, লোহার রড নিয়ে অভিযানকারী দলের পথ আটকান। পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইংয়ের পরিচালক (উপসচিব) মো. শওকত আলীকে মারধর করে গুরুতর আহত করেন তাঁরা। এমনকি পিকআপে থাকা জব্দ হওয়া পলিথিনের বস্তা ছিনিয়ে নিয়ে যান এবং পিকআপটি ভাঙচুর করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

২ বছর ধরে সভাপতি-সেক্রেটারি দিয়েই চলছে গাজীপুর মহানগর বিএনপি

২০২৩ সালের ১১ জুন ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের শর্তে গঠন করা হয়েছিল গাজীপুর মহানগর বিএনপির কমিটি। তবে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি। ঝুট ব্যবসাসহ মহানগরের সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ এই দুই নেতার হাতে। এসব নিয়ে রাজপথের ত্যাগী নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

জানা গেছে, দুই বছর আগে গাজীপুর মহানগরের তেলীপাড়া এলাকায় অবস্থিত সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে নতুন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে। ওই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় কাশিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শওকত হোসেন সরকার এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় বিএনপির প্রয়াত নেতা গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করীম রনি। 

ওই দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে তিনজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। 

পরবর্তীতে দুজন বাদে সবাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় শওকত হোসেন সরকার সভাপতি এবং এম মঞ্জুরুল করীম রনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়।

নেতাকর্মীরা জানান, ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কমিটি হয়নি। যদিও নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয় কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটির লিস্ট পাঠানো হয়েছে। তবে কেন বা কী কারণে এখনো কমিটি হয়নি সেটিও তাদের অজানা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা গাজীপুরে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় সাংগঠনিক গতিশীলতা হারিয়েছে। 

সেইসঙ্গে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যেও সম্পর্ক ভালো নেই। তারা বিভিন্ন সময়ে জুট ব্যবসা ও অধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছে। দিয়েছেন একে অন্যের বিপক্ষে বক্তব্য। যেহেতু সামনে নির্বাচন এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়া দরকার। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সব সময় আলাদা আলাদা প্রোগ্রাম করেন। মহানগর নেতা কর্মীর মধ্যেও এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কে কার রাজনীতি করে সেতু এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় প্রোগ্রামগুলোতে দুই নেতা আলাদা আলাদা লোক বল নিয়ে প্রোগ্রামে যোগদান করে। এখন পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক ব্যানারে রাজধানীর কোনো প্রোগ্রামে দেখা যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপির নেতা বলেন, “তারা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত। এখন পর্যন্ত কমিটি দেওয়ার বিষয়ে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায় না। এতে মহানগর বিএনপির কার্যক্রম একপ্রকার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককেন্দ্রীক হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে দলের বদনামসহ ভোটের মাঠে প্রভাব পড়বে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করীম রনি বলেন, “আমরা অনেক আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম কিন্তু রাজনৈতিক কারণ ও তখনকার নির্বাচনের পরিবেশের কারণে হয়তো কমিটি দেয়নি। দলের কেন্দ্র থেকে যখন চাইবে তখনই পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। এই সিদ্ধান্তটি কেন্দ্রের।”

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, কিছু লোক দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। মহানগর বিএনপির স্বতঃস্ফূর্তভাবেই একত্রে বিভিন্ন সভা সমাবেশ মিছিলে অংশগ্রহণ করছে। বিভিন্ন কারণেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, আমরা আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট
  • ২ বছর ধরে সভাপতি-সেক্রেটারি দিয়েই চলছে গাজীপুর মহানগর বিএনপি