বরগুনায় সেতু ভেঙে খালে, হাজারো মানুষের ভোগান্তি
Published: 31st, January 2025 GMT
বরগুনার তালতলী উপজেলার খোট্রার চর-মাছ বাজার এলাকার একটি সেতু শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ভোরের দিকে ভেঙে খালে পড়ে গেছে। এতে ওই এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। তারা নৌকার সাহায্যে খাল পার হয়ে একপাশ থেকে অন্যপাশে যাতায়াত করছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ৩০ বছর আগে নির্মিত সেতুটি কখনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ড.
আরো পড়ুন:
নৌকা আর সাঁকোয় ভরসা ১০ গ্রামের মানুষের
৪.৮ কিলোমিটার যমুনা রেলসেতু ৩ মিনিটে অতিক্রম
তিনি আরো বলেন, “এরপর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দীর্ঘ ১৮ বছর পার করলেও সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার ভোরের দিকে সেতুটি মাঝখান দিয়ে ভেঙে খালে পড়ে যায়। এর ফলে তলতলী শহরের সঙ্গে খোট্রার চরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষ ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে খাল পারাপার হচ্ছেন।”
স্থানীয় বাসিন্দা ওবায়দুল কবির বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করতাম। সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যাওয়ায় কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে। যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হতে হচ্ছে।”
কলেজ শিক্ষার্থী গোলাম সরোয়ার হিরু বলেন, “ভোরের দিকে হঠাৎ সেতুটি ভেঙে যায়। যে কারণে ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হতে হবে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অতি দ্রুত সেতুটি পুনঃনির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি।”
বরগুনা জেলার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খানকে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ভেঙে পড়া সেতু আজ দেখতে যান উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ভোরের দিকে সেতুটি ভেঙে পড়ে যায়। মানুষের চলাচলের জন্য বিকল্প একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হবে। অতিদ্রুত সেতু পুনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
পাবনায় নামাজরত অবস্থায় নিজাম প্রামানিক (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামানিককে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন সদর থানার তিন উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গী গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ
মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত
নিহত নিজাম প্রামাণিক একই গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন। অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামাণিকও কৃষকের কাজ করতেন। নিহত এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে বাবা-ছেলে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে রবিবার সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেন। খাবার শেষে এশার নামাজ পড়তে দাঁড়ান তিনি। এ সময় ঘরে প্রবেশ করে দরজা আটকিয়ে হাঁসুয়া দিয়ে নিজাম প্রমানিককে কুপিয়ে হত্যা করেন মোস্তফা। পরে তিনি পাশের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। অভিযুক্তকে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ রেখে পুলিশকে খবর দেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নিহতের অপর ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা খাবার শেষে রুমে শুয়ে ছিলাম। এমন সময় রুম আটকিয়ে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোস্তফা। এর আগেও সে আমাকে মেহগনি ঢাল দিয়ে মারধর করে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকে (রবিবার) হত্যা করতে গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মাঠের মধ্যে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করেছে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে সতর্ক করে।”
তিনি আরো বলেন, “সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের থেকে টাকা চাইতো। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো। তার শাস্তি হওয়া উচিত।”
পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তাকে আটক করতে গিয়ে তিনজন এসআই আহত হয়েছেন।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ