গোগনগরে বিদ্যুতের তার চুরির হিড়িক, নির্বিকার প্রশাসন
Published: 1st, February 2025 GMT
সদর উপজেলার গোগনগর এলাকায় বিদ্যুতের তার চুরির হিড়িক পড়েছে। গত কয়েক মাসে অত্র এলাকার রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বাসা বাড়ির বিদ্যুতের তার চুরি হয়েছে একাধিকবার।
পুলিশে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান মিলছে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। তাই বিদ্যুতের তার চুরি বন্ধ করতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে গোগনগর এলাকায় অবস্থিত সাইন ফ্লেক্সি প্যাক নামক একটি শিল্প কারখানার বিদ্যুতের তার চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে করে শনিবার কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ফ্যাক্টরির সিসি ক্যামেরায় চোরের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে বলে জানান ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানের মালিক বিষ্ণুপদ সাহা জানান, শুক্রবার ফ্যাক্টরি বন্ধ ছিলো। এ সুযোগে ফ্যাক্টরির বিদ্যুতের তার চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। শনিবার আমরা এসে দেখতে পাই বিদ্যুতের তার চুরি করে নিয়ে গেছে তাই আজকে আমরা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। এতে আমাদের অনেক ব্যবসায়ীক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের পাশে আরেকটা ফ্যাক্টরি নাম প্লাস্টিক টাচ ইন্ডাস্ট্রিজ। এটা একটা রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই কারখানার বিদ্যুতের তারগুলো গত কয়েকদিন পূর্বে চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। এখনো সেই চোরকে ধরা সম্ভব হয়নি। আমাদের ধারণা এগুলো সব একই সিন্ডিকেটের কাজ। একজনকে ধরতে পারলে সবগুলোর খবর বের করা যাবে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, শুধুমাত্র শিল্প কারখানা নয়, গত কয়েক মাসে এ এলাকায় অনেক বসতবাড়ির বিদ্যুতের তারও চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু পুলিশ এখনো কোন চোরকে ধরতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরউদ্দিন বলেন, আমি এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। গত কিছুদিন পূর্বে একটা অভিযোগ পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। পরে জানতে পারলাম সেটা ফতুল্লা থানার অন্তর্গত। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।