দেবী সরস্বতীর আরাধনায় জবিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
Published: 2nd, February 2025 GMT
বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনায় সেজেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। ক্যাম্পাস জুড়ে ৩৭টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পূজা।
প্রতিমা গড়ার কাজ শেষ। শেষ মুহূর্তে চলছে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জার কাজ। শিক্ষার্থীরা মণ্ডপ সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাঁশ, কাঁঠাল পাতা, ককশিট বা রঙিন কাগজ ও তুলির আঁচড়ে প্রতিমা ও মণ্ডপ সাজাচ্ছেন তারা।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে মণ্ডপ সাজানোর কাজে ব্যস্ত। ৩৩টি বিভাগ, দুইটি ইনস্টিটিউট, চারুকলা অনুষদ এবং ছাত্রী হল থেকে পৃথক পৃথকভাবে ৩৭টি মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে।
আগামীকাল সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাণী অর্চনা, আরতি ও ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলির মাধ্যমে দেবী সরস্বতীর পূজা শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী লাবণ্য কুমার রায় বাপ্পী বলেন, “সরস্বতী পূজা মানেই আমাদের জন্য একটা বিশেষ আনন্দের দিন। দেবীর কাছে প্রার্থনা করি, যেন আমাদের জ্ঞান ও সৃজনশীলতার পথ উন্মুক্ত হয়। বিভাগের সবার সঙ্গে মণ্ডপ সাজানো থেকে শুরু করে অঞ্জলি দেওয়া— সবকিছুই স্মরণীয় হয়ে থাকে।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জয়ন্তী রায় বলেন, “এটা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও অংশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একসঙ্গে সবাই মিলে পূজা উদযাপন করার আনন্দই আলাদা। প্রতিমা সাজানো, আলোকসজ্জা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা বেশ উচ্ছ্বসিত।”
ইংরেজি বিভাগের মহাশ্বেতা রায় মিতু বলেন, “আমি প্রতি বছর মা সরস্বতীর পায়ে খাতা-কলম রেখে আশীর্বাদ নিই। মা যেন আমাদের পড়াশোনায় ভালো ফল করতে সাহায্য করেন, সেই প্রার্থনা করি। পূজার সাজসজ্জা, মেলা আর প্রসাদ খাওয়া— সবকিছুই অনেক মজা লাগে।”
বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল জানান, “আজ রাতের মধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক জানান, “পূজাকে কেন্দ্র করে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা টিম ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। ক্যাম্পাস জুড়ে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হবে। রাত ৮টার মধ্যে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫