যৌক্তিক-অযৌক্তিক বিভিন্ন আন্দোলনের নামে রাস্তাঘাট বন্ধ না করে প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রদের বলব, তাঁরা যেন তাঁদের দাবিদাওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান এবং আন্দোলনের প্রয়োজনে তাঁদের নিজস্ব কলেজের মাঠ ব্যবহার করেন।’ রাস্তা বন্ধ করার কারণে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর গুলশানে পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে নৌ পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় নদীপথের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান, চাঁদাবাজি ও জলদস্যুতা প্রতিরোধ এবং ইলিশ ও মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ অভিযানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছে নৌ পুলিশ। জনবল ও জলযানের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তারা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অবৈধ কারেন্ট জাল প্রস্তুতকারী ফ্যাক্টরির মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বৈঠকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাপ্রাপ্ত আসামিদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন, তাঁদের অনেকেই বাংলাদেশে নেই। তাঁদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়েছে। আর যাঁরা দেশে আছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ীদের শনাক্ত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের প্রশিক্ষণে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পুলিশ যেন আরও বেশি মানবিক হয়, সে বিষয়টিকে প্রশিক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় নৌ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র ও পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। সাংবাদিকদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আলাপকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ