মেয়াদপূর্তির ১০ মাস আগেই দায়িত্ব ছাড়ছে বর্তমান কমিটি
Published: 7th, February 2025 GMT
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের বাণিজ্যিক সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) ২০২৫-২৭ মেয়াদে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আগামী ১৭মে অনুষ্ঠিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনটির সদস্যদের কাছে নির্বাচনের তপশিল ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আলীকে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রাকিব হোসেন ও মো.
আইএসপিএবি সূত্র জানিয়েছে, ১৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনে আগামী ২৪ মার্চ প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৭মে নির্বাচনের পর বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে পদ বণ্টন নির্বাচন হবে ১৯মে। ১৩ পদের মধ্যে সহযোগী ক্যাটাগরিতে রয়েছে ৪টি পদ।
এবার সাধারণ ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন ফি ধরা হয়েছে এক লাখ টাকা এবং সহযোগী ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন ফি ৫০ হাজার টাকা। বিজয়ীদের মধ্যে পদ বণ্টন নির্বাচনে অংশ নিতে ফের এক লাখ টাকা করে মনোনয়ন ফি জমা দিতে হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা সংগ্রহ করতে ব্যয় করতে হবে এক হাজার টাকা।
৯ এপ্রিল চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর শুরু হবে মনোনয়নপত্র বিতরণ যা চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ১৭ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন প্রার্থীরা। ২৭ এপ্রিল প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। বর্তমানে আইএসপিএবির মোট সদস্য প্রায় দুই হাজার ২৫০ কোম্পানি, এর মধ্যে সহযোগী ক্যাটাগরিতে আছে ১ হাজার ৬০০।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় আইএসপিএবির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এতে সভাপতি নির্বাচিত হন মো. ইমদাদুল হক এবং মহাসচিব হন নাজমুল করিম ভূঁইয়া। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের শীর্ষ সংগঠন বেসিস, বিসিএস, বাক্ক্য এবং ই-ক্যাবের কমিটি ভেঙে যায়। সর্বশেষ আইএসপিএবিও নির্বাচনমুখী হয়েছে।
এ বিষয়ে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক সমকালকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশকে এগিয়ে নিতে বিশেষ করে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্রসারে আমরা বর্তমান সরকারের সব ধরনের পদক্ষেপের সঙ্গে আছি। আমাদের সংগঠনের কেউ কেউ দাবি তুলেছেন নির্বাচন দিতে হবে। দেশ এবং আইএসপিএবির স্বার্থে আমরা আমাদের মেয়াদ পূর্তির ১০ মাস আগেই নির্বাচন দিতে যাচ্ছি। আশা করছি, স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব বের হয়ে আসবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ডিজিটাল খাতে বাজেটের প্রভাব কেমন
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, বাজেট গতানুগতিক। দেশের ইন্টারনেট খাতের জন্য বিশেষ কিছু নেই। মাঝারি ও ছোট আইএসপিদের জন্য বাজেটে তেমন কোনো সুখবর নেই। আগে যা ছিল, এখনও তা-ই আছে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী যারা আছেন, তারা শতভাগ দেশি উদ্যোক্তা। তবে করপোরেট গ্রাহকের জন্য ইন্টারনেট সেবা দেয়, তারা
কিছুটা সুবিচার পেতে পারেন।
কারণ, সব ধরনের করপোরেট প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) কেটে রেখে বিল পরিশোধ করে। এআইটি ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করায় স্বল্প সংখ্যক আইএসপি কিছুটা সুবিচার পেতে পারে। সরকার ইন্টারনেটের দাম কমাতে চায়। কিন্তু ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত দেবে না; ইকুইপমেন্টের মধ্যেও হাত দেবে না। ফলে কোনো লাভ হবে না। ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত না দিলে ইন্টারনেটের দাম কমবে না।
শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, আমি মনে করি, ভোক্তা পর্যায়ে স্মার্টফোন খাতে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। উৎপাদন পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট নির্মাতার লাভের পরিমাণ কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে সেটিও খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক প্রায় ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে এবং ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে এত বেশি ব্যয় হয় না। ধারণা করছি, ব্যবসায়িক পর্যায়েও এর কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ওভার দ্য টপ প্ল্যাটফর্ম (ওটিটি) পরিষেবায় আরোপ করা হয়েছে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক। এতে চরকি, নেটফ্লিক, বঙ্গ ছাড়াও কয়েকটি ওটিটিতে সিনেমা ও সিরিজ ছাড়াও ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে দর্শকের ব্যয় বাড়বে। বর্তমানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিতে হয়।
সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করছেন, ওটিটি পরিষেবার ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দূরদৃষ্টিহীন সিদ্ধান্ত। দেশের উদীয়মান ডিজিটাল অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী শিল্পের বিকাশ ব্যাহত করবে। সিদ্ধান্তটি একদিকে যেমন দর্শকের ব্যয় বাড়াবে, অন্যদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বড় ধরনের বাধা হবে। সরকারের উচিত, দ্রুত সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা এবং ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা।