ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের বাণিজ্যিক সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) ২০২৫-২৭ মেয়াদে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আগামী ১৭মে অনুষ্ঠিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনটির সদস্যদের কাছে নির্বাচনের তপশিল ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আলীকে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রাকিব হোসেন ও মো.

এরশাদ হোসেনকে (রাশেদ) সদস্য করে তিন সদস্যের নির্বাচন বোর্ড গঠন করেছে আইএসপিএবির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি।

আইএসপিএবি সূত্র জানিয়েছে, ১৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনে আগামী ২৪ মার্চ প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৭মে নির্বাচনের পর বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে পদ বণ্টন নির্বাচন হবে ১৯মে। ১৩ পদের মধ্যে সহযোগী ক্যাটাগরিতে রয়েছে ৪টি পদ।

এবার সাধারণ ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন ফি ধরা হয়েছে এক লাখ টাকা এবং সহযোগী ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন ফি ৫০ হাজার টাকা। বিজয়ীদের মধ্যে পদ বণ্টন নির্বাচনে অংশ নিতে ফের এক লাখ টাকা করে মনোনয়ন ফি জমা দিতে হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা সংগ্রহ করতে ব্যয় করতে হবে এক হাজার টাকা।

৯ এপ্রিল চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর শুরু হবে মনোনয়নপত্র বিতরণ যা চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ১৭ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন প্রার্থীরা। ২৭ এপ্রিল প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। বর্তমানে আইএসপিএবির মোট সদস্য প্রায় দুই হাজার ২৫০ কোম্পানি, এর মধ্যে সহযোগী ক্যাটাগরিতে আছে ১ হাজার ৬০০।
 
এর আগে ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় আইএসপিএবির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এতে সভাপতি নির্বাচিত হন মো. ইমদাদুল হক এবং মহাসচিব হন নাজমুল করিম ভূঁইয়া। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের শীর্ষ সংগঠন বেসিস, বিসিএস, বাক্ক্য এবং ই-ক্যাবের কমিটি ভেঙে যায়। সর্বশেষ আইএসপিএবিও নির্বাচনমুখী হয়েছে। 

এ বিষয়ে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক সমকালকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশকে এগিয়ে নিতে বিশেষ করে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্রসারে আমরা বর্তমান সরকারের সব ধরনের পদক্ষেপের সঙ্গে আছি। আমাদের সংগঠনের কেউ কেউ দাবি তুলেছেন নির্বাচন দিতে হবে। দেশ এবং আইএসপিএবির স্বার্থে আমরা আমাদের মেয়াদ পূর্তির ১০ মাস আগেই নির্বাচন দিতে যাচ্ছি। আশা করছি, স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব বের হয়ে আসবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদস য স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যান্ডউইডথের দাম কমানোর সুবিধা গ্রাহক কতটা পাবেন

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানি তার সব ধরনের সেবার ক্ষেত্রে দাম কমিয়েছে ১০ শতাংশ। তারা বলছে, এতে দেশে ইন্টারনেট–সেবার দাম কমে আসবে। টেলিকম খাতের বিভিন্ন অপারেটর বলছে, এই সিদ্ধান্তের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ধীরে ধীরে ইন্টারনেটের দাম কমে আসতে পারে। তবে সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানি থেকে ব্যান্ডউইডথ নেওয়া অপারেটররা বলছে, গ্রাহক পর্যায়ে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।

গত শনিবার কোম্পানির বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে ইন্টারনেটের আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইআইজি) পর্যায়ে সব ব্যান্ডউইডথের জন্য দাম ১০ শতাংশ কমে আসবে। এই সিদ্ধান্ত ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।

গ্রাহক যে পরিমাণ ব্যান্ডউইডথ পেয়ে থাকেন, সেখানে ভলিউম হয়তো কিছু বাড়তে পারে। আর দামের প্রভাব মূলত বড় প্যাকেজের ওপর পড়তে পারে। ইমদাদুল হক, সভাপতি, আইএসপিএবি

সরকারি প্রতিষ্ঠান তো দাম কমাল, কিন্তু গ্রাহক এর সুবিধা কতটা পাবেন, ইন্টারেনেটের দাম আসলেই কমে আসবে কি না—এসব নিয়ে আইআইজি, আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে কথা হয়।

বাংলাদেশে ব্যান্ডউইডথ আসে দুইভাবে। সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানি সমুদ্রপথে ব্যান্ডউইডথ আমদানি করে। আর ইন্টারন্যাশনাল টেলিস্ট্রেরিয়াল কেব্‌ল (আইটিসি) ভারত থেকে আমদানি হয়। দেশে মাসে ব্যান্ডউইডথ চাহিদা ৬ হাজার জিবিপিএস। যার ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ব্যান্ডউইডথ আসে আইটিসির মাধ্যমে। বাকিটা সাবমেরিন হয়ে। তবে সরকার মার্চ থেকে ব্যান্ডউইডথ আমদানি আইটিসির জন্য ৫০ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে।

সাবমেরিন বা আইটিসি থেকে ব্যান্ডউইডথ নিয়ে থাকে আইআইজি অপারেটররা। যাদের কাছ থেকে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইল অপারেটররা ব্যান্ডউইডথ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সেবা দেয়; অর্থাৎ সাবমেরিন কেব্‌লের ১০ শতাংশ দাম কমার প্রভাব সরাসরি আইআইজির কাছে যাবে। বিষয়টি নিয়ে আইআইজিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, লাস্ট মাইল গ্রাহক এ সুবিধা পাবেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাবমেরিন কেব্‌লের ব্যান্ডউইডথ ভলিউমের ভেদে প্রতি এমবিপিএস ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করে, যা আইটিসি নেয় ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আবার সরকারের নতুন নীতি অনুযায়ী সাবমেরিনের ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার বাড়বে; অর্থাৎ বেশি দামে এখন তাদের ব্যান্ডউইডথ কিনতে হবে সাবমেরিন থেকে।

আইআইজিরা বলছেন, তাঁদের সব খরচের মাত্র ১০ শতাংশ যায় ব্যান্ডউইডথের পেছনে। ফলে সার্বিক দিক থেকে দাম না কমালে এবং সরকারের ভ্যাট–ট্যাক্স নীতির পরিবর্তন না হলে গ্রাহক পর্যায়ে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।

সাবমেরিন কেব্‌ল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভলিউমের ওপর তাঁদের দাম কমবেশি হয়ে থাকে এবং ব্যান্ডউইডথের মান ভালো। এ ছাড়া ব্যান্ডউইডথের পাশাপাশি সব ধরনের সেবার দামও কমানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে গ্রাহক এর সুফল পাবেন বলে তিনি জানান।

দেশের ইন্টারনেট গ্রাহক সবচেয়ে বেশি মুঠোফোন অপারেটরে। সাবমেরিনের দাম কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহক এর সুফল পাবেন। যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দাম কমার বিষয়টি আইআইজি পর্যায় থেকে হলে তা গ্রাহকের ওপর প্রভাব পড়বে বলে জানান আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহক যে পরিমাণ ব্যান্ডউইডথ পেয়ে থাকেন, সেখানে ভলিউম হয়তো কিছু বাড়তে পারে। আর দামের প্রভাব মূলত বড় প্যাকেজের ওপর পড়তে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনকে মিথ্যা, বানোয়াট বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
  • সেনাবাহিনীতে ‘ক্যু’ নিয়ে ইন্ডিয়া টুডের খবর মিথ্যা ও বানোয়াট: আইএসপিআর
  • ব্যান্ডউইডথের দাম কমানোর সুবিধা গ্রাহক কতটা পাবেন