ঢাকা-বেইজিং আলোচনায় ছিল ভারত প্রসঙ্গ
Published: 7th, February 2025 GMT
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে গত ২১ জানুয়ারি। দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকে অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে দুই দেশ। সেই সঙ্গে ঢাকা ও বেইজিংয়ের আলোচনায় উঠে এসেছে ভারত প্রসঙ্গও।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় দূতাবাসে সংবাদ সম্মেলনে এস জয়শঙ্করকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন
করেন, মাইক ওয়ালজ ও মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা? জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। আমি মনে করি না যে, এ বিষয়ে বিস্তারিত বলাটা সমীচীন হবে।’
গতকাল মতবিনিময়ে মার্কিন তহবিল বন্ধ নিয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধ বাংলাদেশকেন্দ্রিক নয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়, তবে আমাদের বা অন্য কোনো দেশের করণীয় তেমন কিছু নেই। সে ক্ষেত্রে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
রোহিঙ্গাদের জন্য মার্কিন সহায়তা বিষয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এটি চলমান। তবে কতদিন চলবে, জানা নেই। বন্ধ হলে অন্য দেশগুলোকে অনুরোধ করতে হবে সহায়তা বাড়ানোর জন্য।
ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনার আমলের চুক্তিগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা হবে কিনা– জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে চুক্তিগুলো উন্মুক্ত। এখানে গোপন কিছু নেই। যদি অসামঞ্জস্য চুক্তির কথা বলেন, দরকষাকষি করেন, সেটা করবেন আগে; পরে নয়। আর চুক্তির পর পর্যালোচনা করতে হলে সেটা দুই পক্ষ মিলে করতে হবে। একতরফাভাবে বাতিল করতে পারবেন না। আদানির সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তা ভালো হয়নি। খারাপ হয়েছে। আমাদের স্বার্থ রক্ষা হয়নি। তবে এ সমস্যা সমাধানে আদানির সঙ্গেই আলোচনা করতে হবে।
থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে ভিসা বন্ধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা রয়েছে। যে দেশে যাচ্ছে, তাদের কিছু নিয়ম আছে, তা আমরা মানি না। ফলে ভিসা দেয়, আবার বন্ধ করে রাখে। সামনে আরব আমিরাতে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় ভিসা-সংক্রান্ত আলোচনা হবে।
অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহতের বড় একটি অংশ বাংলাদেশি উল্লেখ করে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, এটিকে আমরা মানবিক বিপর্যয় হিসেবে দেখি এবং সহানুভূতি প্রকাশ করি। এ ধরনের পরিস্থিতি থামাতে হবে।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী এপ্রিলে ঢাকায় আসতে পারেন বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখনও ঠিক করিনি, কবে আসবেন। আমার অনুমান হয়তো এপ্রিলে আসবেন, এর আগে নয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট পরর ষ ট র উপদ ষ ট পরর ষ ট রমন ত র র পরর ষ ট র প রসঙ গ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি