বিপিএলের সেই স্বর্ণালি সময়ের কথা আলাদা। যৌবনে খেলে গেছেন ক্রিস গেইল। বিমান থেকে নেমে মাঠে এসে হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি। মঈন আলী, এবিডি ভিলিয়ার্স, সুনীল নারিনরা বিপিএলের নাম উজ্জ্বল করেছেন। সে সময় বিদেশিদের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের টি২০ লিগে আগের জৌলুস নেই। সাদামাটা বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে হয়েছে খেলা।
শাহিন শাহ আফ্রিদির পর বড় তারকা বলতে নিউজিল্যান্ডের জিমি নিশাম। পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার প্রথম পাঁচ ম্যাচ খেলে গেছেন। ফাইনাল খেলতে এসেছেন কিউই অলরাউন্ডার নিশাম। একাদশ বিপিএলে বিদেশি ক্রিকেটার আনায় এখন পর্যন্ত বরিশালই সেরা। বৈশ্বিক বিবেচনায় খুব বড় তারকা নন তারা। বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেশি ক্রিকেটাররাই একাদশ বিপিএলের বড় তারকা। আজকের বিপিএল দেশি না বিদেশি ক্রিকেটাররা মাতায়, সেদিকে চোখ থাকবে সবার।
খেলোয়াড় ও খেলার মানে বরিশাল এখন পর্যন্ত আসরের সেরা দল। দেশি তারকায় ঠাসা দলটির রিজার্ভ বেঞ্চেও রয়েছেন জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন। বলার অপেক্ষা রাখে না বরিশালের ফাইনাল জয়ের নায়ক হওয়ার মতো ক্রিকেটারের অভাব নেই। তবে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় ডেভিড মালান ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় হতে পারেন। ক্লিক করে গেলে তামিম ইকবালও সেরা ইনিংস খেলতে পারেন। তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট জ্বলে উঠলে দেখা যেতে পারে নায়কোচিত পারফরম্যান্স।
তবে টি২০ খেলায় কাইল মায়ার্সকে ফেলে দেওয়া যাবে না। অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দিয়ে ফাইনালের নায়ক হতে পারেন তিনিও। গতবার যেমন শিরোপা জয়ে ভূমিকা ছিল তাঁর। জিমি নিশাম টি২০ খেলার ভেতরে থাকায় আশার ভেলায় ভাসাতে পারেন বরিশালের সমর্থকরা। সেদিক থেকে দেখলে বরিশালে দেশি-বিদেশি সমান। চিটাগং কিংসের ক্ষেত্রে সেটা খাটে না। কিংসের তারকা দেশি ক্রিকেটাররা। শরিফুল ইসলাম, শামীম হোসেন পাটোয়ারি সময়ের আলোচিত। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ছন্দ ফিরে পাওয়ায় চিটাগংয়ের জন্য ভালো। শামীম হোসেন তো বরিশালের বিপক্ষে বরাবরই ভালো খেলেন। তাই খাজা নাফাইয়া, গ্রাহাম ক্লার্ক, হুসাইন তালাত ও বিনুরা ফার্নান্দোর চেয়ে দেশিদের নায়ক হওয়ার সুযোগ বেশি।
খুলনার অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ সমকালকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এবার বিপিএলে দেশিরাই তারকা। মাঠের পারফরম্যান্সেও সে প্রভাব দেখা গেছে। ৫১১ রান নিয়ে শীর্ষে খুলনার নাঈম শেখ। ২৫ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে সেরা দুর্বার রাজশাহীর তাসকিন আহমেদ। বরিশালের অধিনায়ক তামিম আশা করেন দেশিদের কাঁধে ভর করে পাড়ি দেবেন ফাইনালের বৈতরণী।
সেট একাদশে খুব বেশি পরিবর্তনের পক্ষে নন তিনি। রংপুর রাইডার্সের মতো ভুল করতে চায় না দলটির ম্যানেজমেন্ট। তাই প্লে-অফে বেশি বিদেশি আনার দিকে ঝোঁকেনি বরিশাল। তামিমের কণ্ঠেই শোনা যাক কারণটা, ‘আমি সেট দলে খুব একটা ওলটপালট করার পক্ষে না। যারা খেলছেন, এতদিন সার্ভিস দিয়েছেন তাদের সুযোগ পাওয়া উচিত।’
কোচ মিজানুর রহমান বাবুলেরও ভরসার জায়গায় দেশি ক্রিকেটার, ‘লোকাল ক্রিকেটাদের উন্নতি হয়েছে। টুর্নামেন্টে সবাই ভালো খেলছে। ফাইনালেও দেশিরা ভালো করবে বলে আমার বিশ্বাস।’ নাজমুল হোসেন শান্ত ভালো না করায় রিজার্ভ বেঞ্চে। ডান-বাঁহাতির কৌশল কাজে লাগাতে তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তামিম। দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়াও ভালো। তাই ফাইনালে সাফল্যের ফুল ফোটাতে পারেন দেশিরাই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল প রফরম য ন স ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়’
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে আল-নাসর। তবে মাঠের ফলাফলের চেয়েও এখন আলোচনায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রতিক্রিয়া। ম্যাচ শেষে তার ‘বিষণ্ণ ও নাটকীয়’ আচরণ উপহাস হিসেবে দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বুধবার রাতে জেদ্দার আলিনমা স্টেডিয়ামে জাপানি ক্লাব কাওয়াসাকি ফ্রন্টেলের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হারে সৌদি ক্লাব আল-নাসর। এই পরাজয়ে রোনালদোর দলের সামনে চলতি মৌসুমে আর কোনো ট্রফি জয়ের সুযোগ থাকল না। সেমিফাইনালের ম্যাচটিতে রোনালদো একটি সুবর্ণ সুযোগও নষ্ট করে। প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষককে কাটিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন পর্তুগিজ মহাতারকা। সমর্থকদের মতে, রোনালদোর গোল মিস করাটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
ম্যাচ শেষে হতাশ রোনালদোকে দেখা যায় মাঠের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে কথা বলতে ও আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুটা নাটকীয় ভঙ্গিতে হাত নেড়েছেন। তার এই অদ্ভুত আচরণ নিয়েই এখন সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘রোনালদোর জন্য ‘ফুটবলকে ছেড়ে দাও, তার আগেই যে ফুটবল তোমাকে ছাড়বে’—এই কথাটা একেবারে যথার্থ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এই লোকটা এখন আর মজার না… শুধু অহঙ্কারে ভরা।’
তৃতীয় একজন মন্তব্য করেছেন, ‘মেসির বিশ্বকাপ জয় মানসিকভাবে শেষ করে দিয়েছে রোনালদোকে।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে বলেন, ‘ক্যামেরার জন্য এমন মরিয়া চেষ্টাও এক রকম প্রশংসার দাবি রাখে—যদি না সেটা এত করুণ হতো।’
অনেকে আবার রোনালদোর স্বার্থপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়।’
তবে এত সমালোচনার পরও অবসরের কোনো ইঙ্গিত দেননি রোনালদো। বরং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দলের প্রতি নিজের গর্বের কথা জানান তিনি। রোনালদো লেখেন, ‘সবসময় স্বপ্ন পূরণ হয় না। তবে আমি গর্বিত আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে। যারা আমাদের পাশে থেকেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সমর্থন আমাদের অনেক কিছু বলে।’
এদিকে ম্যাচ শেষে আল-নাসরের কোচ স্তেফানো পিওলি দলের পারফরম্যান্সে ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৌশলে সমস্যা ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে ঝুঁকি নিয়েছিলাম। তবে যে পারফরম্যান্স হয়েছে, তা হতাশাজনক। প্রতিপক্ষ আমাদের চমকে দেয়নি, বরং নিজেদের দুর্বলতাই বড় ধাক্কা দিয়েছে।’
এই হারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে আল-নাসর, আর প্রশ্নটা থেকে গেছে—রোনালদো আসলে কোথায় গিয়ে থামবেন?