ময়মনসিংহে এক্সকাভেটরে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো শম্ভুগঞ্জ সেতুর টোল বক্স
Published: 7th, February 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত চীন মৈত্রী সেতু বা শম্ভুগঞ্জ সেতুর টোল বক্সটি এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা টোল বক্সটি গুঁড়িয়ে দেন। এর আগে শেখ হাসিনার পতনের পর ছাত্র-জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেই সেতুর টোল আদায় বন্ধ করে দেন তাঁরা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু চালু হয়। স্থানীয় মানুষের কাছে শম্ভুগঞ্জ সেতু নামে পরিচিত এই সেতু নির্মাণের ৩৩ বছর পার হয়েছে। ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি এরই মধ্যে নির্মাণ ব্যয়ের টাকা তুলে ফেলেছে। এরপরও তিন বছর পরপর সেতুটি ইজারা দেওয়া হচ্ছিল। স্থানীয় নাগরিকেরা টোল আদায় বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের মানুষ চলাচল করে। সেতুটির টোল হিসেবে প্রতিবার পারাপারের সময় বিভিন্ন ধরনের ট্রাক, বাস, প্রাইভেট কারসহ নানা প্রকারের যানবাহন থেকে আদায় করা হয় ২০ থেকে ২৫০ টাকা। এ ছাড়া সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে ১০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়। শম্ভুগঞ্জ সেতুটির টোল আদায় শুরু হয় ১৯৯২ সালের দিকে। সর্বশেষ সেতুটি তিন বছরের জন্য প্রায় ৫৬ কোটি টাকা ইজারা দেওয়া হয়েছিল।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্যসচিব মো.
সড়ক ও জনপথ বিভাগের ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেতুর টোল আদায়ের মাধ্যমে সরকার রাজস্ব পেত। ৫ আগস্টের পর টোল আদায় বন্ধ থাকলেও আজ ভোরে টোল বক্সটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, এমন খবর পাই। জনগণের চলাচলে যেন সমস্যা না হয় সে জন্য ভাঙা অংশ ভোর থেকে সরানো শুরু করেছি আমরা।’
আজ শুক্রবার সকাল সোয়া আটটার দিকে টোল বক্স এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ভাঙা অংশ গাড়ি দিয়ে সরিয়ে নিচ্ছে সড়ক বিভাগ। অন্যদিকে সকাল আটটার পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ের জয় বাংলা চত্বর আশপাশের মানুষকে ইট-রড খুলে নিতে দেখা যায়।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ের জয় বাংলা চত্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল এক্সকাভেটর দিয়ে ভাঙা হয়। এ ছাড়া জেলার ঈশ্বরগঞ্জে পৌর বাজারের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের ভেতরে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও বিজয়-৭১ স্তম্ভ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগরে সদস্যসচিব আল নূর মো. আয়াস বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিবাদী স্থাপনা থাকতে পারে না। আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দিনে ঢাকায় মিছিল, রাতে বাড়িতে ফিরতেই নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ৩ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
রাজধানীর উত্তরায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ময়মনসিংহ জেলা শাখার ব্যানারে মিছিলে অংশ নেওয়ার পর রাতে বাড়িতে ফিরতেই তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নূর হামীম রুশো (২০), ছাত্রলীগ কর্মী আলিফ জাহান ওরফে পার্থ (২০), মো. মারুফ মিয়া (২৫)। তাঁরা সবাই ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা।
আজ শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে ঢাকায় মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা রাজধানীর উত্তরার মিছিলে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।