পানামা খালে বিনা মাশুলে জাহাজ চলাচল নিয়ে মিথ্যা ছড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: মুলিনো
Published: 7th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো। পানামা খাল দিয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি জাহাজগুলোকে আর মাশুল দিতে হবে না বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দাবির পর এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তাঁর দপ্তরের এমন দাবি থেকে সরে এলেও তিনি বলেছেন, মার্কিন জাহাজের কাছ থেকে মাশুল নেওয়াটা ‘অযৌক্তিক’। কারণ, চুক্তি অনুযায়ী, খালটি আক্রমণের মুখে পড়লে তা থেকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে।
আরও পড়ুনঅভিষেক ভাষণে পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প২১ জানুয়ারি ২০২৫মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবারই পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছেন। জোর করে এটি দখলে নেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি। আজ শুক্রবার মুলিনোর সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা হওয়ার কথা।
৫১ মাইলের (৮২ কিলোমিটার) জলপথটি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ তৈরি করেছে। পানামা খাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব জাহাজকে মাশুল দিতে হয়। জাহাজের আকার ও ধরনের ভিত্তিতে মাশুল নির্ধারণ করা হয়। তবে পানিপথটিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজগুলো অগ্রাধিকার পায়।
গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর লিখেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জাহাজগুলো এখন কোনো ধরনের মাশুল দেওয়া ছাড়াই পানামা খালে চলাচল করতে পারবে। এতে প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের লাখ লাখ ডলার বেঁচে যাবে।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এমন বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুলিনো। বলেছেন, মিথ্যা ও অসাধুতার ওপর ভর করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে নন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করার জন্য ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পানামার রাষ্ট্রদূতকে ‘দৃঢ় পদক্ষেপ’ নিতে বলেছেন মুলিনো।
মুলিনো আরও বলেছেন, নৌবাহিনীর জাহাজসহ মার্কিন সরকারি জাহাজগুলোকে পানামা খাল দিয়ে চলাচলের জন্য প্রতিবছর ৬০ থেকে ৭০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হয়। মুলিনো মনে করেন, এটা এমন নয় যে খালের মাশুল দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ভেঙে দিচ্ছে।
পানামা খাল কর্তৃপক্ষ (এসিপি) এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা পানিপথটির মাশুল–সংক্রান্ত নিয়মে কোনো ধরনের পরিবর্তন আনেনি। আলোচনার জন্য পানামার দরজা খোলা আছে বলেও উল্লেখ করেছে তারা।
রুবিও ও মুলিনোর বৈঠকের পর পানামা ঘোষণা দিয়েছে, তারা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ নামে পরিচিত চীনের অবকাঠামো নির্মাণ কর্মসূচির সদস্যপদ আর নবায়ন করবে না।
রুবিও এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। এটিকে ‘একটি দুর্দান্ত পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে পানামা।
ট্রাম্প আশঙ্কা জানিয়েছেন, সংকটপূর্ণ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খালটি বন্ধ করে দিতে পারে চীন। তবে পানামা ও চীন দৃঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
বুধবার চীনের পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, পানামার সঙ্গে তাঁদের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক ফলপ্রসূ হচ্ছে। দেশটিকে ‘বহিরাগত হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রুবিও গত রোববার মুলিনোর পাশাপাশি খালের প্রশাসক রিকাউর্তে ভাসকেজ মোরালেসের সঙ্গে দেখা করেন। খালটির ওপর চীনের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানামার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেওয়া প্রথম ভাষণে ট্রাম্পও একই কথা বলেছিলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, খালটিকে চীন পরিচালনা করছে এবং তিনি এটির নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফিরিয়ে নিতে চান।
মুলিনো অভিযোগগুলো অস্বীকার ও ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। বলেছেন, এ বাণিজ্যপথটির নিয়ন্ত্রণ পানামার হাতে আছে ও থাকবে।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র পানামা খাল খনন করে। তবে বছরের পর বছর বিক্ষোভ চলার পর ১৯৭৭ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার পানামার সঙ্গে একটি চুক্তি করেন। চুক্তির আওতায় ধীরে ধীরে জলপথটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। আর ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে বলে আসছেন, পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরের সিদ্ধান্তটি যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভুল ছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ক ন পরর ষ ট র পদক ষ প বল ছ ন র জন য র এমন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় কোটি শ্রমিক রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বাইরে
দেশের মোট শ্রমিকের ৮৪ দশমিক ১ শতাংশের কোনো দায়দায়িত্ব নেয় না রাষ্ট্র । শ্রমিক হিসেবে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই। কোনো রকম আইনি ও সামাজিক সুরক্ষা নেই। কর্মস্থলের পরিচয়পত্র নেই। কাজের ক্ষেত্রে অন্যায়ের শিকার হলে তাদের শ্রম আদালতে মামলা করার সুযোগও নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, অপ্রাতিষ্ঠানিক এই শ্রমিকের সংখ্যা ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার।
বিশালসংখ্যক শ্রমিকের প্রতি রাষ্ট্রের এ রকম অবহেলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকারের গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত ২১ এপ্রিল পেশ করা কমিশনের ২৫ সুপারিশের মধ্যে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
দেশের শ্রম খাতের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং শ্রমিকের অধিকার ও জীবনমান উন্নয়নে সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত ১৯ সদস্যের কমিশনপ্রধান ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি। শ্রম আইনে অন্য সব শ্রমিকের মতো একই অধিকার এবং সুযোগসুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছি। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় তাদের জন্য ভাতার কথা বলেছি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের জন্য এ সুবিধার সুপারিশ করা হয়নি। কারণ, তারা চাকরি শেষে কমবেশি কিছু আর্থিক সুবিধা পান।’
কমিশনের এ সব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে নিয়মিত নজরদারি রাখার কথাও জানান তিনি।
এ বাস্তবতায় আজ বৃহস্পতিবার মহান শ্রমিক দিবস পালন করা হচ্ছে। আজ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিনও কাজ করতে হবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দিবসটি পালনের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।
বিবিএসের গত নভেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১২ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার। তাদের মধ্যে শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। মোট শ্রমশক্তির ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে।
দেশে শ্রমশক্তি বলতে ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে যারা কর্মে নিয়োজিত এবং বেকার জনগোষ্ঠীর সমষ্টিকে বোঝায়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর মানদণ্ড অনুযায়ী, যারা সাত দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টার বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময় অথবা পরিবারের নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনের কাজ করেছেন জরিপে তাদের কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আবার যারা কর্মক্ষম কিন্তু কোনো কাজে নিয়োজিত নন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ খুঁজে বেড়ান এবং ওই সময়ে কাজের সুযোগ পেলে সে কাজ করতে প্রস্তুত তাদের বেকার বলা হয়েছে। এ হিসাবে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৪ লাখ ৬০ হাজার।
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক কারা
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর আন্তর্জাতিক শ্রম পরিসংখ্যানবিদের সম্মেলন ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব লেবার স্ট্যাটিসিয়ান্স–আইসিএলসির সংজ্ঞা অনুযায়ী, বেসরকারি অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা খানামালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর আইনি সত্তা নেই, পরিপূর্ণ হিসাব নেই, উৎপাদনের হিসাব দিতে হয় না এবং বেসরকারি ও অনিবন্ধিত–এরকম খাতকে অনানুষ্ঠানিক খাত এবং এ খাতের শ্রমিকদের অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক বলা হয়।
মূলত কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক বেশি। কৃষিতে ৯৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক। শিল্প খাতে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের বড় অংশই গ্রামে থাকেন।
বিবিএস বলছে, গ্রামের মোট শ্রমিকের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। সংখ্যায় তারা ৪ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার। শহরের শ্রমিকদের এ হার কিছুটা কম। ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ। সংখ্যায় এক কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার। নারী শ্রমিকদের ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে থাকেন।
শ্রম আইনে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ কমিশনের
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহশ্রমিক, অভিবাসী, স্বনিয়োজিত শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য শ্রম আইনে সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি, পরিচয়পত্র, নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাকর শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, এসব শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সব অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদা অফিস অথবা ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং কল্যাণে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের সব ধরনের তথ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার করা, পরিচয়পত্র দেওয়া এবং অবসর ভাতা চালুসহ বেশ কিছু সুপারিশ করে কমিশন।
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের প্রবীণ শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতার সুপারিশ
রাষ্ট্রের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের আওতায় বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকেন প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা। অবসরের পরও কিছু সুবিধা পান তারা। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা সারা জীবন খাটুনির পর প্রবীণ বয়সে আরও কষ্টে থাকেন। কারণ সামান্যতম কোনো সুবিধা পান না তারা। এ বিবেচনা থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতা বা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। তাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর নির্ধারণের কথা বলা হয় এতে। দরিদ্র বেকার শ্রমিকদের বয়স্কভাতা এবং তাদের প্রতিদিনের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও অন্যান্য চাহিদা বিবেচনায় বয়স্কভাতার পরিমাণ নির্ধারণের কথা বলেছে কমিশন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পেশা ও খাত অনুযায়ী সংগঠিত হওয়া, প্রতিনিধিত্ব করা ও নিয়োগকারী, তাদের সমিতি করার সুযোগ দেওয়ার কথাও বলা হয় কমিশনের সুপারিশে।
প্রাতিষ্ঠানিকের ৫৫ খাতেও ন্যূনতম মজুরি নেই
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয়। এখনও অনেক শিল্প খাতকে ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর আওতায় আনা হয়নি। মালিকপক্ষ যা দেয়, তা মেনে নিয়ে কাজ করেন শ্রমিকরা। এরকম অন্তত ৫৫টি খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের স্বীকৃত শিল্প আছে ১০২টি।
টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের মজুরি বোর্ড হয় সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে। অর্থাৎ, গত তিন যুগ ধরে একই মজুরি চলছে এ খাতে। জানতে চাইলে সরকারের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, ন্যূনতম মজুরি কাঠামোতে বর্তমানে ৪৭টি শিল্প রয়েছে। নতুন করে দুটি শিল্পকে ন্যূনতম মজুরির আওতায় আনা হবে। আরও ২০ শিল্পকে এর আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি জানান, পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনঃনির্ধারণে বোর্ড গঠন হয়েছে। মালিক পক্ষ এ-সংক্রান্ত সভায় আসছে না। এ অবস্থায় করণীয় জানতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়েছে মজুরি বোর্ড।
টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পে তিন যুগ ধরে একই মজুরির বিষয়ে জানতে চাইলে রাইসা ইসলাম বলেন, টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের আর অস্তিত্ব নেই। খাতটি হয়তো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে।