চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির নতুন মডেল উন্মুক্ত করেছে টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ‘ওমনিহিউম্যান-১’ নামের এআই মডেলটি ছবি ও অডিও ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারে। এর ফলে সহজেই নিজেদের পছন্দমতো ভিডিও তৈরি করতে পারবেন টিকটক ব্যবহারকারীরা। নতুন এআই মডেলটি শিগগিরই বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা যাবে।

সম্প্রতি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওমনিহিউম্যান-১ মডেলটি মানুষের কথা বলা, গান গাওয়া ও শরীরের স্বাভাবিক গতিবিধি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে। বিদ্যমান অডিওনির্ভর ভিডিও তৈরির প্রযুক্তির তুলনায় এটি অনেক বেশি উন্নত। যদিও মডেলটি এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি, তবে এর কিছু নমুনা ভিডিও ইতিমধ্যে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বক্তৃতা দিচ্ছেন। ভিডিওটি ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে।

আরও পড়ুনটিকটকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার রহস্য ফাঁস২২ জানুয়ারি ২০২৩

ওমনিহিউম্যান-১ প্রশিক্ষণের জন্য বার্তা, অডিও ও শরীরের নড়াচড়ার বৈচিত্র্যময় তথ্যভান্ডার সংযুক্ত করা হয়েছে, যা মডেলটিকে আরও নিখুঁত ও বাস্তবসম্মত করেছে। বাইটড্যান্সের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি বক্তৃতা দিচ্ছেন। তার হাতের ভঙ্গি, ঠোঁটের নড়াচড়া ও মুখাবয়বের অভিব্যক্তি এতটাই নিখুঁত যে বাস্তব ভিডিওর সঙ্গে পার্থক্য করা কঠিন।

আরও পড়ুনটিকটক ব্যবহারকারী কমছে, কারণ কী২৩ জানুয়ারি ২০২৪

এআইনির্ভর ভিডিও তৈরির প্রযুক্তিতে ইতিমধ্যে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় নেমেছে। গত ডিসেম্বর মাসে ওপেনএআই ‘সোরা’ নামের ভিডিও তৈরির এআই টুল উন্মুক্ত করেছে, যা কাজে লাগিয়ে সহজেই কৃত্রিম ভিডিও তৈরি করা সম্ভব। অন্যদিকে, বার্তা বা ছবি থেকে উচ্চমানের ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম ‘ভিও’ মডেল উন্মুক্ত করেছে গুগলের ডিপমাইন্ড।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র ত কর ছ ট কটক

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ